এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি এবং আলুর দাম কিছুটা কমেছে। তবে আগের মতোই চড়া রয়েছে চালের দাম। আর পেঁয়াজের পাইকারি দাম ২-৩ টাকা বাড়লেও খুচরা বাজারে দাম বাড়েনি। সবজির দামে স্বস্তিতে রয়েছেন ক্রেতারা।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও তালতলা, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিক্রেতারা জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমতির দিকে। এক কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২০০-২১০ টাকা। এরপর সাত-আট দিন আগে কেজিতে ১০ টাকা করে কমেছিল দাম। আর গতকাল তা আরও ১০ টাকা কমে ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ব্রয়লার, অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির কেজিতে দাম কমেছে ২০ টাকা।

অন্যদিকে, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি সোনালির দাম ছিল ৩০০-৩৩০ টাকা। গতকাল এই প্রজাতির মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৮০-৩১০ টাকা দরে। সোনালি মুরগির দামও কেজিতে ২০ টাকা করে কমেছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। বাজারভেদে এক ডজন ডিমের দাম রাখা হয় ১২৫-১৩০ টাকা। পাড়া-মহল্লার দোকানে অবশ্য আরও ৫-১০ টাকা বেশি দাম রাখা হয়।

বাজারে এখন মূলত নতুন দেশি পেঁয়াজই বিক্রি হচ্ছে। হাতে গোনা কিছু দোকানে আমদানি করা পেঁয়াজ পাওয়া যায়। আর সরবরাহ বেশি থাকায় পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক কম। খুচরা পর্যায়ে গতকাল এক কেজি পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহেও একই ছিল। কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত দুই দিনে পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম দুই-তিন টাকা করে বেড়েছে। যদিও এর প্রভাব এখনো খুচরায় দেখা যায়নি।

অন্যান্য মসলা পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি রসুন ২৩০-২৪০ টাকা, আমদানি করা আদা ২৩০-২৪০ টাকা ও দেশি আদা ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও লবঙ্গ, দারচিনি, গোল মরিচের দাম অল্প বাড়লেও, এলাচের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

বাজারে আলুর দাম এখন বেশ কম। গতকাল বাজারভেদে এক কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ২০-২৫ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৫-৩০ টাকা। অর্থাৎ, কেজিতে পাঁচ টাকা দাম কমেছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম কমে প্রায় অর্ধেক হয়েছে। গত বছরের তুলনায়ও আলুর দাম এখন কম।

টিসিবির হিসাবে, গত বছরের এই সময়ে এক কেজি আলুর দাম ছিল ৪০-৫০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ অনেক বেড়েছে। এ কারণে আলুর দামও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।

মাসখানেক আগে বাজারে চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে আট টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল। পরে সরকার চালের শুল্ক কমায় ও আমদানি করার অনুমতি দেয়। তবে এসব উদ্যোগেও চালের দাম কমেনি।

বিক্রেতারা জানান, ধানের দাম বাড়ার কারণে চালকলমালিকেরা চালের দাম বাড়িয়েছেন। গতকাল ঢাকার তিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজি মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চাল ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি মোটা চাল ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা ও মাঝারি ধরনের ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ চাল ৬০-৬৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সবজির বাজার এখন ভোক্তাদের স্বস্তির জায়গা। শীত মৌসুম থাকায় বাজারে সবজির সরবরাহ ভালো; দামও কম। অবশ্য তিন-চার সপ্তাহ ধরেই বাজারে কম দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। শীতের সবজির মধ্যে বর্তমানে টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, শালগম, মুলা প্রভৃতি পণ্যের চাহিদা বেশি।

গতকাল বাজারভেদে প্রতিটি ফুলকপি ১৫-২০ টাকা, বাঁধাকপি ও ব্রকলি ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিকেজি মুলা ২০ টাকা; মিষ্টিকুমড়া, শালগম ও পেঁয়াজ কলি ৩০-৩৫ টাকা; শিম ২০-৪০ টাকা; শসা, বেগুন, টমেটো ও লাউ ৩০-৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য বাজারে মাছ-মাংসের দামে তেমন পরিবর্তন নেই। গতকাল প্রতি কেজি কই (চাষের) ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২২০ টাকা, রুই ৩৫০-৩৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া এক কেজি আকারের ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ২৭০০-২৮০০ টাকা।

রুই, তেলাপিয়া, পাঙাসসহ অন্যান্য মাছের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও ইলিশের দাম বেশ চড়া।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী রাফি বলেন, ‘বাজারে সবজির দাম নাগালের মধ্যে থাকলেও অন্যন্য জিনিসের দাম অনেক বেশি। বর্তমান সরকার নিত্যপণ্যের আমদানিতে শুল্ক কমালেও বাজারে এর প্রভাব পড়ে না। প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে চালের দাম বাড়তি। এই দাম কমানোর উদ্যোগ প্রয়োজন।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সবজ আল র দ ম দ ম কম ৩০ ট ক ২০ ট ক এক ক জ আমদ ন সবজ র গতক ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

২৫ নং ওয়ার্ডে পাম্প হাউসের ক্যাবল চুরি, দুর্ভোগ

বন্দরে ২৫ নং ওয়ার্ডের লক্ষণখোলা- দাসেরগাঁ পাম্প হাউসের বৈদ্যুতিক ক্যাবল চুরি ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২ মার্চ) ভোরে ওই পাম্পের প্রায় ৩০ ফুট ক্যাবল চুরি করে নিয়ে গেছে অজ্ঞাত চোরেরা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে পাম্পের পানি সরবরাহ ব্যবস্থা।  

ফলে পবিত্র মাহে রমজানে এলাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র  সংকট দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোজাদাররা । এ ব্যাপারে পাম্প অপারেটর রাজু মিয়া বাদি হয়ে বন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

পাম্প অপারেটর রাজু জানান,  সাহরি খাওয়ার পর রোববার ভোরে পাম্প বন্ধ করে তিনি চলে যান । এ সময় চোরেরা পাম্পের প্রায় ৩০ ফুট বৈদ্যুতিক ক্যাবল চুরি করে নিয়ে যায়। সকাল ৮টায় পাম্প চালু করতে এসে ক্যাবল চুরির বিষয়টি নজরে আসে। ক্যাবল চুরির কারণে পানি উত্তোলন ও গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান ।

পানি সরবরাহের দায়িত্বে থাকা নাসিকের সহকারি প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল জোবায়ের জানান, দুই সপ্তাহ আগে এ পাম্পের ক্যাবল চুরি হয়। পরে নতুন ক্যাবল স্থাপন করে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়। কিন্তু রোববার পুনরায় ক্যাবল চুরি হয়। বার বার ক্যাবল চুরি হওয়ায় পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে।

বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। চোরদের গ্রেপ্তার ও ক্যাবল উদ্ধারে অভিযান চলছে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই দিনের মধ্যে সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • দুইদিনের মধ্যে সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • ২ মাস চলে গেল, আর কবে বই পাবে শিক্ষার্থীরা
  • বিকাশ–রকেট–ডেবিট কার্ডে কেন মেট্রোরেলের রিচার্জ সুবিধা চালু হচ্ছে না
  • গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ বন্ধে জাতিসংঘ ও আরব দেশের নিন্দা
  • অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে
  • রমজানে লোডশেডিং বন্ধে সবার সহযোগিতা চাইলেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা
  • ভোজ্যতেল নিয়ে ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলছেই
  • গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করল ইসরায়েল
  • ২৫ নং ওয়ার্ডে পাম্প হাউসের ক্যাবল চুরি, দুর্ভোগ