কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নিকে অভিনন্দন জানালেন ট্রাম্প
Published: 30th, April 2025 GMT
কানাডার সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই নেতা শিগগিরই বৈঠক করার বিষয়ে একমত হয়েছেন।
আশা করা হচ্ছে, নির্বাচন–পরবর্তী সময়ে দুই দেশ নতুন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুরু করবে।
কানাডার সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার ওপর ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্ক আরোপ এবং দেশটির সার্বভৌমত্ব নিয়ে তাঁর একের পর এক মন্তব্যের বিষয়টিই মূলত এবারের নির্বাচনী প্রচারণার প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল। শেষ পর্যন্ত কার্নির লিবারেল পার্টি সে নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। তবে তারা এককভাবে সরকার গঠন করার মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
নির্বাচনের এ ফল কার্নির জন্য দুটো চ্যালেঞ্জ হাজির করেছে। তাঁকে যেমন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দর–কষাকষি করতে হবে, আবার সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যা মোকাবিলাও করতে হবে। কার্নির দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। আর তাই সরকার গঠন করার জন্য কার্নিকে এখন অন্য রাজনৈতিক দলের সমর্থন আদায় করতে হবে।
নির্বাচনের পর প্রথম ফোনালাপে ট্রাম্প কার্নিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর আরও বলেছে, ‘স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের একসঙ্গে কাজ করার গুরুত্ব’ সম্পর্কে দুই নেতা একমত হয়েছেন।
লিবারেলদের হাউস অব কমন্সে আইন পাস করাতে অন্যদের সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে হবে। যেকোনো আস্থা ভোটে পরাজয়ের আশঙ্কাও আছে তাদের।
লিবারেলরা দুর্বল বামপন্থী দল নিউ ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকে সহযোগিতা পেতে পারে। অতীতেও দলটি তাদের সমর্থন দিয়েছে। এ ছাড়া ব্লক কেবেকোয়া দলের কাছ থেকেও সমর্থন পেতে পারে তারা।
কানাডার পার্লামেন্টে এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য একটি দলকে ১৭২টি আসনে জয়ী হতে হয়। লিবারেলরা ১৬৯টি আসনে এগিয়ে আছে।
এরপরও এ ফলকে দলটির জন্য ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, কয়েক মাস আগেও এ দল ধ্বংসের পথে বলে মনে হচ্ছিল।
কানাডা ও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা কার্নি। গত মাসে দলের নেতা জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করার পর তিনি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। তিনিই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন। একটি বিষয়ে লিবারেলদের জন্য পার্লামেন্টে সমর্থন পাওয়া সহজ হতে পারে। তা হলো মার্কিন শুল্কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া শ্রমিক ও শিল্প খাতকে সহায়তা দিতে আইন পাস করা। নির্বাচনী প্রচারণার সময় এ বিষয় নিয়ে সব দলই একমত ছিল।
সোমবারের নির্বাচনে চার বছর আগের তুলনায় লিবারেল ও কনজারভেটিভ দুই দলেরই ভোট বেড়েছে।
নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। দলটি ১৪৪টি আসনে এগিয়ে আছে। তারা পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিক বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
কানাডার দুই বড় দলের প্রতি জনসমর্থন বাড়ার কারণে ছোট দলগুলো, বিশেষ করে এনডিপি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের ভোট প্রায় ১২ শতাংশ কমে গেছে।
এবারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৬৭ শতাংশ।
কনজারভেটিভ নেতা পিয়েরে পলিয়েভ্রে এবং এনডিপি নেতা জগমিত সিং—দুজনই তাঁদের আসন হারিয়েছেন। সিং বলেছেন, তিনি বামপন্থী দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডিসেম্বরের আগে অবশ্যই নির্বাচন সম্ভব: আন্দালিব রহমান পার্থ
ডিসেম্বরের আগে অবশ্যই নির্বাচন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) আন্দালিব রহমান পার্থ। তিনি বলেন, আমার মনে হয়, কালক্ষেপণ না করে এখন নির্বাচনের রোডম্যাপ জনগণের দাবি। এই সরকারের সেটাতেই মনোযোগ দেওয়া উচিত। সুনির্দিষ্ট একটা রোডম্যাপ থাকতে হবে। আমরা ধন্যবাদ জানাই, বিএনপি এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে।
আজ রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ’র নেতৃত্বে বিজেপির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন বিজেপির মহাসচিব আবদুল মতিন সাউদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মোস্তফা তামজিদ প্রমুখ। বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
পার্থ বলেন, ৭ আগস্ট থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রত্যেক জায়গায় বলে আসছি, আপনারা (সরকার) একটা নির্বাচনী রোডম্যাপ দিন। নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা যে সংস্কারের কথা বলছেন, সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। আমরাও সংস্কারের পক্ষে, কিন্তু এটাও বাস্তব যে, সংস্কার আপনারা করেন। তবে বড় সংস্কার করতে হলে জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া যদি সেই সংস্কার হয়, তাহলে সেই সংস্কার খুব শক্তভাবে থাকবে না। আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি- আমাদের সঙ্গে একটা সনদ হতে পারে। যেগুলো সংস্কার শটকাট করে একমত হয়েছে, সেগুলো নিয়ে একটা সনদ করা যেতে পারে। সবাই স্বাক্ষর করতে পারে। তারপর এগিয়ে যেতে পারে।
বিজেপি চেয়ারম্যান বলেন, দেশে গত ১৬-১৭ কোনো নির্বাচন হয়নি। ২০১৪ সাল থেকে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এখন মানুষের যে আকাঙ্খা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান হবে। সেটা আমরা উপলদ্ধি করি। দেশের মানুষ তাকিয়ে আছে একটা নির্বাচনের জন্য। আমরা এটা বিশ্বাস করি, এই অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সরকার, এই সরকার আমাদের আন্দোলনের সরকার, এই সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সরকার। এই সরকার জনগণের সরকার, কিন্তু জনগণের দ্বারা ভোটে নির্বাচিত সরকার না। আর এই সরকারের পাশে আমরা ছিলাম, আগামীতেও আমরা থাকবো।