মধুপুর বনভূমির সীমানা চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু

টাঙ্গাইলের মধুপুরের বনভূমির সীমানা চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছে বনবিভাগ। সোমবার বনাঞ্চলের বেরিবাইদ এলাকা থেকে এ কাজ শুরু হয়
ছবি: সংগৃহীত

বসবাসকারীদের অধিকার সংরক্ষণের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের মধুপুর বনকে বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায় বন বিভাগ। এই লক্ষে ওই বনভূমির সীমানা চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার বেরিবাইদ মৌজায় সীমানা চিহ্নিতকরণের মধ্য দিয়ে এ কাজের সূচনা হয়।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মধুপুরে ৪৫ হাজার ৫৬৫ একর বনভূমি রয়েছে। একসময় শাল-গজারিতে পরিপূর্ণ ছিল এই বন। এখানে বিচরণ করত নানা প্রাণী। কালের আবর্তে প্রাকৃতিক বনের বড় একটি অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। বন্য প্রাণীরও বিলুপ্তি ঘটেছে। বনভূমির বড় একটি অংশ দখল হয়ে গেছে। বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণে যে ভূমি রয়েছে, তাতেও বিদেশি প্রজাতির গাছ দিয়ে কৃত্রিম বন সৃজন করা হয়েছে। ফলে মধুপুর বনের প্রাকৃতিক ঐতিহ্য বিলুপ্তির পথে। গত আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মধুপুর বনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

মধুপুরে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সংগঠন জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক জানান, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কয়েক দশক ধরে বন ও বনের অধিবাসীদের অধিকারের জন্য কাজ করছেন। বর্তমান সরকারে তিনি উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর মধুপুরের শালবনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা এবং বনে বসবাসকারী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর অংশ হিসেবেই মধুপুরে সীমানা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে।

বন বিভাগ সূত্র জানায়, সোমবার মধুপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় সীমানা চিহ্নিত করা হয়। এ সময় টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন, মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে এই সীমানা চিহ্নিত করতে। পরবর্তী সময়ে এ বনকে ইউনেসকোর মাধ্যমে বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা গেলে একটি মাইলফলক হবে। এতে বনে বসবাসকারীদের অধিকার সংরক্ষিত হবে। আবার ঐতিহ্যবাহী বনটিও রক্ষা পাবে।