বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইউটিউবার ‘মিস্টারবিস্ট’ নামে পরিচিত জিমি ডোনাল্ডসন সম্প্রতি তাঁর সাফল্যের পেছনের ‘গোপন সূত্র’ প্রকাশ করেছেন। তবে তাঁর মতে, এই পথ অনুসরণ করে তাঁর মতো সফলতা অর্জন করা বেশির ভাগ মানুষের পক্ষেই সম্ভব নয়।

বর্তমানে প্রায় সাড়ে আট কোটি ডলারের সম্পদের মালিক ডোনাল্ডসন। ইউটিউবের পাশাপাশি তাঁর রয়েছে একাধিক ব্যবসায় উদ্যোগ ও মানবিক প্রকল্প। অ্যামাজনে একটি টেলিভিশন সিরিজও নিয়ে আসছেন। বিজনেস ইনসাইডারের তথ্য অনুযায়ী, তাঁর সামগ্রিক ব্যবসার মূল্য এখন প্রায় ৭০ কোটি ডলার। ১৫ বছরের ভিডিও নির্মাণ ক্যারিয়ারে ডোনাল্ডসন দেখেছেন, আজকের ইন্টারনেটের ভিড়ে মানুষের মনোযোগ পাওয়া আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই শুরু থেকেই তিনি বুঝেছিলেন, সাধারণ কনটেন্টের ভিড়ে আলাদা হতে হলে এমন কিছু করতে হবে, যা আগে কখনো কেউ করেনি।

সম্প্রতি ‘ডায়েরি অব আ সিইও’ পডকাস্টে অংশ নিয়ে মিস্টারবিস্ট তাঁর কনটেন্ট নির্মাণের কৌশল ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ‘রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি গরু দেখলে সাধারণত আমরা তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাই না। কিন্তু হঠাৎ যদি একটি বেগুনি রঙের গরু দেখি, তখন আমরা অবাক হই, সেটা মনে রাখি এবং বন্ধুদের তা বলি। এমনকি কয়েক বছর পরও হয়তো সেই অভিজ্ঞতা মনে পড়ে।’ এই উদাহরণ টেনে ডোনাল্ডসন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও একই নীতি প্রযোজ্য। সাধারণ ভিডিও দর্শকের চোখ এড়িয়ে যায়। কিন্তু ব্যতিক্রমী ও আকর্ষণীয় কিছু দেখলে মানুষ থেমে যায়, ক্লিক করে এবং দীর্ঘদিন তা মনে রাখে। তাঁর ভাষায়, ‘আমি চেষ্টা করি এমন ভিডিও বানাতে, যা দেখে দর্শক মনে করে—এটা না দেখে থাকা যাবে না।’

আরও পড়ুনইউটিউবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০ চ্যানেলের নাম জানেন কি১৪ অক্টোবর ২০২৪

মিস্টারবিস্টের ইউটিউব চ্যানেলে রয়েছে ভিন্ন ধরনের ভিডিও৷ যেমন ‘আমি ১০০ ঘণ্টা পিরামিডের ভেতর কাটিয়েছি’, ‘সাত দিন সমুদ্রে আটকে ছিলাম’ অথবা ‘গ্রোসারি স্টোরে প্রতিদিন টিকে থাকলে ১০ হাজার ডলার পুরস্কার’। এ ধরনের ভিডিও নির্মাণে প্রয়োজন বিশাল অর্থায়ন, জটিল পরিকল্পনা ও কখনো কখনো বিশেষ অনুমতিরও। ডোনাল্ডসন নিজেই জানিয়েছেন, প্রতিটি ভিডিও তৈরিতে তাঁর খরচ হয় লাখ লাখ ডলার। সম্প্রতি খুদে ব্লগ লেখার সাইট এক্সের (সাবেক টুইটার) মালিক ইলন মাস্ক তাঁকে এক্সে ভিডিও প্রকাশের আহ্বান জানালে ডোনাল্ডসন তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি জানান, এক্সের বিজ্ঞাপন আয় তাঁর ভিডিও তৈরির খরচও মেটাতে পারবে না।

ডোনাল্ডসন বলেন, ব্যতিক্রমী কনটেন্ট তৈরির জন্য এমন কিছু করতে হয়, যা আগে কখনো হয়নি। আর এগুলো সাধারণত অত্যন্ত কঠিন ও ব্যয়বহুল। তাঁর ভাষায়, ‘আপনাকে কঠিন ও জটিল সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে এবং সেগুলোর দিকে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ, সেখানেই সবচেয়ে বড় সুযোগ লুকিয়ে থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ইউটিউবে শীর্ষস্থানীয় ভিডিওগুলোর ক্ষেত্রে ‘উইনার টেক অল’ প্রতিযোগিতা চলে। তাই এমন কনটেন্ট তৈরি করতে হয়, যা দর্শক আগে কখনো দেখেনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম স ট রব স ট ড ন ল ডসন কনট ন ট

এছাড়াও পড়ুন:

