পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের
Published: 30th, April 2025 GMT
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার পর মুসলিমদের ব্যাপকভাবে ধরপাকড় ও তাঁদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা পেহেলগামের হামলাকে ব্যবহার করে দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর দমন–পীড়ন আরও বৃদ্ধি করছে।
কাশ্মীরের পেহেলগাম শহরের কাছে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে একজন বাদে বাকি প্রায় সবাই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। পর্যটক হিসেবে তাঁরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পেহেলগামে গিয়েছিলেন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ জোরালোভাবে নাকচ করে দিয়েছে।
পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার জবাবে ভারত সামরিকভাবে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে তাদের ঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হবে। পাকিস্তান সরকারের একজন মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন ভারত শিগগিরই সামরিক হামলা চালাতে পারে।
এই মুহূর্তে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মূলত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। যেমন আন্তসীমান্ত নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধের হুমকি দিচ্ছে। একই সঙ্গে বিজেপি সরকার ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুসলিমদের হয়রানি করছে। তারা এটিকে ‘অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান’ বলে দাবি করছে।
মোদির বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে কর্তৃপক্ষ এই সুযোগে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ এবং ‘রোহিঙ্গাদের’ বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। রোহিঙ্গারা মূলত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন। ‘পাকিস্তানি’ বা ‘বাংলাদেশি’ তকমা অনেক সময়েই হিন্দুত্ববাদীরা ভারতের অভ্যন্তরীণ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে থাকে।
উত্তর প্রদেশ ও কর্ণাটক—এই দুই রাজ্যে মুসলিমদের হত্যার খবর পাওয়া গেছে। গণমাধ্যমের খবরে সেগুলোকে বিদ্বেষমূলক অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরে ইতিমধ্যেই শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে যাঁদের সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক সরকারি কর্মকর্তার মতে, প্রায় দুই হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে, যা অনেকটা সমষ্টিগত শাস্তির মতো।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সশস ত র গ ষ ঠ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনীতিতে না জাড়ানোর কারণ জানালেন প্রীতি জিনতা
বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জিনতা এখন অভিনয়ে অনিয়মিত। অভিনয়ে তাকে দেখা না গেলেও নিজের ক্রিকেট দলের হয়ে মাঠে তাকে প্রায়ই দেয়া যায়। মাঝে গুঞ্জন উঠেছিলে রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন তিন। অবশ্য এবিষয়ে টুঁশব্দও করেননি এই অভিনেত্রী।
এদিকে মাস তিনেক আগে কংগ্রেসের পক্ষ অভিযোগ তোলা হয়েছিল, প্রীতি জিনতার ১৮ কোটি টাকার ঋণ নাকি মকুফ করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। শুধু তাই নয়, প্রীতি নাকি তার সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বিজেপির হাতে সঁপে দিয়েছেন- এমন অভিযোগও ওঠে। এরপর বলিউড নায়িকার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা শুরু হয়।
সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডলে প্রীতি জিনতাকে একজন জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি ভবিষ্যতে বিজেপিতে যোগ দেবেন? আপনার গত কয়েক মাসের টুইট দেখে তো তেমনটাই মনে হচ্ছে। জবাবে অভিনেত্রী বলেন, ‘সোশাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারীদের এটাই একটা সমস্যা। সবাই এত বিচার করতে বসে যান সবকিছু নিয়ে। আমি যেমনটা আগে বলেছি, মন্দিরে, মহাকুম্ভে যাওয়া কিংবা নিজের পরিচয় নিয়ে আমি গর্বিত। তার মানে এই নয় যে এসমস্ত কারণে আমি বিজেপিতে যোগ দেব।’
প্রীতি বলেন, ‘ভারতের বাইরে থাকার ফলে আমি দেশের প্রকৃত মূল্য উপলব্ধি করতে পেরেছি এবং আর পাঁচজন ভারতীয়র মতোই গর্ববোধ করি আমার দেশকে নিয়ে।’
রাজনীতিতে না আসার কারণ গত ফেব্রুয়ারি মাসেও জানিয়েছিলেন প্রীতি জিনতা। সেসময় তিনি বলেন, ‘রাজনীতি আমার দ্বারা হবে না। বিগত কয়েক বছরে একাধিক রাজনৈতিক দল আমাকে টিকিট দিতে চেয়েছে। এমনকি রাজ্যসভার আসনের প্রস্তাবও এসেছিল। তবে আমি বিনম্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ, আমার ইচ্ছে নেই। আর আমাকে ‘সৈনিক’ বললেও অতিরঞ্জিত হবে না। কারণ, আমি একজন আর্মি পরিবারের সন্তান। আমার বাবা সৈনিক এবং আমার দাদাও। আর্মি পরিবারের সন্তান হওয়ায় আমাদের মানসিকতা খানিক আলাদা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজেদের উত্তর ভারতীয়, দক্ষিণ ভারতীয় কিংবা হিমাচলী বা বাঙালি বলে ভাবি না, আমাদের পরিচয় শুধুমাত্র ভারতীয়। আর হ্যাঁ, দেশভক্তি আমাদের রক্তে।’ সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।