রাজধানীর গুলশান কমার্স কলেজের ছাত্র ফাহিম হোসেন হত্যাচেষ্টা মামলায় পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোল‍্যা নজরুল ইসলামকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো.

ছানাউল্লাহ আজ রোববার এ আদেশ দেন। মোল‍্যা নজরুল রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে সংযুক্ত।

মোল্যা নজরুল ইসলামকে আজ বিকেলে আদালতে হাজির করে ফাহিম হোসেন হত্যাচেষ্টা মামলায় ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে তাঁর জামিনের আবেদন করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, গত ২২ জুলাই গুলশান এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়া কলেজছাত্র ফাহিম গুলিবিদ্ধ হয়। এ মামলায় মোল্যা নজরুলের নাম এজাহারে রয়েছে। ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

তবে মোল্যা নজরুলের আইনজীবী ইয়াসিন আরাফাত আদালতের কাছে লিখিতভাবে জানান, রাজনৈতিক বিবেচনায় মোল্যা নজরুলকে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত মোল্যা নজরুলকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

গতকাল শনিবার রাজশাহী জেলা পুলিশের সহায়তায় সারদার পুলিশ একাডেমি থেকে মোল্যা নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) দায়িত্ব পালনকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্যদের ধরে আলোচিত হয়েছিলেন মোল্যা নজরুল ইসলাম। পরে ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর তিনি ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে কয়েক মাস গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার ছিলেন। সর্বশেষ তিনি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) কর্মরত ছিলেন।

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মোল্যা নজরুল ইসলামকে সিআইডিতে বদলি করা হয়েছিল। পরে তাঁকে রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমিতে সংযুক্ত করা হয়। তখন থেকে সেখানে ছিলেন তিনি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নজর ল ইসল ম নজর ল র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ, মডেল মেঘনা কারাগারে

বিশেষ ক্ষমতা আইনে মডেল মেঘনা আলমকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।

পিপি ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন,  বিশেষ ক্ষমতা আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, সেক্ষেত্রে ক্ষতিকর কাজ থেকে তাঁকে নিবৃত্ত রাখার জন্য আটক করতে পারেন। মডেল মেঘনা আলম ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত। যে কারণে তাঁকে গতকাল রাতে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। আদালত তাঁকে ৩০ দিনের আটক রাখার আদেশ দেন।

ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাযহারুল ইসলাম গতকাল রাতে  প্রথম আলোকে বলেন, মডেল মেঘনা আলমকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করে তাঁদের হেফাজতে রেখেছে। তবে কী কারণে মডেল মেঘনা আলমকে আটক করা হয়েছে, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য জানাননি ওসি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত বুধবার রাতে মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করা হয়। মডেল মেঘনা আলম তখন ফেসবুকে লাইভ করছিলেন। তিনি দাবি করছিলেন, তিনি নিরপরাধ।

পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক রাখার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী, ক্ষতিকর কাজ থেকে নিবৃত্ত রাখার জন্য সরকার যেকোনো ব্যক্তিকে আটক রাখার আদেশ দিতে পারবেন। আবার এই আইনের ৩(২) ধারা অনুযায়ী, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যদি সন্তুষ্ট হন এই আইনের নির্দিষ্ট ধারার ক্ষতিকর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত তাহলে ওই ব্যক্তিকে আটক রাখার আদেশ দেবেন।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের যেসব ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকে আটক আদেশ দেওয়া যায়, সেগুলো হচ্ছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বা প্রতিরক্ষার ক্ষতি করা, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সংরক্ষণের ক্ষতি করা, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বা জননিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার ক্ষতি করা, বিভিন্ন সম্প্রদায় , শ্রেণি বা গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণাবোধ বা উত্তেজনা সৃষ্টি করা, আইনের শাসন বা আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা বা উৎসাহ প্রদান করা বা উত্তেজিত করা।

ক্ষতিকর আরও কাজ হচ্ছে জনসাধারণের জন্য অত্যাবশ্যক সেবা বা অত্যাবশ্যক দ্রব্যাদি সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করা, জনসাধারণ বা কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি বা আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বা আর্থিক ক্ষতি করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মডেল মেঘলা আলমকে ‘নিরাপত্তা হেফাজতে’ রাখার কারণ হিসেবে যা বলল পুলিশ
  • বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ, মডেল মেঘনা কারাগারে