প্রথমবারের মতো দেশে সংযোজিত এসইউভি গাড়ি আনল প্রোটন
Published: 30th, April 2025 GMT
র্যানকন কারস লিমিটেড প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে সংযোজিত প্রোটন এক্স৭০ গাড়ি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছে। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত প্রোটন বাংলাদেশের র্যানকন শোরুমে গাড়িটি উদ্বোধনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। নতুন গাড়ির সঙ্গে থাকছে পাঁচ বছর বা দেড় লাখ কিলোমিটার ওয়ারেন্টি। দেশে সংযোজন করা প্রথম প্রোটন এক্স৭০ কেনার সুযোগ মিলছে। গাজীপুরের কাশিমপুর, ভবানীপুরে র্যানকন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে অবস্থিত র্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে এই গাড়ি তৈরি হচ্ছে। প্রোটন এক্স৭০ একটি সি-সেগমেন্টের কমপ্যাক্ট ক্রসওভার এসইউভি, যার নকশা বেশ আকর্ষণীয়। এতে রয়েছে প্রোটনের সিগনেচার ইনফিনিট উইভ গ্রিল, যা গাড়ির সামনের অংশে শক্তিশালী ও আলাদা পরিচয় তৈরি করে।
গাড়িটিতে রয়েছে ইন্টেলিজেন্ট হাই বিম কন্ট্রোল (আইএইচবিসি) হেডল্যাম্প, ডেলাইট রানিং ল্যাম্প (ডিআরএল), অটো রেইন-সেন্সিং ওয়াইপার এবং প্যানোরামিক সানরুফ, যা কেবিনে খোলামেলা ও আরামদায়ক অনুভূতি দেয়। গাড়িটিতে আছে স্টাইলিশ ১৯ ইঞ্চি অ্যালয় রিম এবং ২০০ মিমি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স, যা একে করেছে আরও শক্তিশালী। গাড়িটিতে রয়েছে টাচস্ক্রিন ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেম, যেখানে কথা বলে (হাই প্রোটন) গাড়ির ফিচারগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এতে আছে অনলাইন নেভিগেশন, মিউজিক স্ট্রিমিং, আবহাওয়ার আপডেট, স্মার্টফোন কানেকটিভিটি, ৬টি ইউএসবি পোর্ট, কি-লেস এন্ট্রি, ড্রাইভ মোড সিলেকশন, ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা এবং উন্নত ড্রাইভার অ্যাসিস্টেন্স সিস্টেম (এডিএএস)। প্রোটন এক্স৭০-এ রয়েছে ১.
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে র্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মো. বদিউজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক মান বজায় দেশে গাড়িটি সংযোজন করা হচ্ছে। পাঁচ বছরের ওয়ারেন্টির এই গাড়ির দাম পড়বে ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
অনুষ্ঠানে র্যানকন কারস লিমিটেডের পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রশিদ ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্তমানে প্রিমিয়াম এসইউভির চাহিদা বাড়ছে। প্রোটন বাংলাদেশে গ্লোবাল অ্যালায়েন্সের মাধ্যমে, বিশেষ করে ভলভো ও লোটাসের মতো ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রোটন এক্স৭০ উন্নত প্রযুক্তি ও ডিজাইন নিয়ে এসেছে। বিশ্বমানের এসইউভি আমাদের বাজারে আরও সহজলভ্য করে তুলতে স্থানীয়ভাবে অ্যাসেম্বল একটি বড় পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি। এই গাড়ি থেকে টেকসই ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা মিলবে। গাড়িটি সি-সেগমেন্ট এসইউভি মানে যেসব গাড়ির দৈর্ঘ্য ৪.৪ মিটার থেকে ৪.৬ মিটার সেই ধরনের গাড়ির ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম দামের গাড়ি। সি-সেগমেন্টের এসইউভি মডেলের বিভিন্ন গাড়ির দাম বর্তমানে ৪১ লাখ টাকা থেকে ৮৯ লাখ টাকা পর্যন্ত। সাশ্রয়ের হিসেবে এই গাড়ি এখন পর্যন্ত বাজারের সবচেয়ে সাশ্রয়ী সি-সেগমেন্ট এসইউভি। এই গাড়ির ১.৫ লিটার টার্বোচার্জড টিজিডিআই ইঞ্জিন কম জ্বালানি খরচে বেশি মাইলেজ দেয়। এক লিটার জ্বালানিতে গাড়িটি সর্বোচ্চ ১৪ কিলোমিটার চলতে পারে। ঢাকার যানজটের বিবেচনায় গাড়িটি ৭ কিলোমিটার রাস্তা সহজে যেতে পারছে।
