ওজন কমানোর একটি সাধারণ উপায় হচ্ছে আপনি প্রতিদিন যে পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করেন তার থেকে প্রতিদিন ৫০০ ক্যালোরি করে কম খেতে হবে। তাহলে আপনার ওজন কমতে শুরু করবে। রোজার মাসে আমরা দিনের বেলাতে না খেয়ে থাকি। তবুও অনেক সময় দেখা যায় যে সারা মাস রোজা রাখার পরও কারো ওজন কমে না এবং অনেকের ওজন আরও বেড়ে যায়। কোন কোন ভুলের কারণে রোজায় আমাদের ওজন না। এ বিষয়ে একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত জানিয়েছেন সাব্বির আহমেদ, পোস্ট ডক্টরাল সাইনটিস্ট। চলুন বিস্তারিত জানা যাক।

এক.

১০০ গ্রাম আলু যদি আপনি তেল ছাড়া রান্না করেন তাহলে এর মধ্যে ক্যালোরি পাবেন ৯৩ ক্যালরি। এখন সেই আলুটাকে যদি আপনি তেলে বাজেন তাহলে এর ক্যালরি গিয়ে দাড়ায় ৩১২ ক্যালরি। শুধুমাত্র তেলে ভাজার কারণে ক্যালরির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে তিনগুণ। এই ব্যাপারটা আসলে কেন ঘটে। তেলের  প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে। মাত্র ২৫০  মিলি রান্না করার তেলের মধ্যে  ২০০০ ক্যালরি থাকে। এখন চারজনের একটা পরিবারের ইফতারের ভাজাপোড়া তৈরি করার জন্য যদি ২৫০ গ্রাম তেল লাগে। তাহলে শুধুমাত্র জনপ্রতি ৫০০ ক্যালোরি করে অতিরিক্ত খাচ্ছেন তেলের কারণে। এখন ওজন কমানোর জন্য যেখানে আপনাকে প্রতিদিন ৫০০ ক্যালোরি করে কম খেতে হবে সেখানে তেলের কারণে আপনি আরো ৫০০ ক্যালোরি করে বেশি খাচ্ছেন। তাহলে আপনার ওজন কীভাবে কমবে।

যারা এসব ভাজাপোড়া রেস্টুরেন্ট থেকে কিনে এনে খান তাদের জন্য একটা অতিরিক্ত দুঃসংবাদ। রেস্টুরেন্টে যখন এগুলো বানানো হয় তখন একই তেলের মধ্যে কয়েক রাউন্ড ভাজা হয়। এর ফলে যেই তেল দিয়ে ভাজা হচ্ছে সেই তেলটা অনেক সময় ধরে অনেক উচ্চমাত্রায় ফুটতে থাকে। যার ফলে তেলের মধ্যে থাকা ফ্যাটি এসিড ট্রানসপারেট হয়ে যায়। যার ফলে ট্রান্সফেট এসিড তৈরি হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, ট্রান্সপোর্ট মানুষকে মোটা করার জন্য সরাসরি দায়ী। এখন অনেকেই ভাবতে পারেন তাহলে যারা চিকন আছে তারা তো খুব সহজে ট্রান্সপোর্ট খেয়ে মোটা হতে পারে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে। ট্রান্সফার শুধু মানুষকে মোটা করে না এটা মানুষের শরীরে কিছু ভয়াবহ ক্ষতি করে। তার মধ্যে একটা গবেষণায় দেখা গেছে, এটি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যার জন্য হার্ট এটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, এরা মানুষের শরীরের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় দেড় গুণ। অর্থাৎ ভাজাপোড়া খেলে তো আপনার ওজন কমবে না আরও বিভিন্ন রোগবালার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।

২) ইফতারে মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণ করা যেমন জিলাপি, মিষ্টি, বুরিন্দা ইত্যাদি। অথবা মিষ্টি জাতীয় যেমন ড্রিংকস আছে কোক, সেভেন আপ, ফান্টা, স্প্রাইট অথবা অন্য ড্রিংকস যা খেতে মিষ্টি লাগে। এখানে একটা সিম্পল রোল আছে যে খাবারটা প্রাকৃতিকভাবেই মিষ্টি, হতে পারে মিষ্টি আম বা মিষ্টি ডাবের পানি । এইগুলো বাদে যে খাবারটা মিষ্টি কিন্তু সেটা মানুষের হাতে তৈরি সেই খাবারগুলো সবই আমাদের জন্য ক্ষতিকর।

