তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে স্কয়ার ফার্মার
Published: 30th, April 2025 GMT
চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) মুনাফা কমেছে স্কয়ার ফার্মার। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটের ঘোষণায় জানা গেছে, তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ৬ দশমিক ৮৩ টাকা; ২০২৪ সালের একই সময় যা ছিল ৫ দশমিক ৫৫ টাকা। অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ইপিএস বেড়েছে প্রায় ২৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
সামগ্রিকভাবে চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত স্কয়ার ফার্মার মুনাফা বেড়েছে। জুলাই ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত ৯ মাসে কোম্পানিটির সম্মিলিত ইপিএস দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ১৫ টাকা; জুলাই ২০২৩ থেকে মার্চ ২০২৪ সময় যা ছিল ১৮ দশমিক ২৪ টাকা। এ সময় কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ১৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে স্কয়ার ফার্মার শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো বা নগদ প্রবাহ কমেছে। এই সময় নগদ প্রবাহ ছিল ১১ টাকা ৯০ পয়সা; আগের অর্থবছরের একই সময়ে অর্থপ্রবাহ ছিল ১৭ দশমিক ৩২ টাকা। ৩১ মার্চ ২০২৪ তারিখে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য ছিল ১৫১ দশমিক ৯৪ টাকা। ২০২৪ সালের ৩০ জুন তারিখে যা ছিল ১৪২ দশমিক শূন্য ৫ টাকা।
২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত দেশে শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং নগদ প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ওই সময় দেশীয় ক্রেতাদের অতিরিক্ত ঋণসুবিধা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোম্পানি বিমা দাবি পেয়েছে। সেই সব কারণ এখন আর নেই। ফলে তা কমে এসেছে।
গত অর্থবছর রেকর্ড লভ্যাংশ দিয়েছে দেশের স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। গত জুনে সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ১১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। গত বুধবার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় লভ্যাংশের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে সব ধরনের খরচ ও কর বাদ দেওয়ার পর স্কয়ার ফার্মা প্রকৃত মুনাফা করেছে ২ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই মুনাফার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে স্কয়ার ফার্মার মুনাফা ১৯৫ কোটি টাকা বা সোয়া ১০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকা ৬১ পয়সায়। আগের বছর যার পরিমাণ ছিল ২১ টাকা ৪১ পয়সা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০২৪ স প রব হ দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
৯ মাসে ১৪ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা
দেশের শীর্ষস্থানীয় রড উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএমের দুই কোম্পানি মিলে ৯ মাসে ১৪ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। কোম্পানি দুটি হলো বিএসআরএম লিমিটেড ও বিএসআরএম স্টিল। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিএসআরএমের এই দুটি কোম্পানিরই মূল ব্যবসা রডের।
চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই–মার্চ) কোম্পানি দুটি সম্মিলিতভাবে এই ব্যবসা করেছে। গত ২০২৩–২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানি দুটির সম্মিলিত ব্যবসা ছিল ১২ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিএসআরএমের ব্যবসা বেড়েছে ১ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা বা ১৩ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের যে আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানি দুটি প্রকাশ করেছে, তা থেকে তাদের ব্যবসার এই চিত্র পাওয়া গেছে। গত সোমবার কোম্পানি দুটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। গতকাল বুধবার তা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে। আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত কোম্পানি দুটি ১৪ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকার যে ব্যবসা করেছে, তার মধ্যে বিএসআরএম লিমিটেডের ব্যবসা ৬ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকার। আর বিএসআরএম স্টিলের ব্যবসার পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। ব্যবসা বৃদ্ধি পাওয়ায় কোম্পানি দুটি মুনাফাও বেড়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানির ব্যবসা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে। কারণ, আমাদের নতুন একটি কারখানা এ সময়ের মধ্যে উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে। তপন সেনগুপ্ত, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিএসআরএম গ্রুপবিএসআরএম লিমিটেড চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে মুনাফা করেছে ৪১৫ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩৩৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ৮১ কোটি টাকা বা ২৪ শতাংশের বেশি। আর চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে বিএসআরএম স্টিল মুনাফা করেছে ৩০২ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২৭৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ২৩ কোটি টাকা বা সোয়া ৮ শতাংশ।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে মার্চ—এই ৯ মাসে সম্মিলিতভাবে কোম্পানি দুটি মিলে ৭১৭ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৬১৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানি দুটির সম্মিলিত মুনাফা ১০৪ কোটি টাকা বা ১৭ শতাংশ বেড়েছে।
মুনাফা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে কোম্পানি–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৯ মাসে নতুন একটি কারখানার উৎপাদনে এসেছে। তাতে কোম্পানির বিক্রি বেড়েছে। ব্যবসা বৃদ্ধি পাওয়ায় মুনাফাও বেড়েছে। পাশাপাশি উৎপাদন খরচ কমাতেও সচেষ্ট ছিল কোম্পানিটি। এসব কারণে কোম্পানির মুনাফায় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বর্তমানে বিএসআরএমের রড তৈরির তিনটি কারখানা রয়েছে। চট্টগ্রামের মিরসরাই, ফৌজদারহাট ও নাসিরাবাদে—তিনটি কারখানা অবস্থিত। এই তিন কারখানার মধ্যে মিরসরাই ও ফৌজদারহাটের কারখানা দুটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিএসআরএম স্টিলের আওতাধীন। আর নাসিরাবাদের কারখানাটি বিএসআরএম লিমিটেডের আওতায় রয়েছে। দুটি কোম্পানিরই মূল ব্যবসা রডের। তবে বিএসআরএম লিমিটেডের ব্যবসার সঙ্গে রডের বাইরে এঙ্গেল, চ্যানেলের আয়ও যুক্ত হয়।
বিএসআরএমের ব্যবসা ও মুনাফা বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানিটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানির ব্যবসা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে। কারণ, আমাদের নতুন একটি কারখানা এ সময়ের মধ্যে উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে। যদিও কারখানাটিতে এখনো পুরোদমে উৎপাদন শুরু হয়নি। তারপরও আংশিক উৎপাদন শুরুর কারণে বিক্রি বেড়েছে। আবার উৎপাদন খরচ কমানোর ক্ষেত্রে আমরা সচেষ্ট ছিলাম। এসব কারণে মুনাফা বেড়েছে।’
অর্থবছরের ৯ মাসের পাশাপাশি চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের আয়–ব্যয়ের হিসাবও আলাদাভাবে প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। তাতে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিএসআরএম লিমিটেড ২ হাজার ৯১৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ৫৯৭ কোটি টাকার। ব্যবসা বৃদ্ধি পাওয়ায় মুনাফাও বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিএসআরএম লিমিটেড মুনাফা করেছে ২২৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৪৭ কোটি টাকা।
একইভাবে বিএসআরএম স্টিল চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ব্যবসা করেছে ৩ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকার। এ সময় কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ১৬২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে কোম্পানিটির ব্যবসা বেড়েছে ৬০২ কোটি টাকা। আর মুনাফা বেড়েছে ৩৭ কোটি টাকা।