গত কয়েক দিনে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি করা হয়েছে একঝাঁক অভিনয়শিল্পীকে। প্রথমে ইরেশ যাকের, তারপর সুবর্ণা মুস্তাফা, অপু বিশ্বাস, নুসরাত ফারিয়া, নিপুণসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর নাম প্রকাশ্যে এসেছে। গতকাল অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর ও লাঞ্ছিত করে রাজধানীর রমনা থানায় সোপর্দ করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চর্চা চলছে। এ নিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।

সিদ্দিকের ওপর হামলা ও লাঞ্ছনা ঘটনা নিয়ে আজাদ আবুল কালাম গণমাধ্যমে বলেন, “সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, এটা তো মব। এই মব ভায়োলেন্সকে তো ঠেকাচ্ছে না। কেন যেন মনে হচ্ছে, মব ভায়োলেন্সকে নীরবে বলা হচ্ছে, করে যাও। আমাদের কিছুই করার নেই। একজনের রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা থাকতে পারে। অভিনেতা হিসেবে সিদ্দিক সবার কাছে পরিচিত। কিছু লোক তাকে এভাবে রাস্তায় ধরে মেরে দেবে!”

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে আজাদ আবুল কালাম বলেন, “দলবদ্ধভাবে সিদ্দিককে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে, আক্রমণ করেছে, গায়ে থেকে জামাকাপড় খুলে ফেলেছে, এরপর থানায় সোপর্দ করেছে। থানায় যদি সোপর্দ করতেই হয়, তাহলে প্রথমে কেন আইন হাতে তুলে নিল? তাকে হেনস্তা করে আইনের হাতে তুলে দেবে— এই মব জাস্টিস, মব ভায়োলেন্স সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। এটা তো একটা সময় নানা স্তরে হবে। এসব কর্মকাণ্ড সরকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে, যেখানে মব ভায়োলেন্স, সেখানে কঠোর হস্তে দমন করবে।”

আরো পড়ুন:

অভিনেতা সিদ্দিককে গণধোলাই দিয়ে থানায় সোপর্দ

‘শুনেছি আমার বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিল সেই বাদী থানায় আটক আছে’

ঢালাওভাবে অভিনয়শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়ে বিস্মিত আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, “ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হচ্ছে! দেখে মনে হচ্ছে, সবাইকে মামলার মধ্যে ফেলতে হবে। ৩০০-৪০০ জন মামলার আসামি, এটা অবাস্তব একটা অবস্থা। একজন সুবর্ণা মুস্তাফার মতো শিল্পী রাস্তায় গিয়ে মানুষকে গুলি করবে? যে মানুষটি মামলা করেছেন, তিনি আন্দোলনের সময় আহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন; তিনি মামলা করেছিলেন অনেক লোকের নামে। মামলার নথিতে শিল্পীদের অনেকের নাম দেখলাম, তারা রাস্তায় নেমে মানুষকে গুলি করবে!”

সরকারিভাবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা উচিত বলে মনে করেন আজাদ আবুল কালাম। তিনি বলেন, “সরকারিভাবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও উচিত হবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা। নিরুৎসাহিত করা। যে ব্যক্তি মামলা করছেন, যদি প্রমাণিত হয়, শিল্পীরা কেউই গুলি করেনি, তখন তো এটা মিথ্যা মামলা হবে। এ রকম মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে, যে ব্যক্তি শিল্পীদের নামে মামলা করেছেন, তার কী শাস্তি হবে, তারও বিধান থাকতে হবে।”

“কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে, তা জানানোর একটা প্রক্রিয়া আছে। শুধু শিল্পী না, একজন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে আপনি তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত তাকে অপরাধী বলতে পারেন না। তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে পারেন না। মামলা করে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা শুরু করলেন, এই প্রক্রিয়া যদি চলতে থাকে, এটাই যদি আমাদের মনস্তত্ত্ব হয়, তাহলে বিভক্তি আরো বাড়বে।” বলেন আবুল কালাম আজাদ।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র মব ভ য় ল ন স স পর দ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ভিন্নমত দমনে চীনা শাসক গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছেন জ্যাক মা!

ভিন্নমত দমনে চীনের শাসক গোষ্ঠীকে সহায়তা করছেন আলিবাবার সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ধনকুবের জ্যাক মা। তাঁর বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীকে চাপে ফেলার অভিযোগ-সংক্রান্ত কিছু নথি গার্ডিয়ানের হাতে এসেছে। এসব নথিতে দেখা গেছে, জ্যাক মা চীনের শাসক গোষ্ঠীর হয়ে কীভাবে ভিন্নমত দমনে সহায়তা করছেন। 

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে ওই ব্যবসায়ীকে ‘এইচ’ নামে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি চীন থেকে অনেক বছর ধরে বিতাড়িত। তাঁর পরিবারের সদস্যরা থাকেন চীনে। চীনা কর্তৃপক্ষ এইচের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রোড নোটিশ জারি করেছে। চীন সরকার তাঁকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে জ্যাক মার সহায়তা নেয়। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জ্যাক মা ওই ব্যবসায়ীকে ফোন করেছিলেন। 

চীন ইতোমধ্যে ব্যবসায়ী এইচ’কে ফিরিয়ে আনতে নানা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। তাঁর বোনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে ওই ব্যবসায়ীর কাছে ফোন করেন জ্যাক মা। তিনি তাঁকে দেশে ফিরতে পরামর্শ দেন। তারা দু’জন বহু বছর ধরে একে অপরের পরিচিত। চীনা কর্মকর্তারাও নানাভাবে এইচকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করছেন। 

সম্প্রতি ফরাসি আদালতে অভিযোগটি উত্থাপিত হয়েছে। সেখানে জ্যাক মা’র ফোন কলের ট্রান্সক্রিপ্ট প্রমাণ হিসেবে তোলা হয়েছে। নথিতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে চীনা শাসক গোষ্ঠী দেশের বাইরেও ভিন্নমত দমনে তৎপর। তবে যুক্তরাজ্যের চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র চীনের আন্তর্জাতিকভাবে ভিন্নমত দমনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪৮ বছর বয়সী ব্যবসায়ী ‘এইচ’ সিঙ্গাপুরের চীনা বংশোদ্ভূত নাগরিক। তিনি যখন মার কাছ থেকে ফোন পান, তখন তিনি ফ্রান্সের বোর্দো বন্দর শহরে অবস্থান করছিলেন। এক বছর আগে চীনা পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছিল। তারপর ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছিল। ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে ওই ব্যবসায়ীর পাসপোর্ট জব্দ করে।

নথিতে পাওয়া গেছে, ফোন কলে জ্যাক মা ওই ব্যবসায়ীকে বলেছিলেন, চীন সরকার সানের বিচার করতে চায়। আপনাকে তারা কিছু বলবে না। জ্যাক মা পরামর্শ দেন, তিনি যদি চীনা রাজনীতিবিদ সান লিজুনের বিচারকাজে সহায়তা করেন, তাহলে তাঁর সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে। 

সান ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) একজন সাবেক নেতা। ঘুষগ্রহণ ও শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির জন্য তাঁর বিচার হচ্ছে। সান চীনের সাবেক উপ-নিরাপত্তামন্ত্রী। হংকংয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হলে তাঁর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আসে।  
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সানের মতো জ্যাক মাও শির শাসনের প্রতি আনুগত্য হারিয়ে ফেলে রোষানলে পড়েন ২০২০ সালে। তাঁকে একটি ঘটনায় ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার জরিমানাও করা হয়। জ্যাক মা ওই ব্যবসায়ীকে এও বলেছিলেন, তাঁর কথা শুনে দেশে ফিরে এলে তাঁর (এইচ) লাভ হবে। তা না হলে ফাঁসির দড়ি আরও শক্ত হবে। পরে জ্যাক মাকে চীনা সরকারের আনুগত্যে ফিরে আসতে দেখা যায়। তবে গার্ডিয়ানের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি। 

 
 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি
  • একাধিক সুযোগ পেয়েও কেন রাজনীতিতে জাড়াননি প্রীতি জিনতা
  • সুযোগ পেয়েও কেন রাজনীতিতে জাড়াননি প্রীতি জিনতা
  • রাজনীতিতে না জাড়ানোর কারণ জানালেন প্রীতি জিনতা
  • অনেকের মধ্যেও একাকীত্ব বোধ করছেন? ভালো থাকবেন যেভাবে
  • ‘আমি যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছি, সে দেখতে চাকরানীর মতো’
  • সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করার জেরে তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতি
  • সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা মব ভায়োলেন্স: শিল্পী সংঘের সভাপতি
  • ভিন্নমত দমনে চীনা শাসক গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছেন জ্যাক মা!