কেন কেউ কেউ পাশের বাসার আন্টি ও আঙ্কেল হয়ে ওঠেন
Published: 30th, April 2025 GMT
এই আন্টি বা আঙ্কেলদের আপনি চেনেন। জীবনে একবার হলেও আপনি তাঁদের ‘ফেস’ করেছেন। তাঁরা আপনার সুখের সময়ে যেমন থাকেন, দুঃখের সময়েও চারপাশে ঘোরেন। তবে সব সময় আপনার আশপাশে থাকলেও তাঁদের যখন যে ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার কথা, তাঁরা তা করেন না। আবার তাঁরা যে নিজের কাজটা করছেন না, সেটা আপনি সাদা চোখে বুঝতেও পারবেন না। কখনো মনে হবে তাঁরা আপনার খুবই আপনজন, কিন্তু বেশির ভাগ সময় সেটা ঠিক নয়। এই আন্টি বা আঙ্কেলরা আপনার সামনে যেটা বলছেন, সে সময়ে তাঁদের মন বলছে অন্য কথা। তাই ‘মাইন্ড রিডার’ না হয়েও চোখ–কান খোলা রেখে আপনি তাঁদের চিনে নিতে পারেন। কারণ, তাঁরা ‘পাশের বাসার আন্টি/ আঙ্কেল’। তাঁদের যেমন আপনার দরকার, তাঁদের এড়িয়ে চলাও সমান দরকার।
এই আন্টি ও আঙ্কেলরা আদতে যেমনআপনি চান বা না চান, শিশুকাল থেকে এই আন্টিরা আপনার পিছু নেবেন। জীবনের একেক পর্যায়ে এই আন্টিদের দেখা পাবেন একেকভাবে। আপনার ছোটবেলায় তাঁরা স্কুলের গেটে দাঁড়িয়ে অকারণে বেছে বেছে কম নম্বর পাওয়া ছেলে–মেয়েদের সঙ্গে নিজের সন্তানের তুলনা করবেন। আপনার মা–বাবার সামনে এমনভাবে আন্টিরা তাঁদের সন্তানের প্রশংসা করবেন, যেন বাড়ি ফিরতে ফিরতেই আপনার পিঠে দুই–চার ঘা পড়ে। পড়বেও। মায়েরা এই আন্টিদের সন্তানের গুণপনার কথা শুনে আপনার সঙ্গে তুলনা টানবেন কথায় কথায়। অথচ তাঁরা কেউই জানবেন না, স্কুলের সদর দরজা দিয়ে সন্তান ভেতরে ঢুকে যাওয়ার পর কে কেমন, সেটা আন্টিদের চেয়ে এই শিশুরাই ভালো জানে। হয়তো ওরাই একজন আরেকজনের ভালো বন্ধু। ভালো সহপাঠী। একজন ক্লাসের নোট নিতে না পারলে, অন্যজন তাকে সাহায্য করে। টিফিন ভাগাভাগি করে খায়। স্কুলের সদর দরজায় অপেক্ষায় থাকা এই আন্টিরা জানতেও পারেন না তাঁদের ‘ভালো ছেলে’ আদতে অতটা ভালোও নয়। আগের দিনই হয়তো সে স্কুলের পাঁচিল টপকে দুই ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ঘুরে এসেছে বাইরে।
আরও পড়ুনআত্মীয় হিসেবে আপনি কেমন? জেনে নিন এই ১০ প্রশ্নে২৮ এপ্রিল ২০২৪এটা তো গেল স্কুল–কলেজের আন্টিদের কথা। যাঁদের সঙ্গে একটা নির্দিষ্ট সময়ই দেখা হয়। স্কুল শুরু বা শেষ হওয়া ছাড়া বড়জোর কোনো বন্ধুর জন্মদিনের দাওয়াতে। তবে রোজ রোজ বাড়ির পাশে যে আন্টি ওত পেতে থাকেন, তিনি যেন আরও অদ্ভুত, আরও গায়েপড়া। আপনি কখন পড়ছেন, কখন খাচ্ছেন, কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে ঘুরছেন—সবই পাশের বাড়ির আন্টির নখদর্পণে থাকে। অথচ নিজের সন্তান নিয়ে তাঁর খুব একটা মাথাব্যথা নেই। আপনি কোনো বড় সাফল্য পেলেও এই আন্টিদের কাছে তা নস্যি। কেউ হয়তো বলল, ‘আন্টি, আমি গুগলে চাকরি পেয়েছি।’ এই আন্টিরা উত্তরে বলবেন, ‘গুগলে! কেন, বিসিএস হয়নি?’
অনেক সময় এই আন্টিরা বাসার দোরঘণ্টি বাজাবেন কোনো গোপন কেচ্ছা বলতে। ঢুকেই এমন তাড়াহুড়া করবেন, যেন তাঁর বসার সময় নেই। গোটা সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুরো পাড়ার গল্প করে ফেরার পর ঘড়িতে তাকিয়ে দেখবেন, দুই ঘণ্টা কেটে গেছে। এই আন্টিদের চোখ ঘরের মধ্যে যতক্ষণ থাকে, তার চেয়ে বাইরেই বেশি ঘোরাফেরা করে। পাড়ার কোন ছেলে কখন বাড়ি ফিরছে, কোন মেয়ে কার সঙ্গে হেসে কথা বলছে—এসবই যেন তাঁদের ঘণ্টা–মিনিট ধরে মুখস্থ। অথচ এই আন্টির নিজের ছেলেই হয়তো দুদিন ধরে বাড়ি ফিরছে না, সেটা নিয়ে তাঁর বিশেষ চিন্তাও নেই। পড়াশোনা শেষ করে একটা চাকরির জন্য আপনার নিজের তাগাদা না থাকলেও এই আন্টিরা আপনাকে রোজ সেই তাড়া দেবেন। সপ্তাহে হয়তো চার দিনই আপনাকে দেখলে জিজ্ঞেস করবেন, ‘এখনো চাকরি পাওনি? আমার ভাইঝি তো পাস করার আগেই কোম্পানিগুলো লাইন দিয়ে অফার লেটার পাঠাচ্ছে। কোনটায় জয়েন করবে, বুঝতেই পারছে না।’
এই পাশের বাসার আন্টি মূলত একটি রূপক। যেখানে লিঙ্গভিত্তিক পরিচিতি ছাপিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন আরও বিশেষ কিছু।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।