ইউক্রেনকে সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ট্রাম্প কী অর্জন করতে চাচ্ছেন?

বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়, ইউক্রেনের যুদ্ধকালীন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে, তাঁকে ছাড় দিতে বাধ্য করতেই মার্কিন সামরিক সহযোগিতা বন্ধের বিস্ময়কর সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন ট্রাম্প।

তিন বছর আগে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। এই যুদ্ধে ইউক্রেনের সামরিক সহায়তার সবচেয়ে বড় উৎস হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। এখন ট্রাম্প ইউক্রেনকে সব ধরনের সামরিক সহযোগিতা বন্ধ করে দিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা সহায়তা বন্ধ রাখছেন, সহায়তার বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন। তাঁরা দেখছেন, বিষয়টি একটি সমাধানের (ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে) ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখতে পারে কি না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থান স্পষ্ট। তিনি শান্তির প্রতি মনোনিবেশ করেছেন। তাঁরা চান, যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারেরাও এই লক্ষ্যের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, যতক্ষণ না ট্রাম্প মনে করেন যে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার প্রতি অঙ্গীকারের সদিচ্ছা ইউক্রেন দেখাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত সহায়তা বন্ধ থাকবে।

এদিকে ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য জেলেনস্কিকে পদত্যাগ করতে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেন, ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন, শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন, এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।

আরও পড়ুনইউক্রেনকে সামরিক সহযোগিতা দেওয়া বন্ধ করলেন ট্রাম্প৩ ঘণ্টা আগে

রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধের সমাপ্তি ‘খুব, খুব দূরে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন জেলেনস্কি। তাঁর এই বক্তব্যের সমালোচনা করেন ট্রাম্প। এই সমালোচনার কয়েক ঘণ্টার মাথায় তিনি ইউক্রেনকে মার্কিন সামরিক সহযোগিতা বন্ধ করলেন।

এর আগে শুক্রবার হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচিত খনিজ চুক্তি ভেস্তে যায়।

যুক্তরাষ্ট্র কী চায়, হোয়াইট হাউসের ঘটনায় ট্রাম্পের কাছে জেলেনস্কি দুঃখ প্রকাশ করুক? কোনো ধরনের আপত্তি ছাড়াই তিনি খনিজ চুক্তি গ্রহণ করুন?

ট্রাম্প প্রশাসন তা-ই চায় বলে মনে হচ্ছে। ইতিমধ্যে তারা হোয়াইট হাউসের ঘটনার জন্য জেলেনস্কিকে দোষারোপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রকে, ট্রাম্পকে যথেষ্ট ধন্যবাদ না বলার অভিযোগে মিথ্যাভাবে জেলেনস্কিকে অভিযুক্ত করেছে ওয়াশিংটন।

আরও পড়ুনইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য জেলেনস্কিকে পদত্যাগ করতে হতে পারে: ট্রাম্পের উপদেষ্টা৯ ঘণ্টা আগে

তবে জেলেনস্কি ইতিমধ্যে বলে দিয়েছেন, তিনি দুঃখ প্রকাশ করবেন না। ক্ষমা চাইবেন না। ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ছাড়া খনিজ চুক্তি করবেন না।

চলতি মাসেই জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার বিনিময়ে পদত্যাগ করতে রাজি থাকার কথা বলেছিলেন তিনি।

তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মস্কোর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সংগতি রেখে কিয়েভের এই জোটে যোগদানের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

আরও পড়ুনইউরোপ কি যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়া ইউক্রেনে শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে০২ মার্চ ২০২৫আরও পড়ুনরোজমেরি চিকেনসহ যেসব খাবার না খেয়েই হোয়াইট হাউস ছেড়েছিলেন জেলেনস্কি২২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র র জন য বন ধ ক

এছাড়াও পড়ুন:

নদীতে ভেসে উঠল আরেকজনের লাশ, নিহত বেড়ে ৫

শরীয়তপুরে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নদীতে পড়ে নিখোঁজ আরো একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৩ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের কাশীপুর এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। তবে, তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে পাঁচ জনে দাঁড়াল।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে মাদারীপুরের রাজারচর এলাকায় বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা করেন সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। এ সময় এলাকাবাসী তাদের ধাওয়া দেন। ডাকাতদল পালিয়ে শরীয়তপুরের তেতুলিয়া এলাকায় এলে স্থানীয়রা বাল্কহেড দিয়ে ডাকাতদের স্পিড বোটের গতিপথ রোধ করার চেষ্টা করেন। এ সময় ডাকাতরা হাতবোমা ও গুলি ছুঁড়লে বেশ কয়েকজন আহত হন। একপর্যায়ে ডাকাতেরা স্পিড বোট ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় ক্ষুব্ধ জনতা তাদের গণপিটুনি দেয়। আর ধাওয়া দিয়ে সাত জনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দুই জনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত বাকি পাঁচজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো একজনের মৃত্যু হয়। তবে, স্পিড বোটে ঠিক কতজন ছিল সেটা জানা যায়নি।

এদিকে, এ ঘটনার পরে রবিবার বিকালে শরীয়তপুর জেলা লাগোয়া ও মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের বিদ্যাবাগীশ এলাকার কীর্তিনাশা নদী থেকে অজ্ঞাত একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সোমবার ভেসে উঠে আরো একজনের মরদেহ। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় পুলিশ ধারণা করছে, নিহতরা ডাকাত চক্রের সদস্য। সেদিন গণপিটুনিতে নদীতে পড়ে যান তারা। দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ডাকাতির চেষ্টা ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পালং মডেল থানায় পৃথক মামলা হয়েছে। গত শনিবার রাতে পালং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলাগুলো করেন। এতে গণপিটুনিতে আহত পাঁচ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- মুন্সীগঞ্জের রিপন (৪০), শরীয়তপুরের আনোয়ার দেওয়ান (৫০), নড়িয়ার সাঈদ (২৫), মাদারীপুরের সজীব (৩০) ও শরীয়তপুরের রাকিব গাজী (৩০)। তাদের ঢাকা মেডিকেল থেকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

ঢাকা/আকাশ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজশাহীর গ্রামে গ্রামে ঋণের দায় মাথায় নিয়ে কেউ ঘরছাড়া, কেউ নিঃস্ব
  • এখন ঢাকার সাত কলেজ চলবে ইউজিসির অধীন সমন্বিত কাঠামোর আওতায়
  • শাহজাদপুরে আগুনে নিহত চারজনের মরদেহ ঢামেকে
  • অনিয়মের খোঁজ নেওয়ায় সাংবাদিকের চাকরি খাওয়ার হুমকি বেরোবি কর্মকর্তা
  • ইসরায়েলে ছুরি হামলায় নিহত ১, আহত ৩
  • ভোলায় চুরির অভিযোগে একজনের দুই চোখে গুরুতর জখম, কাটা হলো দুই আঙুল
  • ৭টি মৌলিক হক
  • ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডা: পশ্চিমাদের জেগে ওঠার বার্তা
  • নদীতে ভেসে উঠল আরেকজনের লাশ, নিহত বেড়ে ৫