আমি দেশ বিক্রি করে দিতে পারি না: জেলেনস্কি
Published: 19th, February 2025 GMT
ইউক্রেনের লিথিয়াম, টাইটানিয়ামসহ বিরল খনিজ সম্পদের মালিকানা পেতে সম্প্রতি দেশটিকে একটি প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রস্তাব-সংশ্লিষ্ট এক প্রশ্নের জবাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমি ইউক্রেনকে রক্ষা করছি। আমি আমাদের দেশকে বিক্রি করে দিতে পারি না।’
আজ বুধবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রস্তাবটির প্রথম খসড়া নাকচ করে দিয়েছি। ওই প্রস্তাব মেনে নিলে যুক্তরাষ্ট্রকে আমাদের খনিজ সম্পদের প্রায় ৫০ শতাংশের মালিকানা দিতে হবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রস্তাবে (ইউক্রেনের) নিরাপত্তার কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি।’
জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে, ট্রাম্পের এমন এক মন্তব্যের জবাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বর্তমানে আমার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। তাই এখন কেউ আমাকে সরাতে চাইলে তা কার্যকর হবে না।’
সাম্প্রতিক জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে জেলেনস্কি বলেন, নেতা হিসেবে ইউক্রেনের প্রায় ৫৮ শতাংশ মানুষ তাঁর ওপর আস্থা রাখেন।
রাশিয়া ‘প্রচুর অপতথ্য ছড়াচ্ছে’ অভিযোগ করে জেলেনস্কি বলেন, ‘নেতা হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, তিনি এই অপতথ্যের জগতে বাস করছেন।’
ট্রাম্প সম্প্রতি মন্তব্য করেছিলেন, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প অপতথ্যের জগতে রয়েছেন: জেলেনস্কি
সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের বৈঠকের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, বুধবার ইউক্রেনের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে ইউক্রেনের সম্পর্কের ফাটল স্পষ্ট হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, যদি কেউ তাকে ইউক্রেনের নেতা হিসেবে এখনই সরিয়ে দিতে চান, তাহলে সেই চেষ্টা কাজে আসবে না। কারণ তার জনপ্রিয়তার হার অনেক বেশি।
আরো পড়ুন:
যুদ্ধের দায় ইউক্রেনের ঘাড়ে চাপালেন ট্রাম্প
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসানে ‘উচ্চ-স্তরের দল’ গঠনের সিদ্ধান্ত
জেলেনস্কি আরো বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার তৈরি করা অপতথ্যের জগতে বাস করছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট একট জরিপের তথ্য উল্লেখ করে বলেন, নেতা হিসেবে তার প্রতি ইউক্রেনের ৫৮ শতাংশ জনগণের আস্থা রয়েছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেন রাশিয়ার সৃষ্টি করা অনেক অপতথ্যে দেখতে পাচ্ছে। আমি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি যে, তিনি রাশিয়ার সৃষ্টি করা অপতথ্যের তথ্যের জগতে বাস করছেন।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনের নেতার প্রতি জনসমর্থনের হার ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই পরিসংখ্যান প্রত্যাখ্যান করেছেন।
জেলেনস্কি বলেন, এটা অপতথ্য। ইউক্রেনের কাছে ‘প্রমাণ’ আছে যে, ৪ শতাংশ জনসমর্থনের অপতথ্য রাশিয়া ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং এই পরিসংখ্যানগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ইউক্রেনীয় খনিজ সম্পদ উত্তোলন ও ভাগাভাগি করার বিষয়েও কথা বলেন। তিনি জানান, ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রকে লিথিয়াম এবং টাইটানিয়ামসহ ইউক্রেনের ভূগর্ভস্থ বিরল খনিজ পদার্থের মালিকানা দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। কারণ প্রথম খসড়ায় বলা হয়েছিল, ইউক্রেনকে তার ভূগর্ভস্থ খনিজ সম্পদের অন্তত ৫০ শতাংশ মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রকে দিতে হবে। এছাড়া ইউক্রেনের নিরাপত্তার জন্য জেলেনস্কি যে সুরক্ষা গ্যারান্টি চেয়েছিলেন তার কোনো কিছুই সেই প্রস্তাবে ছিল না বলে জানান তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, আমি ইউক্রেনকে রক্ষা করছি। আমি ইউক্রেনকে বিক্রি করতে পারি না। আমি আমাদের দেশ বিক্রি করতে পারি না।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরো জানান, তিনি চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূত কিথ কেলগ কিয়েভের পরিস্থিতি স্বচক্ষে ঘুরে দেখুন।
জেলেনস্কি বলেন, আমার জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, তিনি (কেলগ) নিজে কিয়েভের রাস্তায় ও অন্যান্য শহরে হাঁটুন। এতে রাশিয়ার সৃষ্টি করা বিভ্রান্তিকর তথ্যের পরিবর্তে ইউক্রেনের পরিস্থিতির বাস্তব প্রমাণ পাবেন।
তিনি জানান, কেলগ আগে বলেছিলেন যে রাজধানী কিয়েভের ২০-৩০ শতাংশ দখল হয়ে গেছে, সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি চাই তিনি (কেলগ) নিজেই সবকিছু দেখুক। তারপর লোকেদের সঙ্গে কথা বলুক যে, তারা তাদের প্রেসিডেন্টকে বিশ্বাস করে কিনা, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বিশ্বাস করে কিনা।
ঢাকা/ফিরোজ