হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইংয়ে গত শুক্রবার শেফরা ব্যস্ত হাতে প্লেটে খাবার সাজাচ্ছিলেন। ওই সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ওভাল অফিসে বৈঠক করছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

বৈঠক শেষ হলেই রাষ্ট্রীয় অতিথিদের পরিবেশন করা হবে খাবার। শেফরা তাঁদের আয়োজন প্রায় গুছিয়ে এনেছেন। অতিথিদের জন্য তৈরি হয়ে গেছে রোজমেরি চিকেন, সেলেরি রুট পিউরি ও কোলার্ড গ্রিন।

হঠাৎই ওভাল অফিসের পরিবেশ পাল্টে যায়। সেখানে বৈঠকে বসা নেতাদের উচ্চকণ্ঠে বাগ্‌বিতণ্ডার আওয়াজ তখন বাইরেও ভেসে আসছিল।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে বাক্যবাণে বিদ্ধ করছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। জেলেনস্কিও পাল্টা জবাব দিচ্ছিলেন, পাল্টা কথা বলছিলেন।

ইউক্রেনের সমর্থকদের জন্য ওই সময়টি ছিল দারুণ বিপর্যয়কর। দুই একগুঁয়ে নেতা মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে সব আয়োজন ভণ্ডুল করে দিয়েছিলেন।

প্লেটে সাজানো রোজমেরি চিকেন, সেলেরি রুট পিউরি, কোলার্ড গ্রিন তেমনই পড়ে রইল।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ নিয়ে চুক্তি সইয়ে প্রস্তুত ইউক্রেন: জেলেনস্কি৭ ঘণ্টা আগে

ট্রাম্প ও ভ্যান্সের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার পর জেলেনস্কি আর খুব বেশি সময় হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণে অবস্থান করেননি। তিনি তাঁর দলবল নিয়ে বেরিয়ে যান। কেউ কেউ দাবি করেছেন, জেলেনস্কিকে একরকম বের করে দেওয়া হয়েছিল। জেলেনস্কি সেদিন মোট ১৩৯ মিনিট হোয়াইট হাউসে অবস্থান করেছিলেন।

আরও পড়ুনজেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস থেকে কীভাবে বের করে দেওয়া হয়, জানালেন ট্রাম্পের উপদেষ্টা১৯ ঘণ্টা আগে

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেনের বিরল খনিজ সম্পদ নিয়ে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করতে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন জেলেনস্কি। সেই অনুযায়ী যান হোয়াইট হাউসে। দুই নেতার চূড়ান্ত আলোচনার পর চুক্তি সই হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছিল।

কিন্তু ওভাল অফিসে বাগ্‌বিতণ্ডার পর সবকিছু ভেস্তে যায়, জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র থেকে সেদিনই যুক্তরাজ্যের পথে রওনা হন।

আরও পড়ুনবৈঠকের আগে মার্কিন কর্মকর্তাদের দেওয়া পরামর্শ কানে তোলেননি জেলেনস্কি১৫ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ

বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।

সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।

জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।

জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।

এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।

আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।

বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।  পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