কানাডায় অভিবাসনে নতুন উদ্যোগ: বাড়তি সুযোগ ফ্রেঞ্চ ভাষা জানলেই

২০২৫ সালের শুরু থেকে কানাডা সরকারের এক্সপ্রেস এন্ট্রি প্রোগ্রামে ফ্রেঞ্চভাষী আবেদনকারীদের প্রতি অগ্রাধিকার বাড়ানো হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৩৫ হাজার ৫৮৮ জন আবেদনকারীকে ITA (Invitation to Apply) প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ফ্রেঞ্চ ভাষায় দক্ষ আবেদনকারীদের জন্য তিনটি পৃথক ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ১৮ হাজার ৫০০ জন আবেদনকারী আমন্ত্রণ পেয়েছেন।

এতে এটা স্পষ্ট হয় যে কানাডা বর্তমানে দ্বিভাষিক (ইংরেজি ও ফ্রেঞ্চ) সমাজকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছে এবং ফ্রেঞ্চ ভাষায় দক্ষ ব্যক্তিদের স্থায়ী বসবাসের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে।

কেন এই অগ্রাধিকার ফ্রেঞ্চ ভাষাভাষীদের জন্য?

কানাডা একটি দ্বিভাষিক দেশ। ইংরেজির পাশাপাশি ফ্রেঞ্চও সরকারি ভাষা। বিশেষ করে কুইবেক প্রদেশসহ পূর্বাঞ্চলের অনেক এলাকায় ফ্রেঞ্চ হলো প্রথম ভাষা। স্থানীয় অর্থনীতি, শিক্ষা ও সামাজিক খাতে ফ্রেঞ্চভাষীদের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ কারণে কানাডা সরকার চায় যেন অভিবাসীরা শুধু ইংরেজিভাষী না হয়ে ফ্রেঞ্চ ভাষায়ও দক্ষ হন।

ভাষা জানলে বাংলাদেশিদের জন্য বড় সুযোগ

বাংলাদেশে শিক্ষার্থী ও তরুণ পেশাজীবীদের জন্য এখনই সুবর্ণ সুযোগ—ফ্রেঞ্চ শেখার মাধ্যমে কানাডায় স্থায়ী বসবাসের রাস্তা সহজ করে নেওয়া। তুলনামূলক কম CRS (Comprehensive Ranking System) স্কোরে কানাডায় যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ফ্রেঞ্চ ভাষায় দক্ষরা।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশে কোথায় শেখা যায় ফ্রেঞ্চ ভাষা?

ফ্রেঞ্চ শেখার জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের খোঁজ পাওয়া যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:

1. Alliance Française de Dhaka

অবস্থান: ধানমন্ডি ও গুলশান

ওয়েবসাইট: www.afdhaka.org

ফ্রেঞ্চ ভাষা শেখানোর জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান।

2. Institute of Modern Languages (IML), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

এখানে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ফ্রেঞ্চ কোর্স রয়েছে।

3. Online Platforms:

Duolingo (বিনা মূল্যে)

Babbel, Coursera, Udemy (সার্টিফিকেটসহ কোর্স)

ফ্রেঞ্চ শেখা কতটা কঠিন সময়সাপেক্ষ?

বাংলাদেশিদের জন্য এই ভাষা শেখা হয়তো একটু কঠিন হতে পারে। সাধারণভাবে, একজন শিক্ষার্থী যদি প্রতিদিন ২-৩ ঘণ্টা সময় দেন, তাহলে ৬ মাসের মধ্যে একটি ভালো বেসিক লেভেল অর্জন করা সম্ভব। উচ্চতর দক্ষতা অর্জনে সময় লাগতে পারে ১ থেকে দেড় বছর, তবে এর বিনিময়ে কানাডার মতো দেশের স্থায়ী বসবাসের সুযোগ এক অনন্য প্রাপ্তি।

শেষ কথা

বর্তমান বিশ্বে শুধু ডিগ্রিই নয়, ভাষাদক্ষতাও হয়ে উঠেছে অভিবাসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। কানাডার মতো দেশে ফ্রেঞ্চ শেখার মাধ্যমে বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীরা সহজেই গড়তে পারেন তাঁদের ভবিষ্যৎ। শুধু দরকার একটু আগ্রহ, নিয়মিত চর্চা এবং সঠিক দিকনির্দেশনা।

আরও পড়ুন