রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে যেকোনো ধরনের আলোচনায় রাজি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে তাঁর শর্ত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ ইউক্রেনকে পরিত্যাগ করবে না, এমন বোঝাপড়া থাকতে হবে। যুক্তরাজ্যের আইটিভিকে গতকাল রোববার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি এ কথা বলেন।

জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি রুশ আগ্রাসন বন্ধ করার নিশ্চয়তা থাকবে। এর অর্থ তিনি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চান।

জেলেনস্কি বলেন, ‘সংঘর্ষ থামিয়ে দিলে তা বারবার আগ্রাসনের রূপে ফিরে আসবে। তাহলে কে পুরস্কার জিতবে এবং ইতিহাসে বিজয়ী হিসেবে নাম লেখাবে? কেউ না। এটা সবার জন্যই একটা চূড়ান্ত পরাজয় হবে। আমাদের জন্য এটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ট্রাম্পের জন্যও এটা গুরুত্বপূর্ণ।

টানা তিন বছর ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধের খুব দ্রুতই অবসান ঘটবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে এরই মধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। গত রোববার নিউইয়র্ক পোস্ট–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের শুরুর দিকের পর এই প্রথম মার্কিন ও রুশ দুই প্রেসিডেন্ট শুক্রবার সরাসরি টেলিফোনে কথা বলেছেন। তবে এ নিয়ে রুশ কর্তৃপক্ষ অনেকটাই চুপচাপ।

ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ বলেছেন, মার্কিন কূটনীতিকেরা এ সপ্তাহে ইউরোপে যাচ্ছেন। যুদ্ধ কীভাবে শেষ করা যায়, তার বিস্তারিত আলোচনা করবেন। তাঁরা উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনতে কাজ শুরু করবেন।

রুশ ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল গালুজিন বলেন, ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার জন্য তাঁরা ভালো কোনো প্রস্তাব এখনো পাননি। রাশিয়ার বৈধ স্বার্থ বিবেচনা করে এমন বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে আলোচনার বিষয় নির্ধারণ গুরুত্বপূর্ণ। এতে সংকটের মূল কারণগুলো বের করে তা বাস্তব উপায়ে সমাধানের প্রস্তুতি নেওয়া যাবে।

এদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে গতকাল ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া সুমি এলাকায় কয়েকটি ভবনে হামলা হয়েছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা ৮১টি ড্রোনের মধ্যে ৬১টি ভূপাতিত করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মাদ্রাসা থেকে শিক্ষকের সাইকেল নিয়ে বাড়ি যাওয়ায় শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির এক শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার বৈদাশীরহাট নুরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। আহত কিশোর শিক্ষার্থীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

মারধরের শিকার ইয়াসিন আলী (১৫) উপজেলার সংকৈর গ্রামের বটতলী বাজার এলাকার সামিউল ইসলামের ছেলে। তাঁর বাঁ চোখ, নাক ও ঠোঁটে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

ইয়াসিনের বাবা সামিউল ইসলাম বলেন, গত রোববার বিকেলে তাঁর ছেলে মাদ্রাসা থেকে একটি সাইকেল নিয়ে বাড়িতে আসে। পরে তিনি সাইকেলটি মাদ্রাসায় পৌঁছে দেন। গতকাল সন্ধ্যায় ইয়াসিন মাদ্রাসায় যায়। তখন শিক্ষক শাহ আলম তাকে বেধড়ক মারধর করেন। ছেলেটার চোখ, মুখ, নাক, কান ফেটে রক্ত পড়েছে; হাত-পায়েও আঘাত করেছে। খবর পেয়ে ছেলেকে মাদ্রাসা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তিনি।

সামিউল ইসলাম আরও বলেন, এভাবে চোরকেও কেউ পেটায় না। ছেলে সুস্থ হলে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

চিরিরবন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আবরার লাবিব বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর চোখে গুরুতর আঘাত আছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের চিহ্ন আছে। তবে চোখের আঘাতটি গুরুতর হওয়ায় আমরা রেফার্ড করেছি দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক শাহ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মাদ্রাসার প্রধান মো. শাহিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আমার সাইকেল নিয়ে বাড়ি গিয়েছিল। পরে আামি সাইকেল খুঁজতে গিয়ে দেখি, সাইকেল নেই। ভ্যানে করে আমার কাজে চলে গেছি। পরে শুনি, আমাদের মাদ্রাসার শিক্ষক শাহ আলম ওই ছেলেকে শাসন করেছে। শাসন করতে গিয়ে বেজায়গায় লেগেছে। শিশুটি হাসপাতালে আছে। আমি খোঁজ নিয়েছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