বাড়তে পারে মিটারহীন আবাসিক গ্যাসের দাম
Published: 14th, January 2025 GMT
শিল্পকারখানার সঙ্গে আবাসিকেও গ্যাসের দাম বাড়তে পারে। বাসাবাড়ির মিটারহীন গ্রাহকদের গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে তিতাস গ্যাস কোম্পানি। নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের সঙ্গে আবাসিকের প্রস্তাবটিও দেওয়া হবে। তিতাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। খাত-সংশ্লিষ্টরা বলেছন, সংকটের কারণে দিনের বেশির ভাগ সময় বাসাবাড়ির লাইনে গ্যাস থাকে না। রান্না করতে হয় বৈদ্যুতিক বা এলপি গ্যাসে। এরপরও দাম বৃদ্ধির উদ্যোগ হবে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।
এদিকে ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম কেজিতে ৩৭ পয়সা বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এক প্রজ্ঞাপনে বিইআরসি এ তথ্য জানিয়েছে।
বাসাবাড়ির গ্যাস
গত মাসে এক বৈঠকে নতুন শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ সংযোগে গ্যাসের দাম আমদানি করা এলএনজির সমান করার সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি বিভাগ। এর পরই ৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) নতুন শিল্পকারখানা ও ক্যাপটিভ বিদ্যুতে গ্যাসের দাম যথাক্রমে প্রতি ঘনমিটার ৩০ ও ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব দেয় পেট্রোবাংলা। আইনগতভাবে পেট্রোবাংলার দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়ার সুযোগ নেই। কেবল লাইসেন্সধারী সংস্থা দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে পারে। এ কারণে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে মূল্য সমন্বয়ের প্রস্তাব চায় বিইআরসি। এ জন্য ৭ জানুয়ারি একটি ইস্যু করা পত্রে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে মূল্য পরিবর্তনের প্রস্তাব কমিশনে দাখিল করতে বলে।
এ বিষয়ে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ বলেন, মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহক অনেক বেশি গ্যাস ব্যবহার করে। এক চুলা ৫৫ ঘনমিটারের বিল ও দুই চুলা ৬০ ঘনমিটারের বিল আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু ক্ষেত্রবিশেষে মিটার ছাড়া আবাসিক গ্রাহকদের ১০০ ঘনমিটার পর্যন্ত গ্যাস ব্যবহারের রেকর্ড রয়েছে। বেশি ব্যবহার করলেও মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের বিল নির্ধারিত। অপচয় রোধে দাম বাড়ানো উচিত। নতুন শিল্প আর মিটারহীন আবাসিকে একসঙ্গে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হচ্ছে।
বিইআরসি সর্বশেষ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশ দেয় ২০২২ সালের ৫ জুন। আবাসিকে গ্যাসের ক্ষেত্রে এক চুলার জন্য মাসিক বিল ৯৯০ টাকা আর দুই চুলার দর ১ হাজার ৮০ টাকা করা হয়। মিটারযুক্ত আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি ঘনমিটারের দাম হয় ১৮ টাকা। দেশে আবাসিক গ্রাহক সংখ্যা ২৮ লাখ ৫৭ হাজার। এর মধ্যে প্রিপেইড মিটার গ্রাহক রয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার।
এলপিজির দাম বাড়ল
এদিকে ভ্যাট সমন্বয় করায় প্রতি কেজি এলপিজির দাম ১২১ টাকা ১৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২১ টাকা ৫৬ পয়সা করা হয়েছে।
এতে বহুল ব্যবহৃত ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৫৫ থেকে বেড়ে ১ হাজার ৪৫৯ টাকা হয়েছে। শুধু ১২ কেজি নয়; ৫ কেজি, সাড়ে ১২ কেজি থেকে শুরু করে ৪৫ কেজি পর্যন্ত এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে।
গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজি বা অটোগ্যাসের দাম এক টাকা বাড়িয়ে প্রতি কেজি ৬৭ টাকা ২৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারি এলপিজির দাম প্রতি কেজি ১২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিইআরসি জানিয়েছে, এলপিজির ওপর আরোপিত মূল্য সংযোজন করের (মূসক) হার পরিবর্তনের ফলে জানুয়ারির জন্য সরকারি-বেসরকারি এলপিজির মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।
সোমবার এলপি গ্যাস উৎপাদন পর্যায়ে সাড়ে ৭ শতাংশ অতিরিক্ত ভ্যাট প্রত্যাহার করার বিশেষ আদেশ জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর পরও এলপিজির দাম কেন বাড়ানো হলো– জানতে চাইলে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ জানান, এর আগে এলপিজিতে উৎপাদক পর্যায়ে ৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে আরও ২ শতাংশ– মোট ৭ শতাংশ ভ্যাট ছিল।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এলপ জ র দ ম ব যবহ
এছাড়াও পড়ুন:
১২ কেজি এলপিজির দাম কমলো
ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৮ টাকা কমানো হয়েছে। ২৮ টাকা দাম কমিয়ে মার্চ মাসের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪৫০ টাকা।
ফেব্রুয়ারি মাসে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ছিল ১ হাজার ৪৭৮ টাকা। এরও আগে গত জানুয়ারি মাসে দাম ছিল ১ হাজার ৪৫৯ টাকা।
এছাড়া ৫.৫ কেজি সিলিন্ডারে দাম ৬৬৪ টাকা, ১২.৫ কেজির দাম ১ হাজার ৫১০ টাকা, ১৫ কেজির দাম ১ হাজার ৮১২ টাকা, ১৬ কেজির দাম ১ হাজার ৯৩৩ টাকা, ১৮ কেজির দাম ২ হাজার ১৭৫ টাকা, ২০ কেজির দাম ২ হাজার ৪১৬ টাকা, ২২ কেজির দাম ২ হাজার ৬৫৮ টাকা, ২৫ কেজির দাম ৩ হাজার ২০ টাকা, ৩০ কেজির দাম ৩ হাজার ৬২৪ টাকা, ৩৩ কেজির দাম ৩ হাজার ৯৮৭ টাকা, ৩৫ কেজির দাম ৪ হাজার ২২৮ টাকা এবং ৪৫ কেজির সিলিন্ডারের ৫ হাজার ৪৩৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোমবার (৩ মার্চ) বিকেল ৩ টায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ সংস্থাটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ নতুন দাম ঘোষণা করেন।
আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে নতুন দর কার্যকর হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
২০২১ সালের এপ্রিল থেকে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে আসছে বিইআরসি। এলপিজি তৈরির মূল উপাদান প্রোপেন ও বিউটেন বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়।
প্রতি মাসে এলপিজির এই দুই উপাদানের মূল্য প্রকাশ করে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি সৌদি কার্গো মূল্য (সিপি) নামে পরিচিত। এই সৌদি সিপিকে ভিত্তিমূল্য ধরে দেশে এলপিজির দাম সমন্বয় করে বিইআরসি। আমদানিকারক কোম্পানির চালান (ইনভয়েস) মূল্য থেকে গড় করে পুরো মাসের জন্য ডলারের দাম হিসাব করে বিইআরসি।
এএ