ইউক্রেনের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে শান্তি আলোচনার ‘তাস’ রাশিয়ার হাতে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ট্রাম্প বুধবার ফ্লোরিডায় সৌদি-পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এক বিনিয়োগ সম্মেলনে ভাষণ দিয়ে এয়ার ফোর্স ওয়ানে ওয়াশিংটন ডিসিতে ফেরার পথে বিবিসিকে ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার ‘সুবিধাজনক অবস্থার’ কথা জানান।

আরো পড়ুন:

ট্রাম্প অপতথ্যের জগতে রয়েছেন: জেলেনস্কি

যুদ্ধের দায় ইউক্রেনের ঘাড়ে চাপালেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি মনে করি রাশিয়া যুদ্ধের শেষ দেখতে আগ্রহী, আমি সত্যিই মনে করি। আমার মনে হয় তারা কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে, কারণ তারা বিপুল পরিমাণ ভূখণ্ড দখলে নিয়েছে। তাস তাদের হাতে।”

রাশিয়া সত্যিই শান্তি চায়, এমনটা বিশ্বাস করেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, করি।”

এর আগে, বুধবার ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘নির্বাচনবিহীন স্বৈরশাসক’ বলে অভিহিত করেন। ট্রাম্পের এ মন্তব্যের আগে জেলেনস্কি ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘রাশিয়ার অপতথ্যের জগতে’ বাস করছেন।”

জেলেনস্কির পাঁচ বছরের মেয়াদ ২০২৪ সালের মে মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে ইউক্রেন সামরিক আইনের অধীনে রয়েছে এবং নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।

ট্রাম্প দাবি করেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা কম এবং জরিপে তার গ্রহণযোগ্যতা মাত্র ৪ শতাংশ। তবে কিয়েভ ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সোশ্যালজির চলতি মাসে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, ইউক্রেনের ৫৭ শতাংশ নাগরিক জেলেনস্কির ওপর আস্থা রাখছেন।

এদিকে, জেলেনস্কিকে নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান মেনে নিতে পারছেন না ইউরোপীয় নেতারা। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির গণতান্ত্রিক বৈধতা অস্বীকার করা সম্পূর্ণ ভুল ও বিপজ্জনক।’

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমারও জেলেনস্কির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতিমন্ত্রী সচিব লিসা নন্দি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের অবসানে ‘ইউরোপের ভূমিকা’ নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

আহসান মনসুরের বিরুদ্ধে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে মনে করেন ব্রিটিশ এমপিরা

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে মনে করেন ব্রিটিশ এমপি বা সংসদ সদস্যরা। তাঁরা মনে করছেন, আহসান এইচ মনসুর যেহেতু বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা উদ্ধারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেহেতু তাঁর বিরুদ্ধে অপতথ্য দেওয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের কাছে পাঠানো এক ই–মেইলে গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের মেয়ের বিলাসী জীবন সম্পর্কে তথ্য দিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে, তাঁর মেয়ের বিরুদ্ধে কেন তদন্ত করা হচ্ছে না? এক সাংবাদিক এই ই–মেইল পাঠিয়েছেন বলে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের সংবাদে বলা হয়েছে।

আহসান এইচ মনসুর বর্তমানে লন্ডন সফরে রয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তা চাইতে তিনি এই সফর করছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা এই অর্থ যুক্তরাজ্যে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ। গভর্নরের বিশ্বাস, ওই অর্থ দিয়ে যুক্তরাজ্যে সম্পদ কেনা হয়েছে।

দ্য গার্ডিয়ানের সংবাদে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে আহসান মনসুরের যুক্তরাজ্য সফর শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকীর পদত্যাগ নিয়ে সৃষ্ট শোরগোলের কারণে ঢাকা পড়ে গেছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিউলিপ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে মামলা করার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

এখন আহসান মনসুরের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু হয়েছে বলে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যরা মনে করছেন। সম্প্রতি দেশটির ৪৭–দলীয় শক্তিশালী অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি) আহসান মনসুরের বিষয়ে ই–মেইল পেয়েছে। সেদিনই আহসান মনসুরের সঙ্গে তাদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।

ই–মেইলটি পাঠিয়েছেন এক সাংবাদিক। ই–মেইলটির সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল পলিসি ডাইজেস্টের একটি লিংক পাঠানো হয়েছে। সেখানে আহসান মনসুরের মেয়ের বিলাসী জীবন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সেই সাংবাদিকের জিজ্ঞাসা, আহসান মনসুরের মেয়ের বিরুদ্ধে কেন তদন্ত করা হচ্ছে না?

কিন্তু দ্য গার্ডিয়ান সেই ই–মেইল প্রেরণকারীর সাংবাদিক হিসেবে আর কোনো প্রোফাইল খুঁজে পায়নি। যে ছবি ই–মেইলে ব্যবহার করা হয়েছে, তা–ও নকল বলে মনে হয়েছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আহসান মনসুর ও ব্রিটিশ সংসদ সদস্যরা মনে করেন, এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বিরুদ্ধে অপতথ্য ছড়ানোর সমন্বিত কৌশলের অংশ। গভর্নর বিশ্বাস করেন, যাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলার তদন্ত হচ্ছে, সেই ব্যক্তিরাই তাঁর মানহানি করতে এই প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা বিভিন্নভাবে গভর্নরকে লক্ষ্যবস্ত করছে।

আহসান মনসুর আরও জানান, তাঁর কন্যা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক; বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর তেমন সম্পর্ক নেই।

এদিকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি গ্রুপের আরেক সদস্য বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রূপা হককেও একই রকম চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেই চিঠি দিয়েছে ব্রিটিশ জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান প্যালাটাইন কমিউনিকেশন। ই–মেইলে বলা হয়েছে, আহসান মনসুর টিউলিপ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করলে তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধেও একই রকম তদন্ত হওয়া উচিত। যদিও গভর্নর বলেছেন, তিনি টিউলিপ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে কখনো একটি কথাও বলেননি।

এ বিষয়ে প্যালাটাইন কমিউনিকেশনের বক্তব্য হলো, এই চিঠির সত্যাসত্য সম্পর্কে তাদের দাবি নেই। যা বলা হয়েছে তা ধ্রুব সত্য, এ রকম কথা তারা বলছে না। কিন্তু তারা মনে করে, আরও অনেক বিষয়ের মতো বাংলাদেশ সম্পর্কে এই বিষয়টিও রাজনীতিকদের মাথায় রাখা উচিত।

অন্যদিকে পলিসি ডাইজেস্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গভর্নর আহসান মনসুরের মেয়ের বিলাসী জীবন নিয়ে যে প্রতিবেদন লেখা হয়েছে, তার লেখক নাম প্রকাশে রাজি নন। তিনি আরও বলেন, সেই লেখার বিষয়বস্তুর যে যথেষ্ট সত্যতা আছে, সে বিষয়ে তারা আত্মবিশ্বাসী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আহসান মনসুরের বিরুদ্ধে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে মনে করেন ব্রিটিশ এমপিরা