গ্রাহকদের হাতে উচ্চ গুণগত মানের পণ্য তুলে দেওয়ার পাশাপাশি আরো উন্নত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে বদ্ধপরিকর দেশের নাম্বার ওয়ান এয়ার কন্ডিশনার ব্র্যান্ড ওয়ালটন। 

এরই ধারাবাহিকতায় পণ্যের মানের শ্রেষ্ঠত্বের আত্মবিশ্বাসে ওয়ালটনের নির্দিষ্ট মডেলের ইনভার্টার এসির পিসিবিতে ৫ বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটনই ইনভার্টার এসির পিসিবিতে এত দীর্ঘমেয়াদি ওয়ারেন্টি দিচ্ছে। সেইসঙ্গে থাকছে ১ বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টিসহ ইনভার্টার এসির কম্প্রেসারে ১০ বছর পর্যন্ত ওয়ারেন্টি, ৩ বছরের স্পেয়ার পার্টস ওয়ারেন্টি, ১ বছরের ফ্রি সার্ভিস এবং ফ্রি ইনস্টলেশন সুবিধা। ক্রেতারা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে ওয়ালটনের ইনভার্টার এসি ক্রয়ের ক্ষেত্রে এসব বিক্রয়োত্তর সুবিধা পাচ্ছেন।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) সকালে রাজধানীতে ওয়ালটন করপোরেট অফিসে আয়োজিত ডিক্লারেশন প্রোগ্রামে এসির বিক্রয়োত্তর সেবায় এসব সুবিধা ঘোষণা করে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন প্লাজার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ রায়হান, ওয়ালটন হাই-টেকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার ও ইউসুফ আলী, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মফিজুর রহমান, ওয়ালটন এসির চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) মো.

তানভীর রহমান, ডেপুটি সিবিও সুদ্বীপ বিশ্বাস, ওয়ালটনের চিফ সার্ভিস অফিসার মো. নিয়ামুল হক, ওয়ালটনের ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের হেড অব সেলস ফিরোজ আলম এবং ডেপুটি চিফ মার্কেটিং অফিসার জোহেব আহমেদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করা হয় ‘এসি এক্সচেঞ্জ অফার’। এর আওতায় গ্রাহকরা আবারো যেকোনো ব্র্যান্ডের পুরাতন এসির বদলে ওয়ালটনের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচার-সমৃদ্ধ নতুন মডেলের এসি কেনার সুযোগ পাচ্ছেন। পুরনো এসি জমা দিলে গ্রাহক তার পছন্দকৃত নতুন ওয়ালটন এসির মূল্য থেকে ২৫ শতাংশ ছাড় পাবেন।    

ওয়ালটন এসির সিবিও মো. তানভীর রহমান জানিয়েছেন, এসির গুণগত মান আরো উন্নত করার পাশাপাশি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচার সংযোজনে প্রতিনিয়ত কাজ করছে ওয়ালটনের রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন টিমের প্রকৌশলীরা। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ওয়ালটন এসির মান হয়েছে অনেক উন্নত। মানের শ্রেষ্ঠত্বের আত্মবিশ্বাসেই নির্দিষ্ট মডেলের ইনভার্টার এসির পিসিবি একমাত্র ওয়ালটনই ৫ বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধা ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি, আসন্ন গরমে পুরাতন এসির গ্রাহকদের জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে ওয়ালটনের এসি এক্সচেঞ্জ অফার। এর আওতায় গ্রাহকরা সহজেই ঘরের পুরাতন এসি বদলে সাশ্রয়ী মূল্যে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচার-সমৃদ্ধ ওয়ালটনের নতুন এসি কিনতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ওয়ালটনের প্রতিটি এসি আন্তর্জাতিক মানের টেস্টিং ল্যাব নাসদাত-ইউটিএস থেকে মান নিয়ন্ত্রণ সনদ অর্জনের পর বাজারজাত করা হয়। আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় সারা দেশে ৮২টি সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে দেশব্যাপী ওয়ালটন এসির গ্রাহকদের দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া হচ্ছে। অত্যন্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা প্রতি ১০০ দিন পর পর এসির গ্রাহকদের দেওয়া হচ্ছে ফ্রি ক্লিনিং সার্ভিস। 

ঢাকা/একরাম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র হকদ র ন এস র এস র গ বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গিয়ে ‘আমরা জমিদার’ বলা সেই কর্মকর্তার পদোন্নতির আবেদন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন ২০০৬ সালের জুলাইয়ে। তখন পদ ছিল নিম্নমান সহকারী, অর্থাৎ তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। এরপর পদোন্নতি পেয়ে ২০২২ সালে হন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা। এখন সহকারী রেজিস্ট্রার পদে পদোন্নতি পেতে আবেদন করেছেন তিনি।

