শেখ হাসিনা পরিবারের পাঁচ সদস্যের জমি জব্দের আদেশ
Published: 30th, April 2025 GMT
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের জমি ও প্লট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন এ আদেশ দেন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বারিধারায় সায়মা ওয়াজেদের নামে থাকা বাড়ি এবং খুলনায় শেখ রেহানা, সায়মা ওয়াজেদ ও সজীব ওয়াজেদের নামে থাকা ৮৭ শতক জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের নামেও খুলনায় থাকা ৮৭ শতক জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে মঙ্গলবার সায়মা ওয়াজেদের নামে থাকা গুলশানের ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত ফ্ল্যাটটি দেখভালে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দেওয়ার আদেশ দেন।
২৭ এপ্রিল প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির মামলায় সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
এর আগে ১০ এপ্রিল প্লট বরাদ্দ দুর্নীতির মামলায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। আর প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা পৃথক তিনটি মামলায় ১৩ এপ্রিল শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
তিনটি মামলাতেই শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করে দুদক।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র দওয় ন ম জ ব স দ দ ক
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি নেতার সম্মতি নিয়ে স্কুলমাঠে হাট
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি উপেক্ষা করে কালীগঞ্জ উপজেলার শিয়ালখোওয়া বিদ্যালয় মাঠে ফের হাট বসানো হয়েছে। এর আগে মাঠে হাট বসাতে জনমত গঠনে সভা করা হয়। সে সভায় হাটের পক্ষে মত দেন বিএনপি নেতা রোকন উদ্দিন বাবুল। প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস হয়নি কারও।
চলবলা ইউনিয়নের শিয়ালখোওয়া এসসি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান পাশাপাশি। একটি মাঠ ব্যবহার করে দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। গত বছর মাঠটি দখলমুক্ত করা হয়। মাঠ ঘিরে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও আশপাশে একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও তিনটি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে দেড় হাজারের বেশি ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করছে। একটি মাঠই তাদের ভরসা। মাঠটি ফের দখল হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মানুষ।
৫০ বছর আগে এ হাটের যাত্রা শুরু। ৭৮ শতক খাস জমির ওপর সপ্তাহে শনি ও বুধবার হাট বসে। এ ছাড়া বাকি পাঁচ দিন বাজার বসে। হাটে লোকসমাগমের কারণে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হয়ে আসছিল। এ কারণে গত বছরের ১২ মে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন মাঠে হাট বন্ধ করে দেয়।
এর পর দক্ষিণে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে হাট বসানো হয়। কিছুদিন ধরে শিয়ালখোওয়া মাঠে আবার হাট বসানোর পাঁয়তারা চলছিল। গত ১৩ এপ্রিল হাট দখলের উদ্দেশ্যে ইজারাদার সভার আয়োজন করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা বিএনপির সহসভাপতি রোকন উদ্দিন বাবুল বিদ্যালয় মাঠে হাট বসানোর পক্ষে মত দেন। এর সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘বিদ্যালয় ও হাট একে অপরের পরিপূরক। হাটের যেমন প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি বিদ্যালয়ের প্রয়োজন আছে। পেটে ভাত না থাকলে শিক্ষা হয় না।’
একপর্যায়ে তিনি ইজারাদার হিরু তাঁর সম্মতিতে হাট ডেকেছেন বলে জানান। এ বিষয়ে কথা বলতে রোকন উদ্দিন বাবুলের ফোনে কল দেওয়া হলে বলেন, ‘জরুরি মিটিংয়ে আছি। সাক্ষাতে কথা বলব।’
অভিভাবক আবদুল খালেক বলেন, ‘সবার মত উপেক্ষা করে বিদ্যালয় মাঠে হাট বসল। হাট না বসানোর দাবিতে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। কাজ হলো না।’
সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বীথি জানায়, সকাল ১০টার পর থেকে বিদ্যালয় মাঠে ক্রেতা ও হাটুরেদের সমাগম শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা অনেক গুণ বেড়ে যায়।
শিয়ালখোওয়া হাট ও বাজারের ইজারাদার আসাদুল ইসলাম হিরু বলেন, ‘৭৬ লাখ টাকা ইজারামূল্যে হাটের ডাক পেয়েছি। বিভিন্ন জনের সঙ্গে সমন্বয় করে মাঠে হাট বসানো হয়েছে। দুই প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের বলেছি মাঠ পরিচ্ছন্ন ও শিক্ষার পরিবেশ রেখে হাট পরিচালনা করা হবে।’
শিয়ালখোওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কী সমন্বয় হবে? আমাদের কথা কে শুনবে? ইউএনও আছেন, তাঁর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।’
এস.সি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনীন্দ্রনাথ রায় বলেন, গত বুধবার মাঠে হাট বসেছে। বেলা দেড়টার পরে ক্লাস হয়নি। বিদ্যালয় মাঠে হাট বসলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবেই।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, বিদ্যালয় মাঠে হাট বসলে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।