গাড়ির প্রথম ক্রেতা কানাডাপ্রবাসী শেখ সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দেশের বাজারে এখন অনেক মডেলের গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। আমি অনেক দিন ধরে গাড়ি চালাই। নতুন এই মডেলের গাড়িটি চালিয়ে বেশ আনন্দ পাচ্ছি। গাড়িটি চালিয়ে কুয়াকাটা গিয়েছিলাম স্বাচ্ছন্দ্যে।
নিরাপত্তা ও আরামদায়ক যাত্রা নিশ্চিত করতে প্রোটন এক্স৭০-এ যুক্ত করা হয়েছে অ্যাডভান্সড ড্রাইভার অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেম (এডিএএস)। বাংলাদেশের অনিশ্চিত ও জটিল ট্রাফিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এই সিস্টেম নিয়ে এসেছে প্রোটন। গাড়িটিতে রয়েছে অ্যাডাপটিভ ক্রুজ কন্ট্রোল (এসিসি) এবং অটোনোমাস ইমার্জেন্সি ব্রেকিং (এইবি), যা যানজটে চলার সময় নিজে থেকে গতি নিয়ন্ত্রণ করে ও প্রয়োজনে গাড়ি থামিয়ে দেয়। অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য আছে ব্লাইন্ড স্পট ইনফরমেশন সিস্টেম (বিএলআইএস) এবং লেন ডিপারচার ওয়ার্নিং (এলডিডব্লিউ), যা ব্যস্ত বা সংকীর্ণ রাস্তায় বা হাইওয়েতে হঠাৎ লেন পরিবর্তন বা ওভারটেকিংয়ের সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব
সময়ের চেয়েও বেশি দীর্ঘ হলো অপেক্ষা। উত্তেজনার বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে ছিল ফুটবলীয় রোমাঞ্চ। শেষ ১৫ মিনিট যেন পরিণত হলো রূপকথার উপসংহারে—যেখানে আবাহনীর স্বপ্ন থেমে যায়, আর বসুন্ধরা কিংস খুঁজে পায় চতুর্থ ফেডারেশন কাপের সোনালি মুহূর্ত।
বৃষ্টির ছন্দে বিভ্রান্ত হওয়া ফাইনাল আবার শুরু হলো এক সপ্তাহ পর। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচের বাকি অংশ গড়ালো ময়মনসিংহ জেলা স্টেডিয়ামে। যেখানে শুরু থেকেই ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে নামে কিংস। অতিরিক্ত সময়ে কিছুই হল না। তবে অপেক্ষার পুরস্কার মিলল টাইব্রেকারে।
সেখানে বাজিমাত করলেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ। আবাহনীর দ্বিতীয় শট আটকে দিয়ে দলকে দিলেন এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস। আর শেষ শটটি নেন ব্রাজিলিয়ান ড্যাসিয়েল, যা গোললাইন পার হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উৎসবে ফেটে পড়ে কিংস শিবির।
আরো পড়ুন:
যে কারণে এবারের লিগ জয়কে এগিয়ে রাখছেন সালাহ
পাঁচ গোলের রোমাঞ্চকর ফাইনালে শেষ হাসি বার্সার
কিছুদিন আগেই আবাহনীর কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল কিংস। এবার সেই হারের উত্তরটা যেন মিলল একই মঞ্চে, একই কৌশলে— তবে ভিন্ন ফলাফলে। মোরসালিন, তপু, ইনসান, জোনাথন আর ড্যাসিয়েল— কেউই ভুল করেননি। আবাহনীর একমাত্র ব্যর্থ শটটি ছিল নাইজেরিয়ান এমেকার, যা ঠেকিয়ে দেন শ্রাবণ। আর মিরাজুলের চতুর্থ শট, যা প্রথমবার ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন শ্রাবণ। কিন্তু রেফারির সিদ্ধান্তে আবার নিতে হয়। তাতেও গোল হলেও ততক্ষণে কিংস হয়ে গেছে অপ্রতিরোধ্য।
এদিন মাত্র ১৫ মিনিট খেলা হলেও মাঠের উত্তাপ ছিল পূর্ণদৈর্ঘ্য নাটকের মতো। শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখেন আবাহনীর সুমন রেজা ও অধিনায়ক হৃদয়। আগের ম্যাচেও হলুদ-লাল কার্ডে ভরা ছিল দৃশ্যপট। ফুটবল এখানে শুধু কৌশলের খেলা নয় তা যেন হয়ে ওঠে মানসিক স্থিতির পরীক্ষাও।
এই জয়ে বসুন্ধরা কিংস চতুর্থবারের মতো ফেডারেশন কাপ জয় করল। একই সঙ্গে আবাহনীকে প্রথমবার কোনো ফাইনালে হারানোর কৃতিত্বও অর্জন করল তারা। অতীতে দুই ফাইনালে পরাজিত হয়েছিল কিংস। এবার তারা সেই রেকর্ড মুছে দিল নির্ভার ফুটবলে।
ঢাকা/আমিনুল