বিষণ্ণতা একটি মানসিক রোগ যা একজন ব্যক্তিকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে প্রভাবিত করে। যখনই কোনও ব্যক্তি খুব বেশি চিন্তা করতে শুরু করে বা তার জীবনে এমন কোনও ঘটনা ঘটে যা তাকে কষ্ট দেয়, তখনই সে হতাশায় পড়তে শুরু করে। এখনকার ব্যস্ত জীবনে একাকীত্ব একটি বড় মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে উঠছে। অনেক সময় এমন হয় আমরা অনেকের মধ্যে থেকেও সম্পূর্ণ একা এবং বিচ্ছিন্ন বোধ করি।

বিষণ্ণতায় ভুগলে একাকীত্ব, অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা, খাওয়ার ইচ্ছা না থাকা, উদ্বেগ এবং অনিদ্রার মতো অনেক লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এই অনুভূতিটি সময়মতো সনাক্ত না করা হয় এবং এটি মোকাবেলা করার জন্য ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে। 

কেন আমরা অনেকের মধ্যে ও একাকীত্ব বোধ করি?

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগের অভাব, আত্মবিশ্বাস, আত্মসম্মানবোধের অভাব এবং মানসিক দ্বন্দ্ব একাকীত্বের অনুভূতি বাড়ায়। যখন কারও মনে হয় কেউ তাকে বোঝে না বা তার অনুভূতিগুলি উপেক্ষা করছে তখন অনেকের মধ্যেও সে একাকী বোধ করতে শুরু করে।

বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, একাকীত্ব বোধ করা স্বাভাবিক, কিন্তু যদি এই অনুভূতি দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, তাহলে এটিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। সামাজিক সংযোগ এবং আপনার অনুভূতির প্রকাশ মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

একাকীত্ব বোধ করলে কী করবেন-

নিজের অনুভূতিগুলি বুঝুন : প্রথম পদক্ষেপ হল আপনার অনুভূতিগুলিকে না এড়িয়ে স্বীকার করুন। নিজেকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুনম, ‘আমি কেমন বোধ করছি?’ এবং ‘কেন’? এমন বোধ করছি ইত্যাদি।

বিশ্বস্ত কারো সাথে কথা বলুন: বন্ধু, পরিবারের সদস্য, অথবা মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সাথে খোলামেলা কথা বলুন। অনেক সময় শেয়ারিং মন শান্ত করতে এবং সমাধান খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারে।

ইতিবাচক কার্যক্রমে যুক্ত হোন: শখ, খেলাধুলা, যোগব্যায়াম, সঙ্গীত বা নতুন দক্ষতা শেখার মতো কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকুন। এসব কার্যক্রম মানসিক শক্তিকে সঠিক দিকে পরিচালিত করতে সাহায্য করে।

একটি স্বাস্থ্যকর রুটিন বজায় রাখুন: নিয়মিত ঘুম, সুষম খাবার খাওয়া এবং ব্যায়াম আপনার মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

পেশাদার কারও সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না: যদি একাকীত্বের অনুভূতি দীর্ঘ সময় ধরে থাকে এবং দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করতে শুরু করে, তাহলে একজন কাউন্সিলর বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র অন ভ ত

এছাড়াও পড়ুন:

ভিন্নমত দমনে চীনা শাসক গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছেন জ্যাক মা!

ভিন্নমত দমনে চীনের শাসক গোষ্ঠীকে সহায়তা করছেন আলিবাবার সহপ্রতিষ্ঠাতা ও ধনকুবের জ্যাক মা। তাঁর বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীকে চাপে ফেলার অভিযোগ-সংক্রান্ত কিছু নথি গার্ডিয়ানের হাতে এসেছে। এসব নথিতে দেখা গেছে, জ্যাক মা চীনের শাসক গোষ্ঠীর হয়ে কীভাবে ভিন্নমত দমনে সহায়তা করছেন। 

