ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছে আফরান নিশো অভিনীত দ্বিতীয় সিনেমা ‘দাগি’। দ্বিতীয় এ সিনেমাতেও দারুণ প্রশংসা পেয়েছেন তিনি। হাউজফুল গেছে শো, সিনেমায় ছিল দর্শকের উপচে পড়া ভিড়। দেশ মাতিয়ে সিনেমাটি বিদেশেও মুক্তি পাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো দেশেও দর্শক টানছে সিনেমাটি। ঈদের ছবির রেশ থাকতেই এলো আফরান নিশোর নতুন কাজের খবর। এবার প্রেক্ষাগৃহে নয়, ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সিরিজ। নাম ‘আকা’। পরিচালনা করবেন ভিকি জাহেদ। এ ‘আকা’তে নিশোর নায়িকা হয়ে পর্দায় ফিরছেন ‘তুফান’খ্যাত মাসুমা রহমান নাবিলা। ইতোমধ্যে শুটিংও করে ফেলেছেন তিনি। এমনটা নিশ্চিত হওয়া গেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আলফা আইয়ের সূত্রে।
নিশো-ভিকির জুটি এর আগে ‘পুনর্জন্ম’ নাটক নির্মাণ করে সাড়া ফেলেছেন। নতুন এ সিরিজের গল্প একই প্যাটার্নের। তবে এখনই এ সিরিজ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরের কিছু লোকেশনে বেশির ভাগ অংশের শুটিং হয়েছে সিরিজটির। সূত্র বলছে, সিরিজটির নাম পরিবর্তন হতে পারে। আপাতত প্রাথমিকভাবে এর নাম রাখা হয়েছে ‘আকা’। ‘আজাদ’ও হতে পারে। এর আগে জানা গিয়েছিল সিরিজটিতে নিশোর বিপরীতে থাকবেন তানজিম সায়রা তটিনী। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তটিনী নেই এতে। সেখানে নাবিলাকে দেখতে পাবেন দর্শক।
সবশেষ নাবিলাকে পর্দায় দেখা গেছে রায়হান রাফী পরিচালিত ‘তুফান’ সিনেমায়। এরপর তাঁকে আর অভিনয়ে দেখা যায়নি। অবশেষে নিশোর নায়িকা হয়ে ফিরছেন তিনি।
অন্যদিকে সিরিজটি দিয়ে দীর্ঘদিন পর ওটিটিতে ফিরছেন নিশো। নিজের প্রথম সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’ মুক্তির সময় ‘সাড়ে ষোলো’ শিরোনামে হইচইয়ে একটি ওয়েব সিরিজ মুক্তি পায়। সিরিজটি সাড়া ফেলতে ব্যর্থ হলে আর নতুন কোনো সিরিজে দেখা মেলেনি এ তারকাকে।
তাঁকে নতুনভাবে দেখা যাবে ভারতীয় একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। এতে কল গার্ল চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে মডেল ও অভিনেত্রী সেমন্তী সৌমিকে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মন্ত্রিসভার ৩ কমিটির সঙ্গে জরুরি বৈঠকে কী আলোচনা করলেন নরেন্দ্র মোদি
কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্রগোষ্ঠীর হামলার পর সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দেওয়ার পরদিন আজ বুধবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা (সিসিএস), অর্থনৈতিক (সিসিইএ) ও রাজনৈতিক (সিসিপিএ)–বিষয়ক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন।
ওই তিন কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, আজ নয়াদিল্লির ৭, লোক কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ওই বৈঠকগুলোয় পেহেলগামের ঘটনার পরবর্তী উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে এ বৈঠক হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালসহ অন্য সদস্যরা।
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, রাজনৈতিক–বিষয়ক কমিটির বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর তাঁর সঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আলোচনার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। গুতেরেস গতকাল মঙ্গলবার জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। বিভিন্ন গণমাধ্যম অনুযায়ী, গুতেরেস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গেও কথা বলেছেন।
সেই ফোনের আলাপ সম্পর্কে জয়শঙ্কর ‘এক্স’ মারফতে জানিয়েছিলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব দ্ব্যর্থহীনভাবে পেহেলগামের সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করেছেন।
গতকাল প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেছিলেন তিন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে। সেই বৈঠকে সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’(সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান।
বিভিন্ন দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সেই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদকে পরাস্ত করা দেশের ‘জাতীয় সংকল্প’। সেই লক্ষ্যে তিন সশস্ত্র বাহিনীকে ‘সময়, নিশানা ও পন্থা’ ঠিক করার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন মোদি।
আগের দিনের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজকের বৈঠকে সম্ভাব্য পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শীর্ষ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেন বলে সরকারি সূত্রে জানা যায়।
সূত্র অনুযায়ী, রাজনৈতিক–বিষয়ক কমিটির (সিসিপিএ) বৈঠকে বিরোধী নেতাদের তোলা সংসদের যৌথ অধিবেশন ডাকার দাবির বিষয়টি আলোচিত হয়। পেহেলগাম–কাণ্ডের পর দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ওই অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছেন লোকসভা ও রাজ্যসভার বিরোধী নেতা যথাক্রমে রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গে। এ দুজন ছাড়াও একই দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদীয় মন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন আরজেডি সদস্য মনোজ ঝা ও সিপিআই সদস্য পি সন্তোষ কুমার।
আজ সংসদীয়–বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা অর্জুন রাম মেঘাওয়াল গণমাধ্যমকে বলেন, সংসদের বিশেষ যৌথ অধিবেশন ডাকা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সংসদবিষয়ক কমিটি। সরকারি সূত্র অনুযায়ী, সিসিপির বৈঠকে এই প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পেহেলগামে হামলার পর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কাশ্মীরি ছাত্র ও ব্যবসায়ীদের হেনস্তা হতে হচ্ছে। এই প্রবণতা বন্ধে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আরজি জানিয়েছেন। সর্বদলীয় বৈঠকেও বিরোধী নেতারা সরকারকে এই বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। তা সত্ত্বেও বিভিন্ন রাজ্যে হেনস্তা অব্যাহত।
আজ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, বিজেপিশাসিত উত্তরাখন্ডের শৈল শহর মুসৌরিতে স্থানীয় উগ্রবাদী হিন্দুদের আক্রমণের শিকার হওয়ার পর থেকে ১৬ জন কাশ্মীরি শাল বিক্রেতা ওই রাজ্যে ফিরে গেছেন।
কাশ্মীরি পড়ুয়া, ব্যবসায়ী অথবা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজনকে হেনস্তা বন্ধে প্রধানমন্ত্রী মোদি এখনো স্পষ্ট কোনো বার্তা দেননি।