মুন্সিগঞ্জে দু-এক মাসের মধ্যে মেডিকেল কলেজের কাজ শুরু হতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মুন্সিগঞ্জের অবকাঠামোগত উন্নয়নসংক্রান্ত আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন বিষয়ে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। আজ বেলা আড়াইটার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষেছবি: প্রথম আলো

মুন্সিগঞ্জে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাড়াতাড়ি এখানে (মুন্সিগঞ্জ) একটি মেডিকেল কলেজ করা যায় কি না। দু-এক মাসের মধ্যে কীভাবে কাজ শুরু করা যায়, এ জন্য আমরা চেষ্টা করছি।’

আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত জেলার অবকাঠামোগত উন্নয়নসংক্রান্ত আলোচনা সভা শেষে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মুন্সিগঞ্জ ঢাকার সবচেয়ে কাছে। কিন্তু কিছু কিছু কাজ এখনো হয়নি। অবহেলিত একটি এলাকা ছিল এই জেলা। এখানে কীভাবে আমরা অল্প সময়ের মধ্যে কিছু কাজ করতে পারি, এ জন্য কয়েকজন উপদেষ্টা, সচিবসহ আমরা সবাই সমবেত হয়েছি।’

মেডিকেল কলেজ স্থাপনের ব্যাপারে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইতিমধ্যে জায়গা নির্ধারণ করা হয়ে গেছে। তবে এ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। আগে মেডিকেল কলেজের কাজ শেষ করে এরপরে বিশ্ববিদ্যালয় করার চেষ্টা করা হবে।

মুন্সিগঞ্জের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শ্রীনগর থেকে মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত চার লেন সড়ক করার জন্য আলোচনা হয়েছে। এটি হয়তো খুব তাড়াতাড়ি করা সম্ভব।

আলোচনা সভায় মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাতের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

‘প্রত্নকথা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

মুন্সিগঞ্জের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা ভ্রমণের সুবিধার জন্য ‘প্রত্নকথা’ নামের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। আজ দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। ভ্রমণ বইটির সম্পাদনা ও প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন।

বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

মুন্সিগঞ্জ জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা ভ্রমণের সুবিধার্থে ‘প্রত্নকথা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে
ছবি: প্রথম আলো

এতে মুন্সিগঞ্জের রঘুরামপুর ও নাটেশ্বর এলাকার প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাসহ জেলার দর্শনীয় ৬২টি স্থানের সচিত্র বর্ণনা, অবস্থান, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া জেলাটি ভ্রমণে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য এক দিনে ভ্রমণ করা যায়, এমন ৩টি ভ্রমণ পরিকল্পনা যুক্ত করা হয়েছে। পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসুদের সুবিধার্থে এতে জেলা ও উপজেলাগুলোর আলাদা আলাদা মানচিত্র, আবাসন ও যোগাযোগব্যবস্থার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের কথা বিবেচনায় রেখে বইটির সব তথ্য ও বর্ণনা বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় লেখা হয়েছে। এটির অনলাইন ভার্সন মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত করা হয়েছে। এ ছাড়া কিউআর কোড স্ক্যান করেও বইটির পিডিএফ ভার্সন পড়া যাবে।

জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত বলেন, বইটির সংরক্ষণের লক্ষ্যে ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জানার সুবিধার্থে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থা, লাইব্রেরি, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়, রিসোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পাঠানোর পরিকল্পনা আছে।

জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুন্সিগঞ্জের সাধারণ মানুষ ও সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিরা। তাঁরা বলছেন, এই বই প্রকাশের কারণে জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্য বিশ্বদরবারে পৌঁছে যাবে।