বকেয়া বেতনের দাবিতে টঙ্গীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, দুই ঘণ্টা পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
Published: 30th, April 2025 GMT
বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত খাঁপাড়া এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেড নামের একটি কারখানার শ্রমিকদের এ কর্মসূচির কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে মহাসড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে দুর্ভোগে পড়েন চলাচলকারী যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পরে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
শিল্প পুলিশ ও শ্রমিকদের সূত্রে জানা যায়, কারখানাটির দেড় হাজার শ্রমিক সকালে কাজে যোগ দিয়ে মার্চ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি জানান। তবে কর্তৃপক্ষ পরিশোধের তারিখ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে না পারায় শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এর কিছুক্ষণ পর তাঁরা স্লোগান দিয়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এশিয়া পাম্প বাসস্ট্যান্ড নামের এলাকায় অবস্থান নেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শিল্প ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এতে শ্রমিকেরা আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে এবং গরম পানি ছিটিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বিক্ষোভরত কয়েকজন শ্রমিক জানান, ঈদের আগে তাঁদের অর্ধেক বেতন-বোনাস দিয়ে কারখানা ছুটি দেওয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়, ঈদের পরই বাকি টাকা পরিশোধ হবে। কিন্তু এখনো কিছু পাননি তাঁরা। এ জন্য ঘরভাড়া ও দোকানের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছেন না।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ইসমাইল হোসেন জানান, শ্রমিকেরা মহাসড়ক থেকে সরে যাওয়ায় আজ বেলা ১১টা থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর শ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
ঈশ্বরগঞ্জের সাবেক ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা, জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ
প্রধান আসামির নাম না দিয়ে মামলা নথিভুক্ত করায় ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ওসি ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে করা মামলাটি জুডিশিয়াল তদন্তের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক একেএম ছিফাতুল্লাহ এ আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৭ এপ্রিল আদালতে মামলার আবেদন করেন গিয়াস উদ্দিন নাামে এক ব্যক্তি। ওইদিনই বিচারক একেএম ছিফাতুল্লাহ আবেদনটি আমলে নেওয়ায় রেজিস্ট্রার খাতায় মামলা (২৭৭/২৫) হিসেবে নথিবদ্ধ করা হয়।
আসামিরা হলেন- তৎকালীন ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান, তিনি পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হয়েছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন। সাবেক এসআই মো. মাজহারুল ইসলাম পদোন্নতি পেয়ে পরিদর্শক (ওসি) হয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি কোথায় কর্মরত তা জানা যায়নি।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, “মামলাটি তদন্ত করবেন ময়মনসিংহ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৭ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসাইন। কতদিন তদন্ত চলবে তা বিচারকের ওপর নির্ভর করবে।”
মামলা সূত্রে জানা যায়, গিয়াস উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী নজরুল ইসলামের পরিবারের পূর্ব বিরোধ ছিল। ২০১০ সালের ২৭ নভেম্বর দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এসময় প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল ইসলামের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান কুপিয়ে জখম করে। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরার কিছুদিন পর আবারো অসুস্থ হয়ে পড়েন শফিকুল। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে আবারও বাসায় নিয়ে আসা হয়। বাসায় কয়েক বছর স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা চলছিল তার। ২০১৫ সালে গুরুতর অসুস্থ হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় শফিকুলকে। কয়েকদিন চিকিৎসা শেষে বসায় নিয়ে আসার পরদিন (একই বছরের ২ জানুয়ারি) মারা যান শফিকুল ইসলাম।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে ঈশ্বরগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি মো. মিজানুর রহমান মামলা নেননি। এমতাবস্থায় ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
ওই দিনই অভিযোগ থানায় এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ করতে থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারক। ওসি মো. মিজানুর রহমান এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ না করে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মাজরুল ইসলামের মাধ্যমে বাদী গিয়াস উদ্দিনকে জানান মামলাটি থানায় এসেছে। আপনার (বাদীর) টিপসই লাগবে। বাদী সরল মনে ওসি ও এসআইয়ের কথা বিশ্বাস করে টিপসই দেন।
পরবর্তীতে আদালত থেকে বাদী মামলার কপি তুলে দেখেন, অন্য একটি মামলা লিখে বাদীর স্বাক্ষর নেওয়া, যে মামলাটি এজহার হিসেবে নথিবদ্ধ করেন তাতে বাদীর নালিশি মামলার ১ নম্বর আসামি নজরুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে বাদীর ভাতিজা মো. আবদুর রশিদের নাম লিখে রাখা হয়েছে।