ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অভিন্ন অবস্থানে মস্কো-তেহরান

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান (ডানে) ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তেহরানে, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ছবি: রয়টার্স

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে অভিন্ন অবস্থানে রয়েছে মস্কো ও তেহরান। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মঙ্গলবার ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এই অবস্থানের কথা জানান।

লাভরভ তেহরানে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়েদ আব্বাস আরাগচির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তাঁরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিসহ দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

পরে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কিত ‘জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ)’ ঘিরে যে পরিস্থিতি বিরাজ করেছে, তা নিয়ে অভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করা হয়েছে।

২০১৫ সালে বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশের সঙ্গে জেসিপিওএ সই করে ইরান। দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি ও রাশিয়া। এই চুক্তির আওতায় ইরান থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। অন্যদিকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজ শুরু করেছিল তেহরান। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবার ক্ষমতায় এসে এই চুক্তি থেকে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন। তখন থেকে চুক্তিটি একধরনের বাতিল হয়ে যায়। পরে জো বাইডেন চুক্তিটি পুনরায় শুরুর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়।

তেহরানে পৌঁছার পর এর আগে লাভরভ বলেছিলেন, ইরানের পারমাণবিক চুক্তিকে ঘিরে যেসব সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা এখনো কূটনৈতিক উপায়ে সমাধান করা যায়।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি গত সপ্তাহে বলেছেন, জাতিসংঘের চাপ সত্ত্বেও ইরান উচ্চ হারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রেখেছে। দেশটি যে হারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, তা বাণিজ্যিক প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি।

আরও পড়ুন

তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে গ্রোসি বলেছিলেন, গত বছরের শেষের দিক থেকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের গতি কিছুটা কমিয়েছে ইরান। কিন্তু এরপরও প্রতি মাসে প্রায় সাত কেজি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে দেশটি।

ইরান বারবার দাবি করেছে, তাদের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো উদ্দেশ্য নেই। কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো দেশ এত বেশি পরিমাণ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে না।

আগামী মাসে গ্রোসির তেহরান সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। চলতি বছরে এটাই তাঁর প্রথম ইরান সফর।

রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে সম্পর্ক যেকোনো সময়ের চেয়ে সম্প্রতি গভীরতর হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা দিচ্ছে ইরান। গত জানুয়ারি মাসে দুই দেশ একটি কৌশলগত চুক্তি সই করেছে।