১৮ বছর আগে চাকরিচ্যুত ৮২ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার চাকরিতে পুনর্বহালের পথ খুলল
Published: 25th, February 2025 GMT
১৮ বছর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে চাকরিচ্যুত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মধ্যে ৮৩ জনের চাকরিতে পুনর্বহালের পথ খুলেছে। আর ৮৫ জনের মধ্যে মারা যাওয়া তিনজনের উত্তরাধিকারীরা আইন অনুযায়ী প্রাপ্য সুবিধাদি পাবেন। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর এই ৮৫ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল।
এ-সংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতদের করা আপিল মঞ্জুর ও পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন নিষ্পত্তি করে আজ মঙ্গলবার রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিতে এ রায় দেন।
রায়ের পর আপিলকারীদের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন প্রথম আলোকে বলেন, ৮৫ জনের মধ্যে জীবিত ৮২ জন বকেয়া সব বেতন-ভাতা, আইনে প্রাপ্য সব সুবিধা ও জেষ্ঠ্যতাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল হবেন। চাকরিচ্যুতির কারণে যে সময়টা তাঁরা অফিসে উপস্থিত ছিলেন না, সেই সময়টা অসাধারণ ছুটি হিসেবে গণ্য হবে বলে রায়ে এসেছে। যে তিনজন মারা গেছেন, তাঁদের উত্তরাধিকারীরা নির্বাচন কমিশনে দরখাস্ত সাপেক্ষে আইন অনুসারে সব সুবিধাদি পাবেন, যা আবেদনকারী জীবিত থাকলে পেতেন। সর্বসম্মতিতে আপিল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এই রায়ের আলোকে পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
আজকের রায়ে ৮৫ জনকে চাকরিতে পুনর্বহালের করতে দেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল করে আপিল বিভাগ ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর যে রায় দিয়েছিলেন, তা বাতিল করা হয়েছে। প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত বাতিল করে আপিল বিভাগ ওই রায় দিয়েছিলেন। আপিল বিভাগের ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর দেওয়া রায়কে কেন্দ্র করে চাকরিচ্যুত ব্যক্তিরা একটি আপিল ও চারটি পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। যার ওপর ২০ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত রায়ের জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি তারিখ রাখেন। সে অনুসারে আজ রায় ঘোষণা করা হলো।
এর আগে ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ৮৫ কর্মকর্তার আপিল মঞ্জুর করে তাঁরা চাকরিতে আছেন ধরে নিয়ে পাওনা পরিশোধসহ আইনে প্রাপ্য সব সুবিধা দিয়ে অবিলম্বে তাঁদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে রায় দিয়েছিলেন।
আদালতে আপিলকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। পুনর্বিবেচনার আবেদনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও মো.
আইনজীবীদের তথ্যমতে, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ৮৫ জনকে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তাঁরা আপিল করেন। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ৮৫ কর্মকর্তার আপিল মঞ্জুর করে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন।
প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকারপক্ষ পৃথক আপিল করে। সরকারপক্ষের করা আপিলগুলো মঞ্জুর করে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর রায় দেন আপিল বিভাগ। এই রায়ে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল দেওয়া রায় (৮৫ কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে) বাতিল করা হয়।
আপিল বিভাগের ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ২০২৩ সালে পৃথক পাঁচটি আবেদন করেন চাকরিচ্যুতরা। শুনানি নিয়ে একটি রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ গত বছরের ৬ নভেম্বর লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি) মঞ্জুর করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে এই আপিলের (রিভিউ আবেদনের প্রেক্ষিতে উদ্ভূত) সারসংক্ষেপ চার সপ্তাহের মধ্যে দায়ের করতে আবেদনকারীপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই আপিলের সঙ্গে অপর চারটি রিভিউ আবেদন শুনানিতে থাকবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। পৃথক আবেদনের শুনানি শেষে আজ রায় দেন আপিল বিভাগ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০১০ স ল র চ কর চ য ত ব ত ল কর আইনজ ব কর ত র চ কর ত র চ কর রপক ষ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিচারক বললেন, আদালতের অনুমতি ছাড়া মক্কেলের সঙ্গে আইনজীবীর কথা নয়
