জোড়া খুনের মামলায় ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের রিমান্ড মঞ্জুর
চট্টগ্রামে জোড়া খুনের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রোববার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইব্রাহিম খলিল পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। এদিকে আরও আটটি মামলায় সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বাকলিয়া থানার জোড়া খুনের মামলায় আসামি সাজ্জাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এর বাইরে নগরের চান্দগাঁও থানার পাঁচটি, বায়েজিদ বোস্তামী থানার একটি ও হাটহাজারী থানার দুটি মামলায় সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্মকর্তারা। শুনানি শেষে আদালত গ্রেপ্তার দেখান।
১৫ মার্চ ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মল থেকে সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেন লোকজন। এর আগে ২৯ জানুয়ারি তাঁকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেন নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ। সাজ্জাদ সিএমপির বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফেসবুক লাইভে এসে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। সাজ্জাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে।
সাজ্জাদকে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তাঁর স্ত্রী শারমিন তামান্না। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। আমার জামাই বীরের বেশে চলে আসবে’।
সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। গত ৩০ মার্চ নগরের বাকলিয়া অ্যাকসেস রোড এলাকায় একটি প্রাইভেট কারকে ধাওয়া দিয়ে গুলি করে ঝাঁঝরা করা হয়। এতে দুই আরোহী নিহত হন। ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ও সাজ্জাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের ধারণা। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ার জেরে তাঁর অনুসারীরা সরোয়ারের সহযোগীদের ওপর হামলা চালান বলে অনুমান করছে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের একজন বখতিয়ার হোসেনের মা ফিরোজা বেগম বাকলিয়া থানায় মামলা করেন। মামলায় সাজ্জাদ, তাঁর স্ত্রী শারমিন তামান্নাসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। মামলার অন্য পাঁচ আসামি হলেন মো. হাছান, মোবারক হোসেন, মো. খোরশেদ, মো. রায়হান ও মো. বোরহান। তাঁরা সাজ্জাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এদিকে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ মো. বেলাল, মো. মানিক ও সজীব নামের তিনজনকে শনাক্তের পর গ্রেপ্তার করে। তাঁদের মধ্যে সজীব আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ঘটনার দিন তাঁরা নগরের অক্সিজেন এলাকায় চার ঘণ্টা বৈঠক করেন। এতে নেতৃত্ব দেন সাজ্জাদের সহযোগী মো. হাছান। সাজ্জাদকে ধরিয়ে দেওয়ায় সন্ত্রাসী সরোয়ারকে লক্ষ্য করে তাঁরা প্রাইভেট কারে গুলি ছুড়েছিলেন। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সাতটি মোটরসাইকেলে ১৩ জন হামলায় অংশ নেন। তাঁদের হাতে ১০টি পিস্তল ও শটগান ছিল। কিন্তু এখনো কোনো অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি।