ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের তৃতীয় বার্ষিকীতে জাতিসংঘে ভোটে দুবার রাশিয়ার পক্ষ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যা ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান পরিবর্তনকে তুলে ধরে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, মস্কোর আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে এবং ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ইউরোপীয়-খসড়া প্রস্তাব দেয়া হয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া এর বিরোধিতা করে। যদিও প্রস্তাবটি পাস হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ফ্রান্সে রাশিয়ার কনস্যুলেটে ককটেল হামলা

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শেষ হতে পারে এই সপ্তাহে: হোয়াইট হাউজ

এরপর  জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দ্বিতীয় প্রস্তাবটি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়ে মার্কিন-খসড়া প্রস্তাবটি দেয়া হয়। কিন্তু সেখানে রাশিয়ার কোনো সমালোচনা করা হয়নি। এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ওয়াশিংটন ও মস্কো।

তবে প্রস্তাবটি পাস হলেও যুক্তরাষ্ট্রের দুই ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স শব্দ সংশোধনের আহ্বান জানান। তাতে ভেটো দিলে তারা ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে।

যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতে হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বৈঠক করার সময়টাতে জাতিসংঘে এই প্রস্তাবগুলো উত্থাপন করা হয়।

আগামী বৃহস্পতিবার, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারও ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।

সোমবার ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ইউক্রেন ইস্যুতে ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এই মতভেদ প্রকাশ্যে আসে যখন মার্কিন কূটনীতিকরা ‘রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের’ সময় প্রাণহানির জন্য শোক প্রকাশ করেন এবং এর দ্রুত অবসানের আহ্বান জানিয়ে তাদের সংক্ষিপ্ত প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।

ইউরোপীয় কূটনীতিকরা রাশিয়াকে তার পূর্ণাঙ্গ আক্রমণের জন্য দায়ী করে এবং ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করে আরো বিস্তারিত একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

ইউক্রেনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়ানা বেতসা বলেন, “আমাদের পুনরায় নিশ্চিত করতে হবে যে, আগ্রাসনকে পুরস্কৃত নয় বরং নিন্দা ও অসম্মান করা উচিত।” 

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সদস্যরা ইউরোপীয় প্রস্তাবটিকে ৯৩ ভোটে অনুমোদন করে। তবে বিরল ঘটনা হলো, যুক্তরাষ্ট্র এবার ভোটদানে বিরত থাকেনি বরং সরাসরি এর বিপক্ষে ভোট দেয়।

এছাড়া, রাশিয়া, ইসরাইল, উত্তর কোরিয়া, সুদান, বেলারুশ, হাঙ্গেরি এবং আরও ১১টি রাষ্ট্র এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। ৬৫টি দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে।

সাধারণ পরিষদে মার্কিন প্রস্তাবটিও পাস হয়। যখন ইউক্রেনকে সমর্থন করে ভাষা সংশোধন করা হয়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভোটদান থেকে বিরত থাকে।

অন্যদিকে, ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের শক্তিশালী নিরাপত্তা পরিষদে অসংশোধিত মার্কিন প্রস্তাবটি ১০ ভোটে গৃহীত হয়। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, গ্রীস ও স্লোভেনিয়া ভোটদানে বিরত থাকে।   

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, কথিত ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এতটা মতবিরোধের ঘটনা বিরল। 

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের চিঠির জবাব দিয়েছে ইরান

পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন চুক্তির আহ্বান জানিয়ে ইরানকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিঠির জবাব দিয়েছে তেহরান। ওমানের মাধ্যমে এই জবাব দেওয়া হয়। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ কথা জানিয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক নিবন্ধে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ট্রাম্পের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের জবাব ‘ওমানের মাধ্যমে যথাযথভাবে পাঠানো হয়েছে’।

আরাগচি বলেন, ‘সর্বোচ্চ চাপ ও সামরিক হুমকির মধ্যে থাকা অবস্থায় সরাসরি আলোচনায় যুক্ত না হওয়ার আমাদের নীতি এখনো বহাল আছে। তবে অতীতের মতো পরোক্ষ আলোচনা চলতে পারে।’

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জবাবের মধ্যে একটি চিঠি রয়েছে, যেখানে বর্তমান পরিস্থিতি ও ট্রাম্পের চিঠির বিষয়ে আমাদের অভিমত বিস্তারিত তুলে ধরেছি।’

আরও পড়ুনইরানের নেতাকে ট্রাম্পের চিঠি০৭ মার্চ ২০২৫

‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের’ নীতির অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৮ সালে তাঁর প্রথম মেয়াদে ইরানের সঙ্গে হওয়া পারমাণবিক চুক্তি থেকে একতরফা সরে আসেন এবং দেশটির ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্তে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রভাবশালী দেশগুলোর সঙ্গে ওই চুক্তি করেছিল ইরান।

৭ মার্চ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে তিনি চিঠি লিখেছেন। তেহরান আলোচনায় বসতে রাজি না হলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাধ্যমে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছিল। চিঠিতে আলোচনায় বসার জন্য ইরান দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

সম্পর্কিত নিবন্ধ