চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে পা রাখেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার ১০০ দিন পূর্ণ হলো।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে একটি জনসভা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করেন তিনি। অনুষ্ঠানে তিনি অভিযোগ করেন, তার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে কোনো কিছুই তাকে থামাতে পারবে না।

দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মিশিগানে নির্বাচনী প্রচারের আদলে আয়োজিত সমাবেশের মাধ্যমে তার ক্ষমতার ১০০তম দিন উদযাপন করেছেন। এ সময় তিনি ‘কমিউনিস্ট উগ্র বামপন্থী বিচারকদের’ আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, তারা তার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘কোনো কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না।’

এই সমাবেশে একটি ভিডিও দেখানো হয়। ভিডিওতে ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল সালভাদরের একটি কুখ্যাত কারাগারে পাঠানোর দৃশ্য দেখানো হয়। ভিডিওটির সঙ্গে নাটকীয় আবহসংগীত বাজানো হয় এবং উপস্থিত জনতা চিৎকার করে উল্লাস প্রকাশ করে।

সমাবেশে ট্রাম্প দাবি করেন, ‘এই ১০০ দিনে আমরা এমন পরিবর্তন এনেছি, যা গত ১০০ বছরে কেউ আনতে পারেনি।’ তিনি আগের প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তারা সীমান্তে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী ঢুকতে দিয়েছিল এবং এর মাধ্যমে গ্যাং, মাদকচক্র ও সন্ত্রাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে ঢুকে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা চায় গণ অভিবাসন, আর আমরা দিচ্ছি গণ বহিষ্কার।’

ট্রাম্প ১৭৯৮ সালের যুদ্ধকালীন আইন ব্যবহারের পক্ষে সাফাই দেন। এ আইনের মাধ্যমেই তিনি ‘বিদেশি সন্ত্রাসীদের’ দ্রুত বহিষ্কার করতে পারছেন। এরপর তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন, ‘কিছু কমিউনিস্ট উগ্র বিচারক আইনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে এবং প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিজেরা নিতে চাইছে। এটা হতে পারে না। এই বিচারকরা আমাদের দেশ ধ্বংস করতে চায়। কিন্তু আমেরিকাকে সুরক্ষিত রাখার এই মিশনে আমাকে কেউ থামাতে পারবে না।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বৈদেশিক ব্যবসায় কাজ করবে বেসিস-কোরিয়া

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার কোম্পানির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা বাড়াতে বেসিস কোরিয়া ডেস্ক ঘোষণা করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়া উদ্ভাবনমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি দেশ, যেখানে বাংলাদেশের আইসিটি খাতের জন্য রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশি আইসিটি খাতের সব প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কার্যকর অংশীদারিত্ব বাড়াতে পারবে। বেসিস কোরিয়া ডেস্ক হবে কৌশলগত প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে জ্ঞান বিনিময় ও যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ সহজ ও বাজার সম্প্রসারণের দ্বার উন্মোচিত হবে।

নতুন ডেস্ক প্রসঙ্গে বেসিস সহায়ক কমিটির সদস্য (অর্থ) ফৌজিয়া নিগার সুলতানা বলেন, বেসিস কোরিয়া ডেস্কের সদস্যরা এখন থেকে উদ্ভাবনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। যার মধ্যে রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘কোরিয়া ডে’ পালন, কোরিয়ান বাজারে প্রবেশে নীতিগত সহায়তা, কোরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণার সঙ্গে সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা আয়োজন। অন্যদিকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যৌথ উদ্যোগ বা ফ্র্যাঞ্চাইজিংয়ের সুযোগ তৈরি হবে।

উদ্যোক্তারা বলেন, নতুন ডেস্কের কারণে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রাপ্ত ব্যবসায়িক অনুসন্ধান বা লিড সদস্যের মধ্যে শেয়ার করা হবে, কোরিয়াভিত্তিক কয়েকটি আইসিটি ইভেন্টে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকবে। অন্যদিকে কোরিয়ান কোম্পানির সঙ্গে নেটওয়ার্কিং ও বিটুবি সেশনের সুযোগ তৈরি হবে। বাংলাদেশে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসের সঙ্গে প্রকল্প গ্রহণ ও কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কয়কা), কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সির (কট্রা) মতো কোরিয়ান উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও নীতিগত সহায়তা দেওয়া হবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং সিক দুদেশের জন্য পারস্পরিক সুবিধা উপস্থাপন করে বলেন, বেসিস কোরিয়া ডেস্ক আইসিটি সেক্টরে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সমন্বয়ের মাইলফলক হবে। বেসিস-কোরিয়া ডেস্ক কোরিয়ার রপ্তানি বাজারকে সমৃদ্ধ করবে। নতুন উদ্যোগ দুই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও সফটওয়্যার কোম্পানির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ব্যবসা সম্প্রসারণ ও ব্যবসায়িক সহযোগিতা ফলপ্রসূ হবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্মসচিব (আইসিটি প্রমোশন ও গবেষণা অনুবিভাগ, অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো: তৈয়বুর রহমান বলেন, বেসিস কোরিয়া ডেস্ক শুধু প্ল্যাটফর্ম নয়: বরং বেসিস সদস্যসহ বাংলাদেশি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য অপার সম্ভাবনার ইঙ্গিত করছে। বেসিস-কোরিয়া ডেস্কের উদ্যোগ বাংলাদেশকে শক্তিশালী আইটি হাব রূপান্তরে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।

বেসিস-কোরিয়া ডেস্কের চেয়ারম্যান অ্যাডওয়ার্ড কিম বলেন, বাংলাদেশি ও কোরিয়ান প্রযুক্তি কোম্পানির মধ্যে কৌশলগত বন্ধুত্ব তৈরিতে কাজ করবে ডেস্কটি। নতুন ডেস্কের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যেকার তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের সেক্টরে পারস্পরিক ব্যবসায়িক সুসম্পর্ক তৈরিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রিলিয়ন-ডলারের প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি ও ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই) কৌশলগত সহযোগিতার জন্য আদর্শ মডেল তৈরি করেছে। বাংলাদেশ তার দৃঢ়, প্রাণবন্ত তরুণ জনগোষ্ঠী ও সংস্কারভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্ভাবনী প্রবৃদ্ধির সঙ্গে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।

সভাপতির বক্তব্যে বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির বলেন, বেসিস-কোরিয়া ডেস্ক প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে কোরিয়ার বিশাল বাজারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত করা। ফলে প্রযুক্তি ও জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা আমাদের আইটি পেশাজীবীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