ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১০ এপ্রিল ২০২৫ ||  চৈত্র ২৭ ১৪৩১

বানভাসি কৃষকদের আশার আলো বিনাধান-২০

মো. লিখন ইসলাম, বাকৃবি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২০:৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫
বানভাসি কৃষকদের আশার আলো বিনাধান-২০

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত বিনাধান-২০

গত বছর আগস্টে আকস্মিক অতিবৃষ্টি ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়। নষ্ট হয়ে যায় লাখ লাখ হেক্টর আবাদি জমির ফসল, গবাদিপশু ও মাছের ঘের। সহায় সম্বল হারিয়ে পথে বসেন হাজার হাজার কৃষক ও খামারি।

নিজেদের উদ্ভাবিত ধানের জাত নিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দিশাহারা ও বাস্তুহারা এসব কৃষকদের সহায়তায় এগিয়ে আসে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা)। বিনাধান-২০ চাষে বাম্পার ফলন পেয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

বিনার উদ্ভাবিত ধানের এ জাতটির ব্যাপক ফলন বানভাসি কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। দেরিতে রোপণের পরও হেক্টর প্রতি ফলন গড়ে ৫ টন করে পাওয়া গেছে। যা কৃষকদের মধ্যে সঞ্চার করেছে আশার আলো ।

আরো পড়ুন:

বিনা উদ্ভাবিত আমন ধানের অন্য জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে, বিনাধান-৭, বিনাধান-১১, বিনাধান-১৬, বিনাধান-১৭ ও বিনাধান-২২। বন্যার পর এসব জাতের ধানবীজ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয় । 

বানভাসি কৃষকদের মাঝে বিনার উদ্ভাবিত এসব ধানের জাত বিতরণ ও প্রাপ্ত ফলন নিয়ে কথা বলেন বিনার বিজ্ঞানীরা। 

বিনার মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বিনা উপকেন্দ্র কুমিল্লার মাধ্যমে কুমিল্লা ও ফেনী জেলার বন্যাকবলিত কৃষকদের মাঝে বিনাধান-৭, বিনাধান-১১, বিনাধান-১৬, বিনাধান-১৭, বিনাধান-২০ এবং বিনাধান-২২ জাতের ১ হাজার ৫০০ কেজি চারা ও বীজ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়। সেপ্টেম্বরে চারা রোপণ শুরু হলে দেরিতে রোপণের পরও বিনাধান-২০ এর ফলন অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।”

তিনি বলেন, “বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বিনাধান-২০ এর উচ্চ ফলন ও বাজারমূল্য পেয়ে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। এ ধান তাদের জন্য শুধু একটি ফসল নয়, বরং দুর্যোগের পরে একটি নতুন আশার আলো হয়ে ফিরে এসেছে।”

বিনাধান-২০ নিয়ে বিনার কুমিল্লা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হাসানুজ্জামান রনি বলেন, “কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় দেখা গেছে, বিনাধান-২০ রোপণ করার ১২০-১৩০ দিনের মধ্যে ধান কর্তন করা সম্ভব হয়েছে। বিঘাপ্রতি ১৮-২০ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে, যা অন্যান্য আমন ধানের তুলনায় ২০-৫০ শতাংশ বেশি। দেরিতে রোপণ করায় অনেক উফশী জাতের ধানে ফুল আসা সম্পন্ন হয়নি এবং চিটা বেশি হয়েছে। তবে বিনাধান-২০ এর ছড়ায় শতকরা ৮০ ভাগ দানা পুষ্ট হওয়ায় কৃষকেরা আশানুরূপ ফলন পেয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “বিনাধান-২০ একটি জিংক ও আয়রন সমৃদ্ধ ধান। এর চালের রং লালচে, যা পুষ্টিগুণে ভরপুর। চালের অনন্য রং ও পুষ্টিমান থাকার কারণে বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি।”

ঢাকা/মেহেদী


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়