ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন ইলন মাস্ক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এ শীর্ষ ধনীর দাবি, ইউক্রেনের জনগণ দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে ঘৃণা করেন। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা থেকে জেলেনস্কিকে বাদ রাখার অধিকার আছে ট্রাম্পের।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া বন্ধ করতে এবং ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে যখন জেলেনস্কিকে আহ্বান করা হচ্ছে, তখনই এমন মন্তব্য করলেন মাস্ক।

ট্রাম্প সরকারে সংস্কার আনার ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছেন মাস্ক। স্পেসএক্স ও টেসলার প্রধান মাস্ক তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জেলেনস্কির তীব্র সমালোচনা করেছেন।

এক্স পোস্টে জেলেনস্কি সম্পর্কে মাস্ক লিখেছেন, তিনি জানেন সব ইউক্রেনীয় গণমাধ্যমকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার পরও ব্যাপক ভোটে হেরে যাবেন। তাই তিনি নির্বাচন বাতিল করে দিয়েছিলেন। বাস্তবে ইউক্রেনের জনগণ তাঁকে ঘৃণা করেন।

জেলেনস্কির জনসমর্থন অনেক কম বলে দাবি করে আসছেন ট্রাম্প। ইউক্রেনে নির্বাচনের জন্য চাপও দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের এমন অবস্থানকে সমর্থন দিয়েছেন শীর্ষ ধনী মাস্ক।

গতকাল বৃহস্পতিবার কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে (সিপিএসি) মাস্ক শান্ত কণ্ঠে বলেন, ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে বাস্তবসম্মত চিন্তাভাবনা করেন।

মাস্ক বলেন, প্রেসিডেন্টের অনেক সহানুভূতি আছে। তিনি সত্যিই এ নিয়ে ভাবেন।
২০১৯ সালে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন জেলেনস্কি। তবে ২০২২ সালে রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনে সামরিক আইন জারি করার কারণে পরবর্তী নির্বাচনগুলো স্থগিত করা হয়েছে।

ইলন মাস্ক গতকাল আরও দাবি করেন, এক্সে সম্ভাব্য বিভ্রান্তিকর পোস্টের সত্যতা যাচাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি ফিচারের অপব্যবহার করে জেলেনস্কির পক্ষে প্রচার চালানো হচ্ছে। এ সমস্যাটির সমাধান করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

অনেকেই এক্সে ‘কমিউনিটি নোটস’ ফিচারটি ব্যবহার করেন। এর আওতায় ব্যবহারকারীরা ভুয়া তথ্য বা সংবাদের বিষয়ে অবহিত করতে পারেন।

গতকাল এক্স পোস্টে মাস্ক লিখেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, কমিউনিটি নোটস নিয়ে বিভিন্ন সরকার এবং প্রথাগত গণমাধ্যমগুলো খেলছে। এটি ঠিক করার জন্য কাজ করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা পুরোপুরি নিশ্চিত করা দরকার যে জেলেনস্কির প্রতি জনসমর্থনের ব্যাপারে তাঁর নিজের নিয়ন্ত্রিত জরিপটি বিশ্বাসযোগ্য নয়! বাস্তবে ইউক্রেনের জনগণ তাঁকে ঘৃণা করেন। আর এ কারণে তিনি নির্বাচনের আয়োজন করতে রাজি হননি।’

গত সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের আকস্মিক ফোনালাপের পর জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রকে বিপুল পরিমাণে ইউক্রেনীয় প্রাকৃতিক সম্পদে প্রবেশাধিকার দেবে, এমন একটি চুক্তিও খারিজ করে দিয়েছেন জেলেনস্কি। গত তিন বছরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে কোটি কোটি ডলারের মার্কিন সামরিক সহায়তার জন্য এ প্রতিদান চাইছেন ট্রাম্প।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র ইউক র ন য র জন য ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি নিরীক্ষা বিল কি গোপনীয় দলিল, প্রশ্ন টিআইবির

