ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে দ্রুত চুক্তি সই হবে, আশা ট্রাম্পের
Published: 22nd, February 2025 GMT
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দ্রুতই দেশটির খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে উপনীত হবেন বলে আশা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গতকাল শুক্রবার ওভাল অফিসে খনিজ সম্পদ নিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তির অগ্রগতি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা একটি চুক্তি সই করতে যাচ্ছি, আশা করি যত দ্রুত সম্ভব।’
এ নিয়ে আলাদা করে গতকালই এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল একটি খসড়া চুক্তি নিয়ে কাজ করছে.
ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে একটি শান্তি আলোচনা শুরুর উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। কিন্তু ওই আলোচনা শুরুর আগে ইউক্রেনকে একটি খনিজ চুক্তি করার প্রস্তাব দিয়েছেন ট্রাম্প।
প্রস্তাবে ট্রাম্প যুদ্ধের সময় ওয়াশিংটন কিয়েভকে যে সামরিক সহায়তা দিয়েছে, তার বিনিময়ে এখন ইউক্রেনের কাছ থেকে ৫০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের খনিজ সম্পদের মালিকানা চেয়েছেন।
তবে ট্রাম্পের প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছেন জেলেনস্কি। গত বুধবার তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত যে সামরিক সহায়তা পাঠিয়েছে, তা ট্রাম্প যে পরিমাণ অর্থ ফেরত চাইছেন, তার থেকে অনেক কম। এ ছাড়া ট্রাম্পের প্রস্তাবে সুনির্দিষ্ট করে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি।
জেলেনস্কি প্রস্তাব বাতিল করার পর ট্রাম্প তাঁকে ‘স্বৈরশাসক’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি নিশ্চিত করতে জেলেনস্কিকে দ্রুত সরে যেতে হবে অথবা তিনি তাঁর দেশ হারাতে পারেন।
প্রায় তিন বছর আগে ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। এর জেরে দুই দেশের মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধে ইউক্রেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু দেশটিতে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিও দেশটির অবস্থানে পরিবর্তন এসেছে।
ইউরোপের কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, কিয়েভ হয়তো এমন একটি শান্তিচুক্তিতে যেতে বাধ্য হবে, যে চুক্তি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষে যাবে।
গতকাল ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, পুতিন ও জেলেনস্কিকে একত্রে বসতেই হবে। তিনি বলেন, ‘এর কারণ কি জানেন? আমরা লাখো মানুষের প্রাণহানি বন্ধ করতে চাই। এ কারণে আমি একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি দেখতে চাই এবং আমি একটি চুক্তি করতে চাই। আমার মনে হয় চুক্তিটি করার সুযোগ আমাদের আছে। আমাকে নিশ্চিত করতে হয়েছে যে রাশিয়া এটা করতে চায়।’
একই দিন হোয়াইট হাউসে অন্য একটি অনুষ্ঠানে ট্রাম্প জেলেনস্কির সমালোচনা করে বলেন, ‘আমার পুতিনের সঙ্গে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে এবং ইউক্রেনের সঙ্গে ততটা হয়নি। তাদের হাতে কোনো কার্ড নেই, কিন্তু তারা কঠিন খেলছে।’
আরও পড়ুনজেলেনস্কি ‘স্বৈরশাসক’, ট্রাম্পের এই দাবি কতটা সত্য২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনশান্তি আলোচনায় ‘কার্ড’ রাশিয়ার হাতে: বিবিসিকে ট্রাম্প২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
গৃহকর্মীর অধিকার ও স্বীকৃতির জন্য দৌড় কর্মসূচি
দেশের প্রায় ৪০ লাখের বেশি গৃহকর্মীর অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতির জন্য দৌড়ে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২ হাজারের বেশি মানুষ।
আজ শনিবার রাজধানীর হাতিরঝিলে অক্সফাম ইন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘অক্সফাম রান’-এর মাধ্যমে গৃহশ্রমিকদের জন্য ন্যায্যতা নিশ্চিতের আহ্বান জানান অংশগ্রহণকারীরা। অক্সফামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহযোগিতায়, ‘সমতার লক্ষ্যে, চলো একসঙ্গে’ স্লোগানকে সামনে রেখে গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি ও শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে এ আয়োজন করা হয়। সাড়ে সাত কিলোমিটারের এই দৌড়ে প্রায় চার শতাধিক গৃহকর্মী অংশ নেন। তাঁদের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, দূতাবাসের প্রতিনিধি, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, গণমাধ্যমকর্মীরাও অংশ নেন।
দৌড়ে পুরুষ বিভাগে প্রথম হন হামিদুর রহমান। আমিনুল হাসান দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান লাভ করেছেন আবুল হাসনাত কবির। নারীদের মধ্যে সুইটি আক্তার প্রথম হয়েছেন। তামান্না আফরিন ও তাসলিমা আক্তার যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন।
‘অক্সফাম রান’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। তিনি বলেন, ‘আমরা শহরগুলোতে সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল থাকি আমাদের গৃহকর্মীদের ওপর। কিন্তু তাঁরাই সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার। ঘরে, সমাজে এবং সরকারি পর্যায়ে তাঁদের স্বীকৃতি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। তাঁদের অধিকার ও প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা একটি ন্যায্যতার দেশ গড়তে পারব।’
বিশেষ অতিথি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, ‘গৃহকর্মীদের গুরুত্ব অনুধাবন করে আমরা তাঁদের আনুষ্ঠানিক খাতে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। তাহলে তাঁদের মজুরি, দক্ষতা ও অন্য সুবিধাগুলোর অধিকার স্বীকৃতি পাবে।’
অক্সফাম রানের মাধ্যমে গৃহশ্রমিকদের জন্য অক্সফাম ২০১৫ সালের গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতির সঠিক বাস্তবায়ন, গৃহকর্মীদের জন্য সম্মানজনক কাজের আইএলও কনভেনশন ১৮৯–এর অনুমোদন এবং এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মশক্তি রক্ষার জন্য শক্তিশালী পদক্ষেপ নিশ্চিতের বিষয়গুলো উঠে আসে।
অক্সফাম ইন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর মাহমুদা সুলতানা বলেন, অক্সফাম দীর্ঘদিন ধরে গৃহশ্রমিকের অধিকার নিয়ে কাজ করছে। লক্ষণীয় হলো, তাদের অধিকার রক্ষায় কেবল নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পরিবর্তনই যথেষ্ট নয়, মানসিকতার পরিবর্তন হতে হবে।
২০২২ সালে অক্সফামের এক গবেষণায় উঠে আসে, ৯৩ শতাংশ গৃহশ্রমিক কর্মক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হন, যার মধ্যে ৬৭ শতাংশ মানসিক নির্যাতন, ৬১ শতাংশ মৌখিক এবং ২১ শতাংশ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন।
দেশের গৃহকর্মীদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে ২০২০ সালে সুনীতি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করছে অক্সফাম ইন বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রায় ১৮ হাজার নারী গৃহকর্মীর দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে প্রকল্পটি।