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে শুনানি শেষ হয়। বিচারক আদালতকক্ষ থেকে খাসকামরায় যান। তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মাথায় এক পুলিশ সদস্য হেলমেট পরিয়ে দেন। আনিসুল নিজেই তাঁর দুই হাত পেছনের দিকে রাখেন। পরে এক পুলিশ সদস্য তাঁর দুই হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেন।
আনিসুলের ঠিক সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তাঁর মাথায়ও হেলমেট পরিয়ে দেওয়া হয়। তিনিও তাঁর দুই হাত পেছনের দিকে নিয়ে যান। পরে এক পুলিশ সদস্য তাঁর দুই হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেন।
এভাবে একে একে সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, কামরুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলকদের মাথায় হেলমেট ও দুই হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে দেন পুলিশ সদস্যরা। এরপর একে একে আদালতের বারান্দায় এনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় তাঁদের।
আদালত ভবনের ছয়তলায় ছিলেন আসামিরা। ভবনের সিঁড়ি দিয়ে যখন তাঁদের পাঁচতলায় আনা হয়, তখন দেখা যায়, রাশেদ খান মেননের দুই বাহু দুজন পুলিশ সদস্য ধরে রেখেছেন। তিনি সাবধানে সিঁড়ি দিয়ে নিচের দিকে নামতে থাকেন। এ সময় তিনি মাথা নিচু করে ছিলেন।
একইভাবে ইনু, কামরুল, আনিসুল, সালমান, শাজাহান খান, আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, জুনাইদ আহ্মেদ পলক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মজুমদার প্রত্যেকের দুই বাহু দুজন করে পুলিশ সদস্য ধরে রাখেন। তাঁরা খুব সাবধানে ছয়তলার সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে থাকেন। এরপর দ্রুত নিচতলা থেকে আদালতের সামনে দিয়ে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় হাজতখানায়।
আদালতকক্ষে যাওয়ার সময় বিমর্ষসকাল সাড়ে আটটার দিকে আনিসুল, সালমান, কামরুলদের কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় এনে রাখা হয়। সকাল সাড়ে ৯টার পর পুলিশের একটা দল তাঁদের প্রত্যেকের মাথায় হেলমেট পরিয়ে দেয়। বুকে পরিয়ে দেয় বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। আর দুই হাত পেছনে নিয়ে পরিয়ে দেয় হাতকড়া।
এরপর সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে আসামিদের একে একে হাজতখানা থেকে বের করে আনা হয়। সারিবদ্ধভাবে আনিসুল, সালমান, মেনন, কামরুল, ইনুরা সামনের দিকে হাঁটতে থাকেন। তাঁদের হাঁটিয়ে লিফটের সামনে আনা হয়। পরে লিফটে তাঁদের আদালত ভবনের ছয়তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাঁদের প্রত্যেককে বিমর্ষ দেখা যায়।
‘আদালতের অনুমতি ছাড়া কথা বলা যাবে না’
সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে কামরুলকে যখন আদালতকক্ষের সামনে আনা হয়, তখন এক পুলিশ সদস্য তাঁর মাথা থেকে হেলমেটটি খুলে নেন। দুই হাত পেছনে নিয়ে পরিয়ে দেওয়া হাতকড়াও খুলে দেন এক পুলিশ সদস্য।
এরপর কামরুলকে এজলাস কক্ষে ঢোকার জন্য অনুরোধ করা হয়। পুলিশ সদস্যের এমন কথা শুনে বিরক্ত হন তিনি।
পুলিশ কনস্টেবলের উদ্দেশে কামরুল বলেন, ‘আমার বুকের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট খোলেন।’ তখন কনস্টেবল কামরুলকে বলেন, ‘স্যার, এই বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট খোলা যাবে না।’
পুলিশ কনস্টেবলের এ কথা শুনে রেগে এজলাস কক্ষের কাঠগড়ায় ঢোকেন কামরুল। তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন আনিসুল ও সালমান। কামরুল তখন সালমান ও আনিসুলের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন।
কাঠগড়ায় তখন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ছিলেন ইনু ও মেনন। মেনন তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। ইনুও কথা বলছিলেন তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে।
সালমান ও আনিসুল যখন তাঁদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলায় ব্যস্ত, তখন এজলাস কক্ষে প্রবেশ করেন বিচারক। সময় তখন সকাল ১০টা ৫ মিনিট।
এজলাস কক্ষ আইনজীবীতে ঠাসা। কাঠগড়ায় গায়ে গায়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আনিসুলসহ অন্যরা। এর মধ্যেই বিচারক কথা বলতে শুরু করেন। আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারক বলেন, আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনো আইনজীবী তাঁর মক্কেলের সঙ্গে কথা বলবেন না।
বিচারকের এমন নির্দেশনার পর আইনজীবীরা আনিসুল–সালমানদের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করেন। পরে শাজাহান খানসহ কয়েকজনের আইনজীবী আদালতের অনুমতি নিয়ে মক্কেলদের ওকালতনামায় স্বাক্ষর করান।
পরে আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের এক আইনজীবী তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। তখন সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা জ্যাকবের আইনজীবীকে বলেন, ‘আদালতের অনুমতি ছাড়া কথা বলা যাবে না। আদালতের অনুমতি নেন, তারপর কথা বলেন।’
শুনানি শুরু হয়। যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় আনিসুল, সালমান, শাজাহান, ইনু, মেনন ও পলককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। এ সময় আনিসুল ও কামরুল জানতে চান, কোন মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।
তখন এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তাঁদের যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করার পর বিচারক নিজেই আনিসুলদের উদ্দেশে বলতে থাকেন, ‘আপনাদের যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’
আনিসুল, সালমান, কামরুল ও পলকের হাসিমুখ
এজলাস কক্ষে প্রবেশের পরপর বিচারক বলে দিয়েছিলেন, আদালতের অনুমতি ছাড়া আইনজীবীরা তাঁদের মক্কেলদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না।
আদালতের এমন নির্দেশনার পর আনিসুল, সালমান, পলক, কামরুল, ইনুরা আর তাঁদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেননি; বরং শুনানির সময় আনিসুল, সালমান, কামরুল, ইনুরা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে শুরু করেন।
সবচেয়ে বেশি কথা বলেন পলক। তিনি আনিসুলের সঙ্গেও কথা বলেন। আবার কথা বলেন একাত্তর টিভির সাবেক প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবুর সঙ্গে। আরও কথা বলেন একাত্তর টিভির সাবেক সাংবাদিক ফারজানা রুপার সঙ্গে। এ সময় পলককে হাসিমুখে কথা বলতে দেখা যায়। ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে তিনি কথা বলেন কাঠগড়ায়।
পলক যখন রুপার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন আনিসুল ও সালমান নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকেন।
কাঠগড়ায় কিছুটা নিশ্চুপ ছিলেন মেনন। ইনু হাসিমুখে মামলার শুনানি শুনতে থাকেন। এ সময় রুপা তাঁর স্বামী শাকিল আহমেদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলেন। মোজাম্মেল বাবুর সঙ্গেও কথা বলেন রুপা ও শাকিল।
কাঠগড়ার এক কোনায় দাঁড়িয়ে থাকা সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন দুবার সালমানের সঙ্গে কথা বলেন। আনিসুলের সঙ্গে কথা বলেন একবার। তবে তাঁর মুখে কোনো হাসি ছিল না। অন্যদিকে আনিসুলের সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলেন কামরুল। এ সময় আনিসুলের মুখে ছিল হাসি।
ঢাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড যাত্রাবাড়ীতে
যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা শক্তি তালুকদার হত্যা মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন ও সাবেক ওসি আবুল হাসানকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়।
দুজনের রিমান্ডের সপক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি আদালতকে বলেন, জুলাই–আগস্টের ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় ঢাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায়। এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান সরাসরি জড়িত। কেবল হত্যাকাণ্ড নয়, এই সময়ে তিন হাজার ছাত্র–জনতাকে গুলিতে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মামলা হবে। প্রতিটি মামলায় তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করা হবে।
এ সময় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আইনজীবী আদালতকে বলেন, তাঁর মক্কেল এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ইতিমধ্যে ৮৫ দিনের বেশি রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। ৬০ দিনের বেশি তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁকে যদি জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়, তাহলে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়া হোক।
শুনানি নিয়ে আদালত মামুনের তিন ও যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসানের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।