পার্কিং জটিলতা: ভোমরা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
Published: 18th, February 2025 GMT
ভারতের ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দরের প্রধান সড়ক অবরোধ করায় স্থবির হয়ে পড়েছে সীমান্ত বাণিজ্য। পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট মহাকুমার ঘোজাডাঙ্গা এলাকায় পার্কিং মালিকেরা বৈষম্যের শিকার দাবি করে মঙ্গলবার সকাল থেকে আন্দোলনে নেমেছেন।
এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর ভোমরা-ঘোজাডাঙ্গা বন্দর। সীমান্তের এই বন্দর হয়ে প্রতিদিন অন্তত ৩০০ থেকে ৪০০ ট্রাক পণ্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে যায়। কিন্তু ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে এই সীমান্তে কোনো সরকারি পার্কিং নেই। ফলে বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত পণ্য বোঝাই ট্রাকগুলো মূলত বেসরকারি পার্কিং ব্যবহার করে। এভাবেই একে একে ৮৪টা বেসরকারি পার্কিং গড়ে উঠেছে সীমান্ত এলাকায়।
এসব পার্কিংয়ের মালিকরা কেউ জমি কিনে, কেউ জমি লিজ নিয়ে, কেউ আবার নিজের পারিবারিক জমিতেই পার্কিং ব্যবসা করছেন। তাদের অভিযোগ- মাহাদিপুর-সোনামসজিদ সীমান্তে যেখানে পার্কিংয়ের জন্য প্রতিদিন ট্রাকপিছু গুনতে হয় অন্তত ৮০০ রুপি, সেখানে ঘোজাডাঙ্গা সীমান্তের ক্ষেত্রে ট্রাকের পার্কিং ফি মাত্র ৪০০ রুপি। তারপরেও সরকারি ‘সুবিধা’ পোর্টালে তিন বছরের বেশি সময় আটকে রয়েছে পার্কিং মালিকদের কয়েক লাখ রুপি।
২০২২ সালে রাজ্য সরকারের সীমান্ত বাণিজ্যে ব্যবহৃত সরকারি পোর্টাল ‘সুবিধা’তে অন্যান্য সীমান্তের মতোই এই সীমান্ত বন্দরের পার্কিং ওনার’স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন তাদের সদস্যদের নাম নথিভুক্ত করে। সংগঠনটির দাবি, সরকারি তরফে সেই সময় বলা হয়েছিল ট্রাক মালিকদের থেকে পার্কিং চার্জ বাবদ টাকা সরকারের তরফ থেকেই কেটে নেয়া হবে। নির্ধারিত সময় পর সেই টাকা নির্দিষ্ট পার্কিং মালিকের অ্যাকাউন্টে চলে আসবে। সংগঠনটির অভিযোগ- প্রায় তিন বছর অতিক্রম করলেও পার্কিং মালিকদের ৪১ লাখ রুপি আজও ফেরত আসেনি তাদের অ্যাকাউন্টে।
ঘোজাডাঙ্গায় ২৯৫ বিঘা জমির ওপর মোট ৮৪টি বেসরকারি পার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে। যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছে অন্তত ৪০০০ শ্রমিক পরিবার। দীর্ঘসময় ধরে সরকারি দপ্তরে এসব পার্কিং মালিকদের টাকা আটকে থাকায় স্বাভাবিকভাবেই বিপাকে পড়েছে সেখানে কর্মরত শ্রমিকেরা। টাকা ফেরত চেয়ে ইতিমধ্যেই তারা জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, এমনকি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পর্যন্ত যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই না হওয়ায় অবশেষে সীমান্ত বন্দরের প্রধান সড়ক অবরোধের মতো পদক্ষেপে হাঁটলেন তারা।
মঙ্গলবার সকালে দেখা যায়, সংগঠনটির দুই শতাধিক সদস্য ও কর্মীরা সীমান্ত বন্দরের চেকপোস্টের কাছে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এমন ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে এসে বসিরহাট থানার পুলিশ। কিন্তু অবরোধ তোলা যায়নি।
ঘোজাডাঙ্গা পার্কিং ওনার’স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিত্যানন্দ মন্ডল, সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও মিহির ঘোষ জানান, রাজ্যের বিভিন্ন সীমান্ত বন্দরে সরকারি সীমান্তে পার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে। ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত বন্দরের সরকারি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় গত ২৫ বছর ধরে বেসরকারি পার্কিং ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। কিন্তু অন্যান্য সীমান্ত বন্দরের তুলনায় আর্থিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে এই সীমান্ত বন্দরের পার্কিং মালিকরা। অন্যদিকে ন্যায্য পাওনা পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে। এতে সীমান্ত এলাকায় পার্কিংয়ের নজরদারি চালাতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। একই সঙ্গে এসব পার্কিংয়ে কর্মরত প্রায় চার হাজার মানুষ তারাও ঠিকমতো মাসিক বেতন পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় আজ বাধ্য হয়েই রাস্তার নেমেছেন তারা। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারিভাবে বিষয়টির সুরাহা না করা হবে ততক্ষণ আন্দোলন চলবে বলেই হুমকি তাদের।
কলকাতা/সুচরিতা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ ব সরক র অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে বর্ষবরণে শিশু-কিশোরদের ঘুড়ি উৎসব
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড়ে শিশু-কিশোরদের নিয়ে ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে সদর উপজেলার জগদল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই উৎসবের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ষড়ঋতু।
উৎসবে প্রায় ২০০ শিশু-কিশোর অংশ নেয়। রং-বেরঙের ঘুড়ি ও নাটাই হাতে নিয়ে জগদল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আসেন তারা। প্রজাপতি, চিল, ঈগল ও মাছ আকৃতির ঘুড়ি আকাশে উড়ায় তারা। যার ঘুড়ি বেশি সময় আকাশে থেকেছে তাকে দেওয়া হয় পুরষ্কার। উৎসবকে আরো আনন্দময় করে তুলতে আয়োজন করা হয়েছিল লোকজ সঙ্গীতের।
ঘুড়ি উৎসব ছাড়াও ষড়ঋতু সংগঠনটি বিভিন্ন গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করেছিল। এসব খেলা দেখতে ভিড় করেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ।
আরো পড়ুন:
ডিআরইউতে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত
বৈশাখে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস
ষড়ঋতু সংগঠনটির সভাপতি রহিম আব্দুর রহিম বলেন, “আমাদের শৈশব কেটেছে ঘুড়ি উড়িয়ে। বারো মাস আমরা ঘুড়ি উড়াতাম। এখন শিশু-কিশোররা মোবাইলে আসক্ত। তাদের মধ্যে ঘুড়ি উড়ানোর আনন্দ ছড়িয়ে দিতেই আমাদের এই আয়োজন। শিশু-কিশোররা দারুন উপভোগ করেছে এই ঘুড়ি উৎসব।”
তিনি আরো বলেন, “ঘুড়ি উৎসব উদযাপন আবহমান গ্রামীণ বাংলার একটি ঐহিত্য। এ উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে আমরা নিজেরাও শৈশবে ফিরে গেছি। ছোট বেলার কথা মনে পড়েছে, যখন এক টাকায় একটি রঙিন ঘুড়ি কিনতাম এবং একজন আরেকজনের ঘুড়ি কেটে দিতাম। এখন এই নীল আকাশে বেগুনি, নীল, সাদা রঙের ঘুড়ি উড়তে দেখে ভালোই লেগেছে।”
এদিকে, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন লাঠি ও হা-ডু-ডুসহ গ্রামীণ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