আপনি যদি মিষ্টি খাবার কিংবা মিষ্টি পানীয়ও খান তাহলে আপনার শরীরে দুইটা ঘটনা ঘটে। মিষ্টি খাবার গুলো আপনাকে কোন খাবার অনুভূতি দেয় না অর্থাৎ আপনার পেট ভরাবে কিন্তু আপনার শরীরের প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি ভরে দেবে। আবার আমরা যখন মিষ্টি খাবার খাই বা মিষ্টি পানীয় পান করি তখন আমাদের রক্তে একসঙ্গে অনেকখানি সুগার চলে আসে। তো রক্তে তো আর এত সুগার আর একসঙ্গে রাখা যাবে না। এটা অন্যান্য অর্গানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। যার জন্য শরীর একটা ব্যবস্থা নেয়। এর ফলে শরীর প্রচুর পরিমাণে ইনসুলিন পাঠায় রক্তে। ইনসুলিন গিয়ে একটা ব্যবস্থা করে। ইনসুলিন গিয়ে এই সুগারগুলোকে মাসেলের মধ্যে ভরতে শুরু করে। যেন রক্ত থেকে কমে যায় এবং একটা নরমাল কন্ডিশনে আসে। এটাই হচ্ছে মজার ব্যাপার একসঙ্গে ইনসুলিন যে এতগুলো সুগার কোষের মধ্যে দিচ্ছে। কোষেরতো একসঙ্গে এত এনার্জি দরকার নাই। তখন শরীর মনে করে এত সুগার যেহেতু একসঙ্গে আসছে এগুলোকে আমরা ভবিষ্যতের জন্য জমিয়ে রাখি। তখনই সুগারগুলোকে কনভার্ট করে ফ্যাট হিসেবে শরীরের জন্য জমিয়ে রাখে অর্থাৎ চর্বি বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে যেটা হচ্ছে মিষ্টি খাওয়ার ফলে আপনি আপনার ওজন বাড়িয়ে তুলছেন।

৩) অনেকেই আমরা খেয়াল করি না যে নরমাল দিনে আমরা যত বেলা খাই রোজার দিনে আমরা ততবেলা খাই। নরমাল দিনে আমরা সকাল, দুপুর, রাতে খাই রোজার দিনে আমরা ইফতার, সেহেরী আবার রাতে খাই। অনেক সময় দেখা যায় যে নরমাল দিনে অনেকে ব্রেকফাস্ট মিস করেন আবার রোজার দিনে অনেক রাতের খাবারটা মিস করেন। সে হিসেবে রোজার দিনে কিন্তু নরমাল দিন থেকে কম খাওয়া হচ্ছে না।

আমরা যেহেতু রোজা থাকি এবং প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়ে ইফতারে আমরা এত পরিমান খাই যেটা আমরা নরমালি এক বেলাতে অত খেতাম না। আবার সেহরি খাওয়ার সময় দেখা যায় যে পরের দিন সকাল বেলা যেহেতু না খেয়ে থাকতে হবে তাই সেহেরিতে এরকম মনে হয় যে  যা খাওয়ার খেয়ে নেই সারাদিন তো আর খেতে পারব না। সেই হিসেবে দেখা যাচ্ছে যে নরমাল দিনে একজন মানুষ যে খাবার খায় রোজার দিনে তার চেয়ে আরো বেশি খাবার খাচ্ছে। এখন আপনি যে ওজন কমাতে চাচ্ছেন তার জন্যে তো নরমাল দিন থেকে আরো ৫০০ ক্যালোরি  করে কম খেতে হবে।

৪) অনেকে আছে সারাদিন রোজা রেখে ক্ষুধার্ত থাকে এবং ইফতার করার সময় অনেকেই খুব দ্রুত খায়। দ্রুত খাওয়া দাওয়া করলে আসলে ওই সময় কতটুকু খাওয়া হচ্ছে সেটা  কন্ট্রোল থাকে না। খাওয়া শেষ হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পরে বুঝা যায় যে খাওয়াটা বেশি হয়ে গেছে। এর কারণ হচ্ছে আমাদের পেট ভরেছে কিনা কিংবা আমাদের পেট কতটুকু ভরেছে এই অনুভূতি যে হরমোন দেয় তার কাজ করতে একটু সময় লাগে। পাকস্থলী থেকে ব্রেনে আমাদের এই সিগনাল যেতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগে। এখন আপনি যদি ২০ মিনিটের আগে গপাগপ অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন তাহলে যেটা হচ্ছে আপনার পেট কতখানি ভরে গেছে সেটা আপনি টের পাবেন না।

