বড় লক্ষ্য অর্জনে ইউক্রেনকে দূরে ঠেলছেন ট্রাম্প
Published: 2nd, March 2025 GMT
হোয়াইট হাউসে এমন দৃশ্য বিরল। সাংবাদিকদের সামনে বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এটা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র—বিশেষ করে ইউরোপীয় নেতাদের হতবাক করেছে। বিরল এ ঘটনার পর বিশ্লেষকদের অনেকের ধারণা, ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পাশে থাকার পর এবার জেলেনস্কির হাত পুরোপুরি ছাড়তে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। এর পেছনে রয়েছে ট্রাম্পের বড় কোনো উদ্দেশ্য।
তিন বছর ধরে চলমান যুদ্ধের পর কিয়েভের ওপর থেকে যে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন তুলে নিচ্ছে, তা শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ঘটনায় স্পষ্ট। আগের মতোই জেলেনস্কির উদ্দেশে ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ থামাতে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার ক্ষেত্রে ইউক্রেনের হাতে কোনো ‘কার্ড’ নেই। অর্থাৎ যে কোনো সমঝোতায় কিয়েভকে বড় ছাড় দিতে হতে পারে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও এক হাত নিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে। তাঁর ভাষায়, জেলেনস্কি একজন ‘অকৃতজ্ঞ’। ‘অসম্মানজনক’ আচরণ করেছেন তিনি।
ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেওয়া পদক্ষেপে বহু আগে থেকেই বিরক্ত ছিলেন ট্রাম্প। শুক্রবারও বাইডেনকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, একজন ‘নির্বোধ’ প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার দিয়েছেন। ইউক্রেনকে দেওয়া এই অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের ফেরত আনার কথা সম্প্রতি বেশ কয়েকবার বলেছেন ট্রাম্প। সে লক্ষ্যে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে জেলেনস্কিকে চাপ দিচ্ছিলেন। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সেই চুক্তিতে দুই প্রেসিডেন্টের সই করার কথা ছিল। তবে বাগ্বিতণ্ডার পর চুক্তিটি আর আলোর মুখ দেখেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। শুক্রবার ওয়াশিংটনে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
ভারী যন্ত্রের অভাবে মিয়ানমারে খালি হাতে উদ্ধার অভিযান
মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর দুই দিন পেরিয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবিত ব্যক্তিদের বের করে আনতে দিনরাত এক করে কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা।
কিন্তু বেশির ভাগ উদ্ধারকর্মীকে খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরাতে হচ্ছে। ভারী যন্ত্রপাতির অভাবে উদ্ধারকাজ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এত বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার মতো সক্ষমতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ মিয়ানমারের নেই।
গত শুক্রবার ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে মিয়ানমারে বহু ভবন ও স্থাপনা ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চল, দেশটির এক সময়ের রাজধানী মান্দালয়ের কাছে। প্রাচীন এই শহরে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বসবাস করেন। সেখানে অনেক ঐতিহাসিক মন্দির ও প্রাসাদ রয়েছে।
মান্দালয়ে ভূমিকম্পের পর বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের একজন ২৫ বছরের হতেত মিন। তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘সেখানে অনেক ধ্বংসস্তূপ পড়ে আছে। কোনো উদ্ধারকারী দল আমাদের এখানে আসেনি।’
হতেত আরও বলেন, তাঁর স্বজনদের কয়েকজন একটি ধসে পড়া ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তিনি খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাঁদের বের করে আনার চেষ্টা করছেন।
মান্দালয়ের শহরতলি আমারাপুরা। সেখান থেকে একজন উদ্ধারকর্মী জানিয়েছেন, তিনি একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিচে চাপা পড়া ১৪০ বৌদ্ধভিক্ষুর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
ওই উদ্ধারকর্মী বলেন, ‘আমরা তাদের সাহায্য করতে পারছি না। কারণ, ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নেওয়ার মতো লোকবল ও যন্ত্রপাতি আমাদের নেই। কিন্তু আমরা আশা ছাড়ছি না। আমরা কাজ বন্ধ করব না।’
চীন, ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ মিয়ানমারের প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ ভূমিকম্প দুর্গতদের উদ্ধারের সেখানে উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী বলেছে, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০–এর বেশি মানুষ মারা গেছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৩ হাজার ৪০০ জন। নিখোঁজ প্রায় ১৪০ জন। হতাহতের এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুনভূমিকম্প বিধ্বস্ত মিয়ানমারে ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল নিয়ে ছুটছে প্রতিবেশী দেশগুলো৪ ঘণ্টা আগে