আর্চারির কমিটি নিয়ে বিতর্ক, সার্চ কমিটির পদত্যাগের হুমকি
খো খো ফেডারেশন ও বেসবল-সফটবল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আজ সকালে ঘোষণা করা হয়েছিল বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটিও। কিন্তু আর্চারির কমিটি নিয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সার্চ কমিটি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আর্চারির ঘোষিত কমিটি সরকার প্রত্যাহার করছে বলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন সার্চ কমিটির প্রধান জোবায়দুর রহমান।
২০০২ সালে যাঁর হাত ধরে বাংলাদেশের আর্চারির শুরু, সেই কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদকে (চপল) সাধারণ সম্পাদক করে আর্চারি ফেডারেশনের ১৯ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি ঘোষণা করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। এরপরই সার্চ কমিটি যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘোষিত কমিটি তাদের নয় বলে জানায়।
সার্চ কমিটির দেওয়া তালিকা থেকে আর্চারির ঘোষিত কমিটিতে কতজন বদল হয়েছে, জানতে চাইলে জোবায়দুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা বলা যাবে না। গোপনীয় বিষয়। তবে এটা বলতে পারি, আমাদের দেওয়া কমিটি থেকে অনেকেই ছিলেন না।’
কাজী রাজীব উদ্দিন আর্চারির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।
২৩ বছর ধরে আছেন এই পদে। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশের আর্চারি আজকের অবস্থানে এসেছে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষিত নীতি হলো, এক পদে দুই মেয়াদের বেশি থাকা যাবে না। যদিও সাধারণ সম্পাদক পদে ব্যতিক্রম হয়েছে স্কোয়াশে। আর্চারিতেও ব্যতিক্রম ধরে নেওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু তাঁকে রেখে আর্চারির কমিটি ঘোষণার পর ক্ষোভে ফুঁসছে সার্চ কমিটি।
পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রধান জোবায়দুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা হলো এনএসসির সচিব আমিনুল ইসলাম সাহেবের উর্বর মস্তিষ্কের ফল (কমিটির বদল)। উনি মানুষকে মানুষ জ্ঞান করছেন না। ওনার উৎসাহে এটা হয়ছে। শুটিং, উশু, বক্সিংসহ আরও কয়েকটি ফেডারেশনের কমিটির নাম তিন মাস হয়ে গেছে ঘোষণা হয় না। আর্চারি ফেডারেশনের কমিটি পরশু জমা দিয়েছি আর আজই তা ঘোষণা হয়ে গেছে! উৎসাহের একটা সীমা থাকে। উপদেষ্টা মহোদয় এটা পুরোপুরি জানেনও না।’
পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন কি না, জানতে চাইলে জোবায়দুর বলেন, ‘আমরা ঠিক হুমকি দিইনি। তবে আমরা পদত্যাগের জন্য শতভাগ প্রস্তুত। উপদেষ্টার কাছে পদত্যাগের ইচ্ছার কথা প্রকাশও করেছি। শুধু এটা আর্চারির কমিটি বদলের ব্যাপার নয়, সিস্টেমের মধ্যে কাজ করতে না পারলে এবং সেখানে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে আমরা থাকতে চাইছি না। পরোক্ষে ওটা পদত্যাগই।’
ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি ঘোষণার প্রতিক্রিয়া নিয়ে জোবায়দুর রহমানের ব্যাখ্যা, ‘নিয়ম হলো, আমরা কমিটি দিই এনএসসি সচিবের কাছে। সচিব এটা মন্ত্রণালয়ে সরাসরি উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে পাঠান। বন্ধ খামে লেখা থাকে “অতি গোপনীয়”। আমরা দেওয়ার পর উপদেষ্টা মহোদয় খাম খুলবেন, এটাই নিয়ম। তারপর একটা সমন্বয় মিটিং করবেন। যদি মনে হয় সব ঠিক আছে, তাহলে কমিটি ঘোষিত হবে। যোগ–বিয়োগের প্রয়োজন হলে আমরা তা করে এনএসসিতে দেব। এনএসসি তা ঘোষণা করবে। কিন্তু এখানে কোনো সমন্বয় মিটিং তারা করেনি। আমরা যে কমিটি দিয়েছি, আমাদের বিশ্বাস তা উপদেষ্টা মহোদয় পর্যন্ত পৌঁছায়নি।’
জোবায়দুর রহমান শেষে যোগ করেছেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় আমাদের নিশ্চিত করেছেন, আর্চারির কমিটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। উনি আমাদের এইমাত্র তা লিখে পাঠিয়েছেন।’
তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এনএসসি থেকে এ ব্যাপারে কোনো ঘোষণা আসেনি। বক্তব্য জানতে এনএসসি সচিবকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।