পাকিস্তানের পাল্টা পদক্ষেপে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছ থেকে পিছু হটল ভারতের রাফায়েল যুদ্ধবিমান, দাবি ইসলামাবাদের
Published: 30th, April 2025 GMT
নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) কাছাকাছি এলাকায় ভারতের রাফায়েল যুদ্ধবিমান টহল দিয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। তারা আরও দাবি করেছে, পাকিস্তান বিমানবাহিনীর (পিএএফ) পাল্টা পদক্ষেপের কারণে ভারতের যুদ্ধবিমানগুলো পিছু হটতে বাধ্য হয়। ২৯ ও ৩০ এপ্রিল রাতে এ ঘটনা ঘটে।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা সূত্রগুলোর দাবি, ভারতের যুদ্ধবিমানগুলো জম্মু ও কাশ্মীরে নিজেদের নিয়ন্ত্রিত আকাশসীমায় টহল দিচ্ছিল। পিএএফ তা শনাক্ত করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।
২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগই পর্যটক। নয়াদিল্লির অভিযোগ, হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের যোগসূত্র রয়েছে। তবে পাকিস্তান ভারতের এ অভিযোগ জোরালোভাবে নাকচ করে দিয়েছে। এক দেশ অন্য দেশের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতের পদক্ষেপগুলোর মধ্যে ৬৫ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা অন্যতম।
আরও পড়ুন৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে ভারতের হামলার পরিকল্পনার গোয়েন্দা তথ্য আছে১২ ঘণ্টা আগেপাকিস্তানের পদক্ষেপগুলোর মধ্যে ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিত এবং ভারতের ফ্লাইটের ক্ষেত্রে নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা অন্যতম। এর পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পেহেলগামের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে ভারত—এমন ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা’ তথ্য তাঁদের হাতে আছে। পেহেলগাম হামলাকে এ হামলার জন্য অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করবে ভারত।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে এক বৈঠকে পেহেলগামে হামলার ঘটনার জবাব দিতে সশস্ত্র বাহিনীকে ‘অভিযান পরিচালনার পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছে ভারত সরকার।
আরও পড়ুনপাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত২৮ এপ্রিল ২০২৫সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ভারত শিগগিরই তাঁর দেশে হামলা চালাতে পারে।
সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেছিলেন, ‘আমরা আমাদের বাহিনীগুলোকে শক্তিশালী করেছি। কারণ, এটা (ভারতের হামলা) এখন আসন্ন। এমন পরিস্থিতিতে কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে।’
ভারতের হাতে ফ্রান্সের তৈরি ৩৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে সোমবার এক বিবৃতিতে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আরও ২৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছে।
আরও পড়ুনভারতের হামলা আসন্ন ধরে নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি২৮ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদক ষ প
এছাড়াও পড়ুন:
বৈদেশিক ব্যবসায় কাজ করবে বেসিস-কোরিয়া
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার কোম্পানির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা বাড়াতে বেসিস কোরিয়া ডেস্ক ঘোষণা করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া উদ্ভাবনমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি দেশ, যেখানে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের জন্য রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশি আইসিটি খাতের সব প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কার্যকর অংশীদারিত্ব বাড়াতে পারবে। বেসিস কোরিয়া ডেস্ক হবে কৌশলগত প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে জ্ঞান বিনিময় ও যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ সহজ ও বাজার সম্প্রসারণের দ্বার উন্মোচিত হবে।
নতুন ডেস্ক প্রসঙ্গে বেসিস সহায়ক কমিটির সদস্য (অর্থ) ফৌজিয়া নিগার সুলতানা বলেন, বেসিস কোরিয়া ডেস্কের সদস্যরা এখন থেকে উদ্ভাবনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। যার মধ্যে রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘কোরিয়া ডে’ পালন, কোরিয়ান বাজারে প্রবেশে নীতিগত সহায়তা, কোরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণার সঙ্গে সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা আয়োজন। অন্যদিকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যৌথ উদ্যোগ বা ফ্র্যাঞ্চাইজিংয়ের সুযোগ তৈরি হবে।
উদ্যোক্তারা বলেন, নতুন ডেস্কের কারণে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রাপ্ত ব্যবসায়িক অনুসন্ধান বা লিড সদস্যের মধ্যে শেয়ার করা হবে, কোরিয়াভিত্তিক কয়েকটি আইসিটি ইভেন্টে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকবে। অন্যদিকে কোরিয়ান কোম্পানির সঙ্গে নেটওয়ার্কিং ও বিটুবি সেশনের সুযোগ তৈরি হবে। বাংলাদেশে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসের সঙ্গে প্রকল্প গ্রহণ ও কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কয়কা), কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সির (কট্রা) মতো কোরিয়ান উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও নীতিগত সহায়তা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং সিক দুদেশের জন্য পারস্পরিক সুবিধা উপস্থাপন করে বলেন, বেসিস কোরিয়া ডেস্ক আইসিটি সেক্টরে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সমন্বয়ের মাইলফলক হবে। বেসিস-কোরিয়া ডেস্ক কোরিয়ার রপ্তানি বাজারকে সমৃদ্ধ করবে। নতুন উদ্যোগ দুই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার কোম্পানির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ব্যবসা সম্প্রসারণ ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা ফলপ্রসূ হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্মসচিব (আইসিটি প্রমোশন ও গবেষণা অনুবিভাগ, অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো: তৈয়বুর রহমান বলেন, বেসিস কোরিয়া ডেস্ক শুধু প্ল্যাটফর্ম নয়: বরং বেসিস সদস্যসহ বাংলাদেশি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য অপার সম্ভাবনার ইঙ্গিত করছে। বেসিস-কোরিয়া ডেস্কের উদ্যোগ বাংলাদেশকে শক্তিশালী আইটি হাব রূপান্তরে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
বেসিস-কোরিয়া ডেস্কের চেয়ারম্যান অ্যাডওয়ার্ড কিম বলেন, বাংলাদেশি ও কোরিয়ান প্রযুক্তি কোম্পানির মধ্যে কৌশলগত বন্ধুত্ব তৈরিতে কাজ করবে ডেস্কটি। নতুন ডেস্কের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যেকার তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের সেক্টরে পারস্পরিক ব্যবসায়িক সুসম্পর্ক তৈরিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রিলিয়ন-ডলারের প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি ও ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই) কৌশলগত সহযোগিতার জন্য আদর্শ মডেল তৈরি করেছে। বাংলাদেশ তার দৃঢ়, প্রাণবন্ত তরুণ জনগোষ্ঠী ও সংস্কারভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্ভাবনী প্রবৃদ্ধির সঙ্গে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।
সভাপতির বক্তব্যে বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির বলেন, বেসিস-কোরিয়া ডেস্ক প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে কোরিয়ার বিশাল বাজারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত করা। ফলে প্রযুক্তি ও জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা আমাদের আইটি পেশাজীবীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।