ইউক্রেনে একরাতেই আড়াই শতাধিক ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তিন বছর আগে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে একদিনে এটাই সর্বোচ্চ ড্রোন হামলার ঘটনা। 

ইউক্রেনের বিমান বাহিনী রবিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসির।

ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইগনাট বলেছেন, সমন্বিত এক হামলায় ‘রেকর্ডসংখ্যক’ ২৬৭টি রুশ ড্রোন উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

ফের বৈঠকে বসছে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র

শান্তি আলোচনার ‘তাস’ রাশিয়ার হাতে রয়েছে: ট্রাম্প

দেশটির জরুরি পরিষেবা সংস্থাগুলো বলছে, শনিবার রাতভর ব্যাপক ড্রোন হামলার এই ঘটনায় বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে ও ভবনে আগুন লেগেছে।

কতজন নিহত হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়, তবে জরুরি পরিষেবা সংস্থাগুলোর প্রাথমিক পরিসংখ্যানে কমপক্ষে তিনজন হতাহতের কথা বলা হয়েছে।

এদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রবিবার জানিয়েছে, শনিবার রাতে রাশিয়ায় ছোড়া ২০টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ‘ধ্বংস’ করা হয়েছে।

রাশিয়ার ভয়াবহ এই হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এক বিবৃতি বলেছেন, “প্রতিদিন আমাদের জনগণ আকাশপথে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছে। পূর্ণ-পরিসরে যুদ্ধের তৃতীয় বার্ষিকীর প্রাক্কালে, রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ২৬৭টি আক্রমণাত্মক ড্রোন উৎক্ষেপণ করেছে- ইরানি ড্রোন ইউক্রেনের শহর ও গ্রামে আঘাত হানা শুরু করার পর থেকে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।”

তিনি আরো বলেন, ‘রাশিয়া এই সপ্তাহে মোট প্রায় ১,১৫০টি আক্রমণাত্মক ড্রোন, ১,৪০০টিরও বেশি গাইডেড বোমা ও বিভিন্ন ধরনের ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে।”

বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ‘যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন।

জেলেনস্কি দাবি করেন, “ইউক্রেনে স্থায়ী ও ন্যায়সঙ্গত শান্তি আনার জন্য আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে। সকল অংশীদারদের ‘ঐক্যের মাধ্যমে’ এটি অর্জন করা সম্ভব।” তিনি ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ এ অঞ্চলে শান্তি কামনাকারী সব দেশকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

সপ্তাহজুড়ে দর পতন

ফের টানা দর পতনে দেশের শেয়ারবাজার। এ সপ্তাহের চার কর্মদিবসের প্রতিদিনই প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে। এক সপ্তাহে সূচকটি হারিয়েছে ১০৯ পয়েন্ট বা ২ শতাংশ। এ সময়ে তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির মধ্যে ২৬৭টি এবং ৩৭টি মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩২টি দর হারিয়েছে।
এর আগে সপ্তাহজুড়ে দর পতন হয়েছিল গত ১২ থেকে ১৬ জানুয়ারি। মাঝে দুই দফায় ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত টানা পাঁচ কর্মদিবসে সূচক প্রায় ৭৪ পয়েন্ট এবং ২২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ৬ দিনে ৯০ পয়েন্ট হারিয়েছিল সূচকটি। তবে ওই পতন ছিল দুই সপ্তাহ মিলে। 

চলতি দর পতন নিয়ে কয়েকটি শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহীরা জানান, এপ্রিলের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্কারোপ ইস্যুতে কিছুটা দর পতন হলেও তার রেশ এখন নেই। কেউ কেউ বলছেন, দর পতনের পেছনে সাম্প্রতিক গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব থাকতে পারে। 
প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন চীন বাদে বাকি সব দেশের জন্য বাড়তি শুল্কারোপের আগের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছে। ফলে এই ইস্যুতে এখনকার দর পতনের কোনো সংযোগ আছে বলে মনে হয় না। তাঁর মতে, এ মুহূর্তে নতুন করে আশাব্যঞ্জক কোনো খবর নেই, যাতে আকৃষ্ট হয়ে অনেকে নতুন বিনিয়োগ সুযোগ খুঁজবেন। যখন বিনিয়োগ কমে যায়, তখন বিক্রির চাপ বাড়ে এবং পতন হতে থাকলে ভয়েও অনেকে শেয়ার বিক্রি করেন। 
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দর পতনের কবলে পড়েছে সব খাতের শেয়ার। তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ২৬৭টির দর হারিয়েছে, যার ১১৪টির দর কমেছে ৫ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। বিপরীতে ৭৩ কোম্পানির দর বেড়েছে, যার ১৪টির দর ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২৪ শতাংশ বেড়েছে।

পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, বড় বা বেশি কোম্পানির খাতগুলোর মধ্যে বস্ত্র এবং ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে দর পতন হয়েছে তুলনামূলক বেশি। বস্ত্র খাতের ৫৮ কোম্পানির মধ্যে ৫১টি দর হারিয়েছে। গড় দর পতনের হার ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এ ছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের তালিকাভুক্ত ২৩ কোম্পানির মধ্যে ১৭টির দর কমায় গড়ে এ খাতের দর ৩ শতাংশের বেশি কমেছে। অপেক্ষাকৃত ছোট খাতের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি, সেবা ও নির্মাণ, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে বেশি দর পতন হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড খাতের দর পতন সাড়ে ৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
দর পতনের মধ্যে টাকার অঙ্কে শেয়ার কেনাবেচার পরিমাণও ক্রমে কমেছে। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার শেয়ারবাজার ডিএসইতে ৩৩৯ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা গত ২৭ মার্চের পর সর্বনিম্ন।

আরও শেয়ার কিনবেন এসিআইর এমডি
তালিকাভুক্ত এসিআই লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ দৌলা গতকাল ব্লক মার্কেট থেকে নিজ কোম্পানির আরও ১৪ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন। গতকালের বাজারমূল্য ১৯৪ টাকা ৬০ পয়সা হিসেবে তিনি ২৭ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের শেয়ার কিনবেন। এর আগে এসিআইর এমডি দুই দফায় ব্লক মার্কেটের মাধ্যমে ৩১ লাখ শেয়ার কিনেছেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বাইরে কোম্পানির পরিচালক সুস্মিতা আনিসও গত ১৩ এপ্রিল পৌনে ৮ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা। তিনিও নতুন করে শেয়ার কেনার ঘোষণা দেওয়ার আগে গত জানুয়ারিতে ১৫ লাখ ১৫ হাজার এবং কোম্পানির চেয়ারম্যান আনিস উদ দৌলা ১৬ লাখ শেয়ার কিনেছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সপ্তাহজুড়ে দর পতন