পদোন্নতির জন্য আবেদন করা ওই ব্যক্তির নাম সিরাজুল ইসলাম। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন তিনি। সিরাজুল ইসলাম চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী-বায়েজিদ আংশিক) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ছিলেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর তাঁর মনোনয়ন বাতিল করে জামায়াত।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সিরাজুল ইসলাম হাটহাজারী উপজেলার জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার শুরা সদস্য। তিনি ১৯৯৪ সালে ডিপ্লোমা, ১৯৯৬ সালে স্নাতক (বিএ) আর ২০১৭ সালে স্নাতকোত্তর (এমএ) পাস করেন। তবে তিনি নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম নামে পরিচয় দিতেন। দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচির প্রচারপত্রেও তিনি এ নাম লিখতেন। আগামী বৃহস্পতিবার তাঁর পদোন্নতির সাক্ষাৎকার হওয়ার কথা রয়েছে। ওই সাক্ষাৎকারের পর তিনি সেকশন অফিসার (নবম গ্রেড) পদ থেকে সহকারী রেজিস্ট্রার (ষষ্ঠ গ্রেড) পদে পদোন্নতি পেতে পারেন। তবে এ পদোন্নতির বিষয়টি সিন্ডিকেট সভায় চূড়ান্ত হবে।

অবশ্য শুধু সিরাজুল ইসলাম নয়। তাঁর মতো আরও অন্তত ৫০ জন পদোন্নতির সাক্ষাৎকারে ডাক পেয়েছেন। ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পদোন্নতিতে বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার বলে অভিযোগ তাঁদের। এসব পদের মধ্যে রয়েছে নিম্নমান সহকারী থেকে উচ্চমান সহাকরী, উচ্চমান সহকারী থেকে সেকশন অফিসার ও সহকারী রেজিস্ট্রার থেকে ডেপুটি রেজিস্ট্রার। যদিও সিরাজুল ইসলাম ২০১০, ২০১৩ ও ২০২২ সালে মোট তিনবার পদোন্নতি পেয়েছেন।

এর আগে চলতি বছরের ৩০ ও ৩১ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় এলাকাবাসীর সংঘর্ষ হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য, তৎকালীন প্রক্টরসহ দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। এ সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের একটি অংশের মতবিনিময় সভা হয়। এ সভায় সিরাজুল ইসলামের দেওয়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক। আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা আমরা মেনে নেব না।’

সিরাজুল ইসলামের এ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হন। ওই দিন রাতেই গোলচত্বর, ছাত্রদের আবাসিক এ এফ রহমান হল ও শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের সামনে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ প্রতিক্রিয়ার পর তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করে জামায়াতে ইসলামী। পাশাপাশি তাঁকে উপজেলা আমিরের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। প্রথম আলোতে সংবাদ প্রকাশের সূত্র ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও তাঁকে শোকজ করে।

নথিপত্রে দেখা যায়, চলতি বছর ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৬৪তম সিন্ডিকেট সভায় বৈষম্যর শিকার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তালিকা যাচাই-বাছাই করতে কমিটি হয়। এ কমিটি ৫ নভেম্বর উপাচার্যের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সভায় কে কে পদোন্নতি পেতে পারেন, তা চূড়ান্ত করে। মূলত তাঁদের পদোন্নতির সাক্ষাৎকারে ডাকা হয়েছে। আজ রোববার ও আগামীকাল সোমবার এ সাক্ষাৎকার হওয়ার কথা ছিল। তবে সাক্ষাৎকারের তারিখ পিছিয়ে বুধবার ও বৃহস্পতিবার করা হয়।

জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি পদোন্নতিতে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। পাঁচবার সাক্ষাৎকার দিয়ে ষষ্ঠবারে তিনি পদোন্নতি পেয়েছিলেন। এ কারণে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী পদোন্নতির আবেদন করেছেন। নিয়ম মেনেই তিনি সাক্ষাৎকার দেবেন। তিনি সংঘর্ষের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শোকজের জবাব দিয়েছেন। তাঁর দল থেকেও ওই ঘটনার পর তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন‘আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর হস্তক্ষেপ মেনে নেব না,’ বললেন জামায়াত নেতা০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫যা বলছে প্রশাসন

পদোন্নতির নথিতে দেখা যায়, সেকশন অফিসার থেকে সহকারী রেজিস্ট্রারে পদোন্নতিতে সিরাজুল ইসলামসহ চারজনের নাম রয়েছে। তাঁদের সাক্ষাৎকার নেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, সহ-উপাচার্য অধ্যাপক (একাডেমিক) মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী ও আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মু. জাফর উল্লাহ তালুকদার।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংঘর্ষের ঘটনায় সিরাজুল ইসলামের থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। তিনি সে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। পদোন্নতির সাক্ষাৎকারে ডাকা মানেই পদোন্নতি দেওয়া নয়। পদোন্নতির বিষয়ে কোনো তদবিরও নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কারও তদবিরের তোয়াক্কা করে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