আওয়ামী শাসনামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও তাদের সহযোগী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শাখা ছাত্রদল। 

বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে টিএসসির রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু করে ভিসি চত্বরে হয়ে ঢাবির প্রশাসনিক ভবনে পৌঁছে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে সংগঠনটি। সমাবেশ শেষে তারা ঢাবি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসিরুদ্দিন শাওন, আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর আলম ভুঁইয়া ইমন প্রমুখ।

আরো পড়ুন:

বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

ঢাবির বাসে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫

সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, “যে শিক্ষকগণ একটি শিক্ষিত জাতি গঠনের লক্ষ্যে কাজ না করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করেছিল, তারা এখনে বুক চেতিয়ে ক্যাম্পাসের আনাচে কানাচে হেঁটে বেড়ায়। অথচ আমরা দেখেছিলাম, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কলাম লেখার কারণে ড.

মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।”

উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “এসব আওয়ামী দোসর শিক্ষকরা এখনো তাদের স্বপদে বহাল রয়েছে। ছাত্রদল ইতোমধ্যে কয়েকবার সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ ও এদের দোসরদের বিচারের দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। স্মারকলিপি দেওয়ার সময় আপনি মুচকি হেসে আশ্বাস দেন। কিন্তু আপনার আশ্বাসের কোনো বাস্তব রূপ আমরা দেখতে পায় না।” 

তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্রদল শুধু স্মারকলিপি দিয়ে থেমে থাকবে না। কালক্ষেপণ না করে বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানকে কলুষিত করেছে, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করুন। না হলে আমাদের কর্মসূচি আগামীতে আর সহিষ্ণু কর্মসূচি থাকবে না।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ম রকল প ছ ত রদল

এছাড়াও পড়ুন:

নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা

নড়াইলের কালিয়ায় মোটরসাইকেল চালক রফিকুল মোল্যার (৪০) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়নি। এ ঘটনায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছে প্রতিপক্ষ। গতকাল বুধবার সকালে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা অভিযোগ করেন, তাদের পক্ষের ফরিদ হত্যা মামলা দুর্বল করতে ও ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে। 

নিহত রফিকুল মোল্যা উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ রিকাইল শেখের বাড়ির পেছনে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই রফিকুলের দাফন হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একই গ্রামের মিলন মোল্যার লোকজনের সঙ্গে আফতাব মোল্যার পক্ষের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এর জেরে ১১ এপ্রিল দু’পক্ষের সংঘর্ষে খুন হন ফরিদ মোল্যা (৫৭)। এ ঘটনায় বাবলা-হাসলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক পিকুলকে প্রধান আসামি করে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে কালিয়া থানায় হত্যা মামলা হয়। নিহত রফিকুল মামলাটির ১৮ নম্বর আসামি। এই দু’পক্ষের মধ্যে ২০২৪ সালের ১ ও ৪ সেপ্টেম্বর দুই দফায় সংঘর্ষ হয়। 

বাবলা-হাসলা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের লোকজনের বিরুদ্ধে এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এর পরই চলতি মাসে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্যমতে, ফরিদ মোল্যা হত্যার জেরে আসামি পক্ষের ২৫টি পরিবারের প্রায় ৫০টি বাড়িতে আগুন, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৭ এপ্রিল রফিকুলের মা ফাতেমা বেগম কালিয়া থানায় মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় প্রতিপক্ষ আফতাব মোল্যা পক্ষের লোকজনকে। এর এক দিন পরই তাঁর ছেলের লাশ পাওয়া যায়। 

রিকাইল শেখের বাড়ির সামনে তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসীর ব্যানারে বুধবার সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন মুস্তারি বিল্লাহ, রিকাইল শেখের মেয়ে ইভা খানম, ফিরোজ মোল্যা, হানেফ মোল্যা, আব্দুল গফুর ও জামিলা বেগম। তারা অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ও ফরিদ হত্যা মামলা দুর্বল করতে পরিকল্পিতভাবে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত করলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে। 

এ সময় বক্তারা দাবি করেন, রফিকুল হত্যার জেরে মঙ্গলবার রাতে ওই গ্রামের পূর্বপাড়া হামলা হয়। এতে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে ২০০ মণ ধান ও ১৫টি গরু লুট করা হয়েছে। 

রফিকুলের শ্যালক শামিম আহমেদ প্রতিপক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শোকাহত পরিবার নিয়ে ব্যস্ত। কারা কোথায় কী করছে (ভাঙচুর), তা আমাদের জানা নেই।’ রফিকুল হত্যায় তারা এখনও মামলা করেননি বলেও জানান।

রফিকুলের স্ত্রী অজুহা বেগমের ভাষ্য, সোমবার মাগরিবের আজানের পর স্বামীর সঙ্গে ফোনে সর্বশেষ কথা হয় তাঁর। রাত ৩টার দিকে কল দিলে ফোন নম্বরে সংযোগ পাননি। মঙ্গলবার সকালে স্বামীর লাশ উদ্ধারের খবর পান। 

কালিয়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রফিকুল হত্যার বিষয়টি রহস্যজনক। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই এলাকায় কোনো বাড়ি ভাঙচুর বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। কিছু লোক গবাদি পশু ও বাড়ির মালপত্র সরিয়ে নিয়েছেন বলে জেনেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