শেরপুরে রোজাদারদের প্রিয় ‘হামিদ ভাইয়ের’ ইফতারি
দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে শুধু পবিত্র রমজান মাসে ইফতারি বিক্রি করেন শেরপুরের মিষ্টি ব্যবসায়ী মো. আবদুল হামিদ। এখানকার রোজাদারদের কাছে ‘হামিদ ভাইয়ের’ ইফতারির জুড়ি নেই। তাঁর দোকানের ইফতারিতে থাকে ছোলা, বেগুনি, পেঁয়াজু ও চপ।
শেরপুর জেলা শহরের নবীনগর এলাকার বাসিন্দা আবদুল হামিদ (৬০)। তাঁর দোকানটি শহরের মুন্সিবাজার এলাকায় অবস্থিত। টিন দিয়ে তৈরি একটি ঘরে হামিদের মিষ্টির দোকান। রমজান মাস ছাড়া বছরের অন্য সময়ে তাঁর দোকানে রুটি, ডিম, শিঙারা, পুরি ও বিভিন্ন পদের মিষ্টি বিক্রি করা হয়। রোজাদারদের উন্নতমানের মজাদার খাবার দেওয়ার কথা মাথায় রেখে শুধু রমজান মাসেই তিনি ইফতারি বানিয়ে থাকেন। প্রতিদিন দুপুর থেকে তাঁর দোকানের কারিগরেরা ইফতারি বানানো শুরু করেন। বিক্রি শুরু হয় বিকেল চারটা থেকে।
গতকাল শনিবার বেলা তিনটার দিকে হামিদের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, চারজন কারিগর কয়েকটি চুলায় কড়াইয়ে বেগুনি ও পেঁয়াজু ভাজছেন। দুজন বিক্রয়কর্মী কিছুক্ষণ আগে তৈরি করা ছোলা পলিথিনে ভরে প্যাকেট করছেন। আরেকজন কর্মী তৈরি করা বেগুনি, পেঁয়াজু ও চপ রোজাদারদের কাছে বিক্রি করার জন্য টেবিলে সাজিয়ে রাখছেন। তাঁদের সবাইকে সহযোগিতা করছেন হামিদ। বিকেল চারটার দিকে শুরু হয় ইফতারি বিক্রি। প্রথমে এক-দুজন করে ক্রেতা এলেও কিছুক্ষণের মধ্যে ইফতারি কিনতে অনেক ক্রেতার সমাগম ঘটে তাঁর দোকানে।
ইফতারি কিনতে আসা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা কানিজ ফারহানা ও যমুনা ব্যাংক শেরপুর শাখার কর্মকর্তা লাভলু মিয়া বলেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে শেরপুরে থাকেন। এই সুবাদে প্রতিবছর রমজান মাসে হামিদ ভাইয়ের দোকান থেকে ইফতারি কিনে নেন। এখানকার ইফতারি উন্নতমানের, খেতে সুস্বাদু ও মজাদার। তাই এসব ইফতারি রোজাদারদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়।
আবদুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, ৩৮ বছর ধরে প্রতি রমজান মাসে তিনি ইফতারি বিক্রি করে থাকেন। ইফতারি তৈরিতে ভালো উপকরণ ব্যবহার করেন। রোজাদারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তিনি কখনো বাসি তেল ব্যবহার করেন না। প্রতিদিন প্রায় ২০০ ক্রেতা তাঁর দোকান থেকে ইফতারি কেনেন। বিক্রি হয় ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। সব কিছু স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ও যত্নসহকারে তৈরি করা হয়, এ জন্য তাঁর দোকানে অনেক রোজাদার ইফতারি কিনতে আসেন বলে তিনি মনে করেন।