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে ওই ব্যবসায়ীকে ‘এইচ’ নামে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি চীন থেকে অনেক বছর ধরে বিতাড়িত। তাঁর পরিবারের সদস্যরা থাকেন চীনে। চীনা কর্তৃপক্ষ এইচের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রোড নোটিশ জারি করেছে। চীন সরকার তাঁকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে জ্যাক মার সহায়তা নেয়। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জ্যাক মা ওই ব্যবসায়ীকে ফোন করেছিলেন। 

চীন ইতোমধ্যে ব্যবসায়ী এইচ’কে ফিরিয়ে আনতে নানা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। তাঁর বোনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে ওই ব্যবসায়ীর কাছে ফোন করেন জ্যাক মা। তিনি তাঁকে দেশে ফিরতে পরামর্শ দেন। তারা দু’জন বহু বছর ধরে একে অপরের পরিচিত। চীনা কর্মকর্তারাও নানাভাবে এইচকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করছেন। 

সম্প্রতি ফরাসি আদালতে অভিযোগটি উত্থাপিত হয়েছে। সেখানে জ্যাক মা’র ফোন কলের ট্রান্সক্রিপ্ট প্রমাণ হিসেবে তোলা হয়েছে। নথিতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে চীনা শাসক গোষ্ঠী দেশের বাইরেও ভিন্নমত দমনে তৎপর। তবে যুক্তরাজ্যের চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র চীনের আন্তর্জাতিকভাবে ভিন্নমত দমনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪৮ বছর বয়সী ব্যবসায়ী ‘এইচ’ সিঙ্গাপুরের চীনা বংশোদ্ভূত নাগরিক। তিনি যখন মার কাছ থেকে ফোন পান, তখন তিনি ফ্রান্সের বোর্দো বন্দর শহরে অবস্থান করছিলেন। এক বছর আগে চীনা পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছিল। তারপর ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছিল। ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে ওই ব্যবসায়ীর পাসপোর্ট জব্দ করে।

নথিতে পাওয়া গেছে, ফোন কলে জ্যাক মা ওই ব্যবসায়ীকে বলেছিলেন, চীন সরকার সানের বিচার করতে চায়। আপনাকে তারা কিছু বলবে না। জ্যাক মা পরামর্শ দেন, তিনি যদি চীনা রাজনীতিবিদ সান লিজুনের বিচারকাজে সহায়তা করেন, তাহলে তাঁর সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে। 

সান ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) একজন সাবেক নেতা। ঘুষগ্রহণ ও শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির জন্য তাঁর বিচার হচ্ছে। সান চীনের সাবেক উপ-নিরাপত্তামন্ত্রী। হংকংয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের সময় নিরাপত্তা তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হলে তাঁর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আসে।  
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সানের মতো জ্যাক মাও শির শাসনের প্রতি আনুগত্য হারিয়ে ফেলে রোষানলে পড়েন ২০২০ সালে। তাঁকে একটি ঘটনায় ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার জরিমানাও করা হয়। জ্যাক মা ওই ব্যবসায়ীকে এও বলেছিলেন, তাঁর কথা শুনে দেশে ফিরে এলে তাঁর (এইচ) লাভ হবে। তা না হলে ফাঁসির দড়ি আরও শক্ত হবে। পরে জ্যাক মাকে চীনা সরকারের আনুগত্যে ফিরে আসতে দেখা যায়। তবে গার্ডিয়ানের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি। 

 
 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি
  • একাধিক সুযোগ পেয়েও কেন রাজনীতিতে জাড়াননি প্রীতি জিনতা
  • সুযোগ পেয়েও কেন রাজনীতিতে জাড়াননি প্রীতি জিনতা
  • রাজনীতিতে না জাড়ানোর কারণ জানালেন প্রীতি জিনতা
  • সিদ্দিককে লাঞ্ছিত, শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা: যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি
  • ‘আমি যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছি, সে দেখতে চাকরানীর মতো’
  • সংস্কৃতি উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করার জেরে তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতি
  • সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা মব ভায়োলেন্স: শিল্পী সংঘের সভাপতি
  • ভিন্নমত দমনে চীনা শাসক গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছেন জ্যাক মা!