চসিকের ১০ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অব্যাহত রাখবে ইউনিলিভার
Published: 30th, April 2025 GMT
ইউনিলিভার বাংলাদেশ ২০২৫ সালেও চট্টগ্রামের ব্যবস্থাপনার বাইরে থাকা (অব্যবস্থাপিত) ১০ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়ন প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এই মাইলফলক উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) এবং ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশনের (ইপসা) সহযোগিতায় ইউনিলিভার বাংলাদেশ চট্টগ্রামের একটি হোটেলে একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে। সেখানে তারা তাদের প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উদ্যোগের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে। একইসঙ্গে, অনুষ্ঠানে তিনজন বর্জ্য সংগ্রাহক এবং দুইজন ভাঙারিওয়ালা/সিএসও প্রতিনিধিকে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সমাজ উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা.
২০২২ সালের জুনে ইউনিলিভার বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং ইপসা’র মধ্যে ত্রিপক্ষীয় এই সহযোগিতা শুরু হয়। এই উদ্যোগের মাধ্যমে চট্টগ্রামের ৪১টি ওয়ার্ডে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। উদ্যোগটির আওতায় এখন পর্যন্ত ২৪,০০০ টনের বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যা শহরের মোট বর্জ্যের প্রায় ১০ শতাংশের সমান। এছাড়া, ৩,০০০ এর বেশি বর্জ্যকর্মীকে নিরাপদভাবে বর্জ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০০ জনের বেশি ভাঙারিওয়ালা ও ২,০০০ জনের বেশি বর্জ্য সংগ্রাহককে সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম এবং ব্যবসায়িক উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে আরও দক্ষ করে তোলা হয়েছে।
কর্মপদ্ধতি উন্নয়নের পাশাপাশি, এই উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে টেকসই জীবিকা ও দীর্ঘমেয়াদি কমিউনিটি উন্নয়নের পথও তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, ১,৮২৭ জন বর্জ্যকর্মী ও ভাঙারিওয়ালার জন্য একটি গ্রুপ ইন্স্যুরেন্স কর্মসূচি চালু করা হয়েছে, যেখানে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু হলে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত জীবনবীমার সুবিধা রয়েছে। চিকিৎসার খরচ, যেমন-ডাক্তার ফি, হাসপাতালের খরচ ও ওষুধের খরচও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এসব আর্থিক নিরাপত্তা এবং সামাজিক সুরক্ষা সুবিধাগুলো এই ঝুঁকিপূর্ণ পেশাজীবীদের জন্য বড় ধরনের সহায়তা নিয়ে এসেছে। জনসচেতনতা তৈরিতেও এই প্রকল্পে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৫,০০০টিরও বেশি পরিবারের মাঝে এবং ৭১টি স্কুলের ৭,০০০ এরও বেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে উৎসস্থলেই বর্জ্য পৃথক করার বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর জ য স গ র ইউন ল ভ র ব
এছাড়াও পড়ুন:
বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার পরামর্শ
রপ্তানি খাতকে প্রতিযোগী সক্ষম করতে আইএমএফের পরামর্শ মেনে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়হার বাজারভিত্তিক করতে হবে। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক অর্থনীতিকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। সবচেয়ে প্রভাব পড়বে উৎপাদন ও সেবা খাতে। অথচ বিশ্ব বাণিজ্যিক সংস্থা ঘুমাচ্ছে। আইসিসি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানে ওয়েস্টিন হোটেলে ‘বিশ্বব্যাপী আর্থিক প্রবণতা ও সংস্কার; বাংলাদেশের ওপর প্রভাব’ শীর্ষক ডায়ালগে এমন মতামত উঠে আসে। ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশ এ ডায়ালগের আয়োজন করে।
আইসিসি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জাকির হোসেন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন আইসিসি বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হা–মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইসিসি গ্লোবাল ব্যাংকিং কমিশনের চেয়ারম্যান ফ্লোরিয়ান উইট।
মূল প্রবন্ধে আইসিসি গ্লোবাল ব্যাংকিং কমিশনের চেয়ারম্যান ফ্লোরিয়ান উইট বলেন, এআই বৈশ্বিক আর্থিক খাতের ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে এগিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে একটি পরিবর্তন আসবে। কোনো কারণে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচি আটকে গেলে বাংলাদেশের ঋণমান কমে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বিনিময়হার বাজারভিত্তিক করা, না করা নিয়ে বিতর্কের মধ্যে আইএমএফ ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি আটকে আছে।
আইসিসিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট এ. কে. আজাদ বলেন, বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে প্রতিবছর কৃষি খাতের অবদান কমছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে শিল্প ও সেবা খাত। দেশের রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি এককভাবে আসছে তৈরি পোশাক থেকে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক উৎপাদন খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উৎপাদন খাত ক্ষতির মুখে পড়লে স্বাভাবিকভাবে সেবা খাত ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে। বাড়তি শুল্ক দেশের অর্থনীতিকে কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে সে বিষয়ে আইসিসি বাংলাদেশ একটি জরিপ করতে পারে। এছাড়া সরকারি–বেসরকারি খাতের সবাইকে নিয়ে একটি সেমিনার আয়োজন করতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের তুলনায় অনেক দেশ এখন প্রতিযোগী সক্ষমতায় এগিয়ে আছে। ব্যাংককের সুদহার ২ থেকে ৩ শতাংশ। পাকিস্তানের বিনিময়হার অনেক বেশি। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভারতসহ যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সুদহার বেশি। এখনই নীতি সহায়তার মাধ্যমে উৎপাদন খাতকে প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
আলোচনায় আরও অংশ নেন– বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) ও ঢাকা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার, ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন, বিআইবিএমের অধ্যাপক ড. শাহ মো. আহসান হাবিব, এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব উর রহমান, এডিবির বাংলাদেশ অফিসের প্রাইভেট সেক্টর অপারেশন্স বিভাগের লিড ইনভেস্টমেন্ট অফিসার বিদ্যুৎ কুমার সাহা এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের কর্পোরেট, বাণিজ্যিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংকিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান এনামুল হক।