বগুড়ায় জাসদের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর দখলের চেষ্টা, মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা বৈষম্যবিরোধীদের
Published: 8th, February 2025 GMT
বগুড়া শহরের সাতমাথায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর জায়গা দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শহরের একটি পরিবারের বিরুদ্ধে। আজ শনিবার সকালে পরিবারটি জমির মালিকানা দাবি করে সেখানে ডিজিটাল প্যানা টানিয়ে দেয়।
ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর বিকেলে সেখানে সমাবেশ করে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে ডিজিটাল প্যানা টানিয়ে দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় গুঁড়িয়ে দেওয়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের জায়গায় গণশৌচাগার নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে সাতমাথায় জেলা জাসদ, জেলা আওয়ামী লীগ, সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়ন, টাউন ক্লাব ছাড়াও বেশ কিছু কার্যালয় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাতমাথায় জেলা জাসদের কার্যালয় থাকা জমিটি খাস খতিয়ানভুক্ত। সরকারি জমিতে ইজারা নিয়ে রাজনৈতিক কার্যালয় করা হয়। পরে এ সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে বিভিন্ন পক্ষ আদালতে মামলাও করে। ওই জায়গায় জেলা জাসদের কার্যালয় ছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে বুলডোজার দিয়ে সেই কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। দুই দিনের মাথায় আজ সকালে জায়গাটি ব্যক্তিমালিকানাধীন দাবি করে সেখানে ডিজিটাল প্যানা টানিয়ে দেয় শহরের জ্বলেশ্বরীতলা এলাকার একটি পরিবার। পরে বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে সেই প্যানা খুলে মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে আরেকটি প্যানা ঝুলিয়ে দেন।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা সেখানে সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তব্য দেন চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল সানি। তিনি জাসদের কার্যালয়ের জায়গায় শহীদ আবু সাঈদের নামে মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে বলেন, সাতমাথায় সরকারি জায়গা এত দিন আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা দখলে রেখেছিল। বগুড়ায় আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের কোনো স্থান হবে না। এ জায়গায় শহীদদের স্মরণে মসজিদ নির্মাণ হবে। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা এখনো ঘরে ফেরেনি। বগুড়ায় কোনো ছাত্র-জনতার ওপর আঘাত এলে এখানে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর একটিও থাকবে না। আওয়ামী লীগের শিকড় উপড়ে ফেলা হবে।
জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম দাবি করেছেন, বুলডোজার দিয়ে কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর আজ জায়গার মালিকানা দাবি করে অবৈধভাবে জবর-দখলের চেষ্টা করে সুযোগসন্ধানী কিছু ব্যক্তি। প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের এ সরকারি সম্পত্তি এত দিন জাসদ আগলে রেখেছিল। এখন সম্পত্তি গ্রাস করতে নানা চক্রান্ত চলছে। তাঁরা এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মালিকানা দাবি করা পরিবারের পক্ষে শেখ তৌসিফুর রহমান বলেন, সম্পত্তির মালিকানার পক্ষে তাঁদের কাছে যাবতীয় নথি আছে। এত দিন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জাসদ জায়গাটি দখলে রেখেছিল। ছাত্র-জনতা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর তাঁরা সেটি দখলে নেন। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, সাতমাথায় সরকারি জায়গাতেই এত দিন জাসদের কার্যালয় ছিল। সরকারি মালিকানার যাবতীয় নথি ভূমি কার্যালয়ে আছে।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা প্রথম আলোকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ভবন ভেঙে যে জায়গা খালি করেছে, তার মালিকানা দাবি করে কতিপয় ব্যক্তির দখলের খবর পেয়ে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মালিকানা সরকার কিংবা কোনো ব্যক্তির, যা–ই হোক, আপাতত ওই জায়গা কাউকে দখল করতে দেওয়া হবে না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত র জনত পর ব র এত দ ন দখল র সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণালঙ্কার লুট, চিৎকার করায় গুলি
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রথমে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি করে স্বর্ণালঙ্কার লুটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মোশারফ হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিয়াবাজারস্থ প্রীতি জুয়েলার্সে এ ঘটনা ঘটে। জনতা সন্দেহভাজন এক ডাকাতকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।
মসজিদ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করে ৫-৭ জনের ডাকাত দল ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে পিস্তল নিয়ে প্রীতি জুয়েলার্সে প্রবেশ করে সবাইকে জিম্মী করে স্বর্ণালঙ্কার লুট করে। এ সময় পাশের দোকানের মোশারফ হোসেন ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করেন। তখন তাকে গুলি করে ডাকাতরা।
প্রীত জুয়েলার্সের মালিক রবীন্দ্র দত্ত বলেন, ‘ভাতিজা পলাশ দত্ত দোকানে ছিল। ডাকাতরা ককটেল বিস্ফোরণ ও পিস্তল ঠেকিয়ে আনুমানিক ৩৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মিয়াবাজার স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় জনতা এক ডাকাতকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অন্য ডাকাতদের আটক করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি নোহা মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে।’