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যাদের দ্রুত খাওয়া দাওয়া করার অভ্যাস তাদের ওজন বেড়ে যায়। ২৩ টা গবেষণার ফলাফল একসঙ্গে করে দেখা যায়,  যারা দ্রুত খাওয়া-দাওয়া করে তাদের মধ্যে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় দ্বিগুণ।

৫)  অনেক সময় দেখা যায় যে রোজা রাখলে আমাদের একটু অলসতা কাজ করে  কাজ করে। এই দুর্বলতা যতটা শারীরিক দুর্বলতা তার চেয়ে বেশি মানসিক দুর্বলতা। আপনি খেয়াল করে দেখবেন অনেকেই রোজা রেখে কায়ীক পরিশ্রমের কাজও করে থাকে। অনেকে খেলাধুলা করে। আমরা আগে এক সময় ক্রিকেটও খেলেছি। রোজা থাকা অবস্থায় আমরা যদি না খেয়ে থাকি তো একটা পর্যায়ে গিয়ে আমাদের রক্তের গ্লুকোজ শেষ হয়ে যায়। এরপর আমরা যে সমস্ত কাজকর্ম করি এই কাজের শক্তি কোথা থেকে আসে? শরীর তখন ফ্যাট ভাঙতে শুরু করে। সেইখান থেকেই শক্তি আসে। এখন আপনি যদি রোজা রেখে অলস সময় পার করেন শারীরিক পরিশ্রম না করেন তাহলে তো আপনার শরীরের শক্তির প্রয়োজন হচ্ছে না। যেহেতু আপনার শরীরের শক্তির প্রয়োজন হচ্ছে না সেহেতু আপনার ফ্যাট ভাঙ্গানো প্রয়োজন হচ্ছে না। তারমানে আপনার চর্বিও কমবে না।

এখন দেখা যাক যে রোজার মাসে আসলে কীভাবে খুব সহজে ওজন কমানো সম্ভব।

রোজার মাসে ওজন কমানোর জন্য আপনাকে তিনটা কাজ করতে হবে।

১) যত ধরনের মিষ্টি খাবার আছে অর্থাৎ যেটা খেলে মিষ্টি লাগে। বা যত ধরনের মিষ্টি জাতীয় পানীয় আছে। এইসব মিষ্টি জাতীয় খাবার বা পানীয় আপনাকে বাদ দিতে হবে। তার সঙ্গে যত ধরনের খাবার আছে যেটাতে তেল ব্যবহার করা হয় সে সমস্ত খাবার বাদ দিতে হবে।

২) আপনি সারাদিনের যতটুকু খাবার খান এটার তিন ভাগের দুই ভাগ খেতে হবে। অর্থাৎ তিন ভাগের একভাগ খাবার আপনাকে কম খেতে হবে।

৩) প্রতিদিন আধা ঘণ্টা করে ইফতারের পর ব্যায়াম করতে হবে। এই ব্যায়ামটা হতে পারে আপনি জিমে গিয়ে করতে পারেন, সিঁড়িতে উঠা নামা করতে পারেন, দৌড়াতে পারেন অর্থাৎ এই আধা ঘন্টা আপনার শরীরকে ঝাকাতে হবে। এটা করতে পারলে আপনার ওজন এক মাসের মধ্যে দুই থেকে তিন কেজি কমে যাবে।

এর থেকেও যদি আপনি আরো দ্রুত কমাতে চান তাহলে সেই ক্ষেত্রে খাবারের পরিমাণ আরো কমিয়ে আনতে হবে। নরমালি আপনি যতটুকু খাবার খেতেন তার অর্ধেক খাবার খাবেন। ব্যায়ামের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ৪৫ মিনিট করে ব্যায়াম করতে হবে। আর তার সঙ্গে মিষ্টি বা তেল জাতীয় খাবার তো বাদ যেটা আগেই বলেছি। এভাবে চলতে থাকলে আপনি এক মাসের মধ্যে চার থেকে পাঁচ কেজি ওজন কমাতে পারবেন।

এর থেকেও দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব কিন্তু এক মাসের মধ্যে যদি পাঁচ কেজির বেশি ওজন কমে তাহলে সেটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। আপনার ইন্টার্নাল অর্গানে সমস্যা হতে পারে।

