চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন, শুনানি হতে পারে রোববার
Published: 30th, April 2025 GMT
জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আবেদনের ওপর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আগামী রোববার শুনানি হতে পারে।
চিন্ময় দাসের জামিন প্রশ্নে রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট আজ বুধবার রায় দেন। রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে বিচারপতি মো.
এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদ উদ্দিন খান।
পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, আবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে। শুনানি হয়নি। চেম্বার আদালত আগামী রোববার আবেদনটি শুনবেন।
এর আগে ওই মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ গত ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের জামিন আবেদন খারিজ করে আদেশ দিয়েছিলেন। এ নিয়ে হাইকোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে গত ১২ জানুয়ারি আবেদনটি করেছিলেন চিন্ময় দাস। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রুল দেন হাইকোর্ট। আবেদনকারীকে (চিন্ময়) কেন জামিন দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টে চিন্ময় দাসের পক্ষে আইনজীবী জেড আই খান পান্না, প্রবীর হালদার ও অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভুঞা, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদ উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ওই মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চিন্ময় দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়া নিয়ে গত বছরের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ হয়েছিল। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর চিন্ময় দাসকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন জামিন শুনানির দিন ধার্য থাকলেও আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরে আদালত গত ৩ ডিসেম্বর শুনানির দিন রাখেন। সেদিন চিন্ময়ের কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় আদালত শুনানির জন্য ২ জানুয়ারি পরবর্তী দিন রাখেন। সেদিন তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়।
আরও পড়ুনরাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় দাসের জামিন৩ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ষ ট রপক ষ আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে আইনি নোটিশ
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল বা রিভিউ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে মো. ইশরাক হোসেনের নামে গেজেট প্রকাশ এবং তাকে শপথ পড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান এ নোটিশ পাঠান।
সোমবার তিনি সাংবাদিকদের জানান, গত রোববার বিকেলে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে রোববার রাতেই নির্বাচন কমিশন ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে সংশোধনী গেজেট প্রকাশ করেছে।
তিনি জানান, দুই বাসিন্দার পক্ষে রোববার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু একই দিন রাতেই নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে। এখন পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নোটিশদাতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আইনজীবী মনিরুজ্জামান বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে দ্রুততার সঙ্গে এই রায় দেওয়া হয়েছে। আমরা ধারণা করেছিলাম, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ট্রাইব্যুনালের রায় চ্যালেঞ্জ করবে। কিন্তু তা করা হয়নি। বরং, আইন উপদেষ্টার মন্তব্য অনুযায়ী, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত না নিয়েই সংশোধনী গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ট্রাইব্যুনাল এমন কোনো আদেশ দিতে পারে না যার কার্যকারিতা নেই। এখানে মেয়রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং অধ্যাদেশের মাধ্যমে মেয়র পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছিল।
জানা যায়, ঢাকার কাকরাইলের বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম ও মো. মামুনুর রশিদের পক্ষে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, আইন সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, যুগ্ম জেলা জজ মো. নুরুল ইসলাম ও মো. ইশরাক হোসেনের কাছে আইনি নোটিশটা পাঠানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ২০২০ সালের ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত বাতিল করেন এবং বিএনপি নেতা মো. ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন।