রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার আগারগাঁও এক নারী তার ছেলেকে অপহরণ করার অভিযোগ নিয়ে টহলরত সেনাবাহিনীর কাছে হাজির হন। অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, ওই নারীর ছেলে এবং আরও তিন কিশোরসহ মোট চারজনকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাদের মুক্তির জন্য দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে।

অভিযোগ পাওয়ার পরপরই সেনা টহল দল এই ঘটনার বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। টহল দল অপহৃতদের পরিবারকে কৌশলে অপহরণকারীদের সঙ্গে মুক্তিপণের বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে সময়ক্ষেপণ করে যেতে পরামর্শ দেন, যাতে তাদেরকে হাতে-নাতে গ্রেপ্তার করা যায়। এরই মধ্যে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অপহরণকারীদের অবস্থান নির্ণয় করা হয়।

অতঃপর অপহরণকারীরা মুক্তিপণের বিষয়ে আলোচনার জন্য বাইরে আসে। কিন্তু সেনা ও গোয়েন্দার উপস্থিতি আঁচ করতে পারলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরপর সেনা টহল দল আগারগাঁওয়ের আমতলী বস্তি এলাকা থেকে অপহৃত চার কিশোরকে নিরাপদে উদ্ধার করে।

উদ্ধারকৃত কিশোররা হলো- আমিরুল ইসলামের ছেলে আলভী রহমান (১৫), মো.

সোহেলের ছেলে মো. সজল (২০), আমিনুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (১৬) এবং মো. মেহেদীর ছেলে হৃদয় আহমেদ (১৫)। তারা সবাই আগারগাঁও পাকা মার্কেট শেরেবাংলা নগরের বাসিন্দা।

বুধবার দুপুরে সেনাবাহিনীর ৪৬ বিগ্রেডের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, নিরাপদে উদ্ধার শেষে কিশোরদের তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে আসে এবং সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক ও সফল অভিযান এলাকাবাসীর প্রশংসা অর্জন করে।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর সেনাবাহিনীর সাথে যোগাযোগ করলে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য শেরেবাংলা নগর থানার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। তবে মোহাম্মদপুর সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অপহৃত কিশোরদের সুস্থভাবে উদ্ধার করা গেছে, এটা আমাদের প্রাথমিক সাফল্য। এখন আমরা অপহরণকারীদের আটক করার জন্য অভিযান পরিচালনা করব।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উদ ধ র অপহরণ অপহরণক র র জন য অপহ ত

এছাড়াও পড়ুন:

অপহরণের ৩৪ দিন পর সাতক্ষীরা থেকে যশোরের ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪

অপহরণের ৩৪ দিন পর যশোরের ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলামের লাশ সাতক্ষীরা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার দক্ষিণ একসরা গ্রামের একটি বাগান থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত রেজাউল যশোর শহরের শংকরপুর ইসহাক সড়কের বাসিন্দা। তিনি কাপড় ও পোশাক তৈরির ব্যবসা করতেন। গ্রেপ্তার চারজন হলেন রিপন হাওলাদার (২৮), সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার তালতলা বাজার এলাকার সবুজ (৩৮), সবুজের শ্বশুর একই উপজেলার দক্ষিণ একসরা গ্রামের খোকন মোল্লা (৫২) ও সবুজের স্ত্রী প্রিয়াংকা বেগম (৩৫)।

যশোর কোতোয়ালি থানা-পুলিশের একটি দল লাশ নিয়ে সাতক্ষীরা থেকে যশোরের উদ্দেশে সন্ধ্যায় রওনা দিয়েছে। কাল সোমবার লাশের ময়নাতদন্ত ও আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রেজাউল অপহরণের মামলায় পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি সবুজকে গত শনিবার চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাঁর সহযোগী রিপনকে বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার দক্ষিণ একসরা গ্রামে অভিযান চালিয়ে সবুজের শ্বশুরবাড়ির পাশে এক বাগানে পুঁতে রাখা রেজাউলের লাশ উদ্ধার করা হয়।

জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, কী কারণে রেজাউলকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে, এখনই বলা যাচ্ছে না। নিহত রেজাউল অপহরণের কয়েক দিন আগে নিজের জমি বিক্রি করেন। এরপর তিনি নিখোঁজ হন। পরে তাঁর লাশ উদ্ধার হয়। অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে রেজাউলের ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। জমি বিক্রির টাকা ও ব্যবসার লেনদেনের কারণে অপহরণের পর হত্যা করতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, সবুজ ও রিপন যশোর শহরেই রেজাউলকে হত্যা করেন। পরে তাঁর লাশ বস্তাবন্দী করে ইজিবাইকে কিছু দূর নিয়ে যান। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে ও পরে বাসে করে সাতক্ষীরায় নিয়ে যায়। এরপর সবুজ লাশটি তাঁর শ্বশুরবাড়ির পাশে একটি বাগানে পুঁতে রাখেন। কয়েক দিন পর বিষয়টি জানতে পারেন সবুজের শ্বশুর খোকন মোল্লা। তিনি লাশটি উত্তোলন করে পাশের আরেকটি বাগানে পুনরায় পুঁতে রাখেন। পুলিশের অভিযানে আজ সন্ধ্যার দিকে ওই বাগান থেকেই রেজাউলের লাশ উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম শহরের শংকরপুর এলাকায় কামরুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পাশের ঘর নিয়ে থাকতেন রিপন হাওলাদার ও সবুজ। পাশাপাশি থাকার সুবাদে তাঁদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে রেজাউল ব্যবসার জন্য পৈতৃক সূত্রে পাওয়া বাড়িসহ দুই শতক জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এরপর সবুজ ও রিপনের সহায়তায় জমিসহ বাড়িটি ২১ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। ওই টাকা হস্তান্তরের কথা বলে ২২ মার্চ রাতে রেজাউলকে মুঠোফোনে ডেকে নেন সবুজ ও রিপন। এর পর থেকে রেজাউল আর বাড়ি ফেরেননি। এ ঘটনায় তাঁর পরিবার জিডি করে। খোঁজ না পেয়ে এক সপ্তাহ পর অপহরণ ও গুমের অভিযোগ এনে সবুজ, রিপনসহ অজ্ঞাত দুই থেকে তিনজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।

ওসি আবুল হাসনাত জানান, পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের শনাক্ত করে। এরপর অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সবুজকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাঁরা রেজাউলকে অপহরণ ও হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাইবান্ধায় বাবা-মাকে মারধর করে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ, অভিযুক্ত আটক
  • অপহরণে বাঁধা দেওয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, আটক ৩
  • অপহৃতকে ছেড়ে দিয়ে পালানোর সময় অস্ত্র ও গুলিসহ অপহরণকারী আটক
  • ছাড়া পেলেন অপহৃত কৃষক, এক অপহরণকারী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার
  • চট্টগ্রামে দুই নেতার বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল
  • সিদ্ধিরগঞ্জে মিশুকসহ চালক অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি : ৪ দিনেও মিলেনি সন্ধান
  • অপহরণের ৩৪ দিন পর সাতক্ষীরা থেকে যশোরের ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪
  • সাজার বিরুদ্ধে শফিক রেহমানের আপিল শুনানি শেষ, রায় ১২ মে