এখন আগের চেয়ে যেহেতু আপনাকে কম খাবার খেতে হবে এই হিসাবটা আপনি কিভাবে করবেন। এই হিসাবটা আপনি সহজে করতে পারেন সেটা হচ্ছে ক্যালরি রেট হিসাব করে। কিন্তু আপনাদের মধ্যে যদি কেউ এরকম থাকে যে ক্যালরি হিসাবটা ভালোভাবে বুঝেন না তাহলে ;

আমি একটা জেনারেল হিসাব করেছি যে কতটুকু খাবার এক হাজার থেকে ১২০০ ক্যলোরির মধ্যে খাওয়া যায়। স্বাস্থ্যকর হয় এবং ওজন কমানোর জন্য সহায়ক হয়।


ইফতারের সময় আপনাকে পানি শূন্যতা পুরণের জন্য একটা শরবত খেতে হবে। আপনিতো লেবুর শরবত খেতে পারেন কিন্তু এখানে চিনি দেয়া যাবে না। চিনির পরিবর্তে আপনি চার চামচের এক চামচ মধু ব্যবহার করতে পারেন। এটা আপনার পানি শূন্যতা পুরন করবে এবং মধু স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এবং এতে আপনার খরচ মাত্র ৮০ ক্যালরি। এর সঙ্গে চাইলে আপনি এক পিস খেজুর খেতে পারেন যার সঙ্গে আসবে ৩০ ক্যালোরি। এর সঙ্গে আপনি খেতে পারেন এক বাটি ফল। যে ফলগুলো খেলে মিষ্টি লাগে না। পেয়ারা, কমলা বা আমড়া হতে পারে অথবা অন্য কোন ফল হতে পারে যেসব খেলে আপনি মিষ্টি অনুভব করবেন না। আপেলও হতে পারে যেসব আপেল মিষ্টি নয়। এর ফলে আপনি আরো দেড়শ ক্যালোরি শরীরে নিলেন। এরপর আপনার টোটাল ক্যালোরির পরিমাণ  হলো ২৩০ ক্যালোরি। এরপর আপনি নামাজ পড়তে চলে যাবেন এবং নামাজ পড়ে এসে আপনাকে আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে। আপনাকে প্রতিদিন আধা ঘন্টা থেকে ৪৫ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়ামটা এমন করতে হবে যে আপনার শরীর যেন কন্টিনিউয়াসলি একটা ঝাকির মধ্যে থাকে। আপনি চাইলে সিড়িতে উপর উঠা নামা করতে পারেন। ব্যায়ামের ক্ষেত্রে একটা কার্যকর টিপস হচ্ছে আপনি নিজেকে নিযে চ্যালেঞ্জ করবেন। যেরকম আপনার পাঁচতলা বেয়ে উঠতে যদি দশ মিনিট সময় লাগে। পরেরবার আপনি চাইবেন যেন এই পাঁচতলা বেয়ে উঠতে আপনি নয় মিনিট সময় নেন। তারপর এবার ৮ মিনিট এইভাবে নিজেকে চ্যালেঞ্জ করবেন।

এরপর আপনি বাসায় এসে একটা সিদ্ধ ডিম খাবেন এবং এর সঙ্গে একবাটি সবজি খাবেন। এইসব কোন সবজি এসব নিয়ম একটা ভিডিও বানাইছিলাম যে সবজিগুলো হচ্ছে অনেক কম ক্যালরি কিন্তু খুব স্বাস্থ্যকর। এর সঙ্গে আপনি খেতে পারেন একবাটি ছোলা অথবা এক বাটি ডাল অথবা ৫০ গ্রাম বাদাম।

এরপর আপনি এশার নামাজ পড়তে যাবেন এবং ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়তে পড়তে আপনার সব খাবার গুলো ডাইজেস্ট হয়ে যাবে। এরপর থেকে সেহেরির আগ পর্যন্ত আপনার আর কোন খাবার খাওয়া যাবে না কিন্তু আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

সেহরিতে আপনি এক কাপ ভাত খেতে পারেন তবে এই ভাতটা হবে লাল চালের ভাত। অথবা আপনি দুইটা লাল আটার রুটি খেতে পারেন। এর সঙ্গে আপনি খাবেন ১০০ গ্রাম পরিমাণ মাছ অথবা মাংস বা যে কোন ধরনের প্রোটিন জাতীয় খাবার। আর যদি মাছ-মাংসের ব্যবস্থা না হয় তাহলে আপনি একবাটি ছোলা খেতে পারেন এবং তার সঙ্গে এক বাটি সবজি খেতে পারেন। তো সব মিলে আপনার সারাদিনে শরীরে যাচ্ছে মাত্র ১২০০ ক্যালোরির মতো। কিন্তু আপনাকে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে আপনি যদি খাবার রান্না করার সময় তেল ব্যবহার করেন তাহলে আমরা যে হিসাব করছি সেটি কিন্তু তখন থাকবে না এবং আপনার ওজনও কমবে না। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে যে আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ৭ ঘন্টা করে ঘুমানো উচিত। যদি আপনার ঘুম পর্যাপ্ত পরিমাণ না হয় তাহলে আপনার শরীরের মেটাবলিজম পর্যাপ্ত হবে না। ওজন কমবে না  ওজন ঠিক রাখার জন্য মেটাবলিজম ঠিক রাখাটা খুবই জরুরি।

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৫০০ ক য ল র আপন র ওজন এরপর আপন নরম ল দ ন য র জন য র ন ত হল ইনস ল ন আপন র প একসঙ গ ক জ কর র র পর কম খ ত কর ন ত আম দ র অন ক ই ওজন ক র আপন আপন ক ইফত র ধরন র ম করত র একট করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর চারপাশে নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা

অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে পৃথিবীর চারপাশে ভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের সন্ধান করছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে লুকানো সেই বৈদ্যুতিক শক্তির খোঁজ পাওয়ার দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার একদল বিজ্ঞানী। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, নতুন ধরনের এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডল জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। শান্ত কিন্তু শক্তিশালী এই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। পৃথিবীর বায়ু ও মহাকাশের সংযোগে প্রধান ভূমিকা পালনও করে থাকে এই শক্তি। নাসার এনডুরেন্স মিশনের মাধ্যমে এই ক্ষেত্রের খোঁজ মিলেছে।

পৃথিবীর অনেক ওপরে বায়ুমণ্ডল ধীরে ধীরে পাতলা হতে শুরু করে, এর ফলে সেখানে পরমাণু চার্জযুক্ত কণা ভেঙে হালকা ইলেকট্রন ও ভারী আয়নে পরিণত হয়। সাধারণভাবে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আয়নকে নিচে টেনে নিয়ে আসে আর ইলেকট্রন হালকা বলে ওপরে ভেসে থাকে। কিন্তু বৈদ্যুতিক চার্জ আলাদা থাকতে চায় না। ইলেকট্রন পালাতে শুরু করলে তার সঙ্গে আয়নকে একসঙ্গে ধরে রাখার জন্য একটি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি হয়। এই ক্ষেত্র আয়নকে ওপরে ঠেলে দেয় আর ইলেকট্রনকে ধীর করে দেয়। এই ভারসাম্যকে বিজ্ঞানীরা অ্যাম্বিপোলার বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র বলেন। এটি একটি অদৃশ্য টানাটানির মতো কাজ করে। চার্জকে আলাদা হওয়া থেকে রক্ষা করে। পৃথিবী থেকে ২৫০ থেকে ৭৭০ কিলোমিটার ওপরে এই ক্ষেত্রের উপস্থিতি দেখা যায়। এর প্রভাব সূক্ষ্ম, কিন্তু বেশ শক্তিশালী।

নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের বিষয়ে নাসার বিজ্ঞানী গ্লিন কলিনসন বলেন, অ্যাম্বিপোলার ক্ষেত্র কণাকে উত্তপ্ত করার পরিবর্তে শান্তভাবে কণাকে ওপরে নিয়ে যায়, যেখানে অন্যান্য শক্তি সেগুলোকে আরও ওপরের মহাকাশে নিয়ে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা দেখছেন, এই ক্ষেত্র হাইড্রোজেন আয়নকে সুপারসনিক গতিতে পৃথিবী থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী। মাধ্যাকর্ষণের ঊর্ধ্বমুখী শক্তির চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী এই শক্তি।

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবাহিত চার্জযুক্ত কণার তথ্য জানতে ২০২২ সালের ১১ মে একটি রকেট উৎক্ষেপণ করেছিল নাসার এনডুরেন্স মিশন। রকেটটি পৃথিবীর ওপরে ৭৬৮ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছানোর আগে বায়ুমণ্ডলের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। সেসব তথ্য পর্যালোচনা করেই নতুন ধরনের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: আর্থ ডটকম

সম্পর্কিত নিবন্ধ