সরকারি নিরীক্ষা বা পাবলিক অডিট বিল-২০২৪–এর খসড়া নিয়ে গোপনীয়তার চর্চায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের জন্য অবিলম্বে বিলটি উন্মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।

সরকারি নিরীক্ষা বিল নিয়ে টিআইবি এক বিবৃতিতে আজ বৃহস্পতিবার এমনটিই জানিয়েছে। তারা বলেছে, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়সহ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান, একটি দাতা সংস্থা এবং বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের মধ্যে আবদ্ধ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সরকারি নিরীক্ষা বিলের খসড়া চূড়ান্ত করা হচ্ছে।

বিষয়টিকে অনভিপ্রেত উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘ প্রত্যাশিত অডিট বিলের খসড়া মতামতের জন্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের সম্পৃক্ততার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, হিসাব নিয়ন্ত্রণ ও নিরীক্ষণ কি শুধু সরকারি ও একটি প্রভাবশালী ঋণদাতা সংস্থার বিষয়? এই বিলটি রাষ্ট্রের জনগণের অর্থসম্পদ ব্যবহারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আইনি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে। ফলে এই বিলের বিষয়ে নাগরিক সমাজ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত গ্রহণের বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। পাবলিক অডিট বিলের খসড়া জনস্বার্থে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের জন্য অবিলম্বে উন্মুক্ত করতে আহ্বান জানাই।’

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ‘মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রককে (সিএজি) বাজেট, নিয়োগসহ সব বিষয়ে সাংবিধানিক স্বাধীন ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করাসহ ২০ দফা সুপারিশ করেছিল টিআইবি।

সেটি উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিএজিকে শক্তিশালী করতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করছি। গবেষণালব্ধ ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আমরা সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেছিলাম। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মাধ্যমে আলোচনার ভিত্তিতে প্রস্তাবিত নিরীক্ষা আইন, কাঠামো ও নিয়োগের বিধিমালা অনুমোদন এবং সিএজিকে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাবের বাইরে আনার ব্যাপারটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি প্রত্যাশা ছিল, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিএজিকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু খসড়া অডিট বিল পর্যালোচনা শুধু সরকারি সংস্থাসমূহ এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার ফলে এমন মনে হওয়া অমূলক নয় যে কর্তৃত্ববাদী সরকারের সময়ের মতো এখনো সিএজিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আমলাতন্ত্রের হাতে করায়ত্ত করে রাখার পাঁয়তারা চলছে।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সিএজি সরকারের বা কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দেশি-বিদেশি আমলাতন্ত্রের অধীন কোনো সংস্থা নয়, এটি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, যার চূড়ান্ত মালিকানা জনগণের। তাই খসড়া আইনটি অবিলম্বে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আগ্রহী অংশীজনের মতামতের সুযোগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময়ের জন্য উন্মুক্ত করার আহ্বান জানাই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপির রাজনীতির মূললক্ষ্য জনগণ ও দেশ: তারেক রহমান
  • সংস্কারের গল্প আমাদের বলার দরকার নেই: আমীর খসরু
  • সংস্কারের গল্প আমাদের বলার দরকার নেই
  • সংস্কারের গল্প আমাদের বলার দরকার নেই, অন্তর্বর্তী সরকারকে আমীর খসরু
  • সংস্কারের গল্প আমাদের বলার দরকার নেই: অন্তর্বর্তী সরকারকে আমীর খসরু
  • ট্রাম্পবিরোধী ভারতীয় বংশোদ্ভূত নীরা ফিরছেন ডেমোক্র্যাট গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে
  • একুশে ফেব্রুয়ারি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস জুগিয়েছে: রিজভী
  • একুশে ফেব্রুয়ারি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে সাহস জুগিয়েছে: রিজভী
  • সরকারি নিরীক্ষা বিল কি গোপনীয় দলিল, প্রশ্ন টিআইবির