স্কি ছুটিতে থাকা মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও তার পরিবারকে ‌‘অজ্ঞাত স্থানে’ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি শনিবার পরিবারের সঙ্গে ভারমন্ট রাজ্যে ছুটিতে গেলে একদল ইউক্রেন সমর্থক বিক্ষোভকারী তাকে ঘিরে ফেলেন। ফলে সেই ছুটি বাধাগ্রস্ত হয়। ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ বৈঠকের পরই এই বিক্ষোভ শুরু হয়।

এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে হওয়া বৈঠক থেকে। সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং মূলত সেই উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন ভ্যান্স। বৈঠকটি সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে শুরু হলেও হঠাৎ করেই ভ্যান্স জেলেনস্কির ওপর তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন যা জেলেনস্কিকে পুরোপুরি অপ্রস্তুত করে ফেলে।

ফক্স নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী শনিবার ভ্যান্স ও তার পরিবারকে ‘অজ্ঞাত স্থান ‘ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, কারণ তিনি ইউক্রেন সমর্থক বিক্ষোভকারীদের সম্মুখীন হন।
বিক্ষোভকারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং ভ্যান্সকে উদ্দেশ্য করে তীব্র ভাষায় গালিগালাজ করে। অনেকে হাতে প্ল্যাকার্ড ধরে ছিলেন যেখানে লেখা ছিল ‘রাশিয়ায় গিয়ে স্কি কর।’

ওই বৈঠকে যখন জেলেনস্কি কূটনৈতিক সমাধান নিয়ে ভ্যান্সের বক্তব্য জানতে চান তখন ভ্যান্স পাল্টা বলেন, ‘আমি এমন কূটনীতির কথা বলছি, যা আপনার দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাবে।’ ভ্যান্স আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট আপনার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, আমেরিকান মিডিয়ার সামনে এসে এভাবে বিষয়টি উত্থাপন করা আপনার পক্ষ থেকে অসম্মানজনক।’ এরপর তিনি অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন জেলেনস্কি। এছাড়া রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়তে যুক্তরাষ্ট্র যে বিপুল পরিমাণ আর্থিক সহায়তা দিয়েছে তার জন্য জেলেনস্কি যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেননি।

এই নাটকীয় বাকবিতণ্ডার পর ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি স্পষ্ট করে বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে কোনোভাবেই ক্ষমা চাইতে বাধ্য নন। ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রেসিডেন্টের প্রতি ভ্যান্সের আচরণে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন।

তবে, কিছু রিপাবলিকান নেতা ভ্যান্সের অবস্থানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। দক্ষিণ ক্যারোলিনার সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম, যিনি দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনের পক্ষে এবং কঠোর পররাষ্ট্রনীতির সমর্থক হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি জেডি ভ্যান্সের এমন সাহসী অবস্থানের জন্য গর্বিত।’

এই ঘটনার ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে গেছে। বিশেষজ্ঞরা এখন প্রশ্ন তুলছেন মস্কোর ক্রমবর্ধমান হামলার মধ্যে ওয়াশিংটন আদৌ কিয়েভের প্রতি কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাম্পের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্পর্ক ক্রমেই ঘনিষ্ঠ হওয়ার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অবস্থান থেকে এক ধরনের বিচ্যুতি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

ডেইলি এক্সপ্রেস ইউএস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দ্য সুফান সেন্টারের গবেষক নিকি লিউবারস্কি বলেন, ‘এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক যখন সবচেয়ে ভালো ছিল, তখনও সেখানে চাপা উত্তেজনা ও অবিশ্বাস ছিল। এমন ‘ভাতৃপ্রতীম’ সম্পর্ক আগে কখনও দেখা যায়নি।’
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ইউক র ন র পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

এবার ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে ইফতার করালো রাবি প্রশাসন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) অধ্যায়নরত ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার (৩ মার্চ) দ্বিতীয় রোজায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে এ আয়োজন করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আসরের নামাজের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা দলে দলে কেন্দ্রীয় মসজিদে আসতে শুরু করেন। এ সময় মসজিদের ভেতরে এবং মসজিদ সংলগ্ন বাগানে তারা ইফতারির জন্য সারিবদ্ধভাবে বসেন। এ ছাড়াও নারীদের জন্য মসজিদের বাগানে আলাদাভাবে ইফতারির ব্যবস্থা করা হয়। এতে মসজিদ প্রাঙ্গণে তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ।

আরো পড়ুন:

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গণইফতার আয়োজন করে অভিনব প্রতিবাদ

রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা, ভোটগ্রহণ জুনে

ইফতারে অংশগ্রহণ করতে আসা ইনফরমেশন সাইন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রোকনুজ্জামান বলেন, “আজকের আয়োজন অনেক ভালো ছিল। এখানে সবার সঙ্গে ইফতার করতে এসে খুবই ভালো লাগছে। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটা দিন মনে হচ্ছে ঈদের মতো। প্রশাসনের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।”

আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন আহমেদ বলেন, “গতকালের তুলনায় আজকের আয়োজন অনেক ভালো। কাল সব এলোমেলো ছিল। কিন্তু আজকের আয়োজন গোছালো হয়েছে। এত মানুষের সঙ্গে আগে কখনো ইফতার করিনি। অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছে। মনে হচ্ছে এখানে মেলা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর আয়োজন করার জন্য।”

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইফতারে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন খান (প্রশাসন), উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান (শিক্ষা), রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ, জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার প্রমখ।

সার্বিক বিষয়ে জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “আমরা আজ প্রায় সাড়ে ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতার আয়োজন করেছি। যা গতকালের তুলনায় তিনগুণ। আমরা আশা করছি আজ সব ঠিকঠাক মতো হবে। এজন্য সবার সাহায্য প্রয়োজন, যাতে কোন উশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না হয়।”

প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। রোজার প্রথমদিন রবিবার (২ মার্চ) ৪ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। কিন্তু আয়োজনের তুলনায় অধিক রোজাদার উপস্থিত হওয়ায় ইফতারে সঙ্কট দেখা দিলে শিক্ষার্থীদের ভাগাভাগি করে নিতে দেখা গেছে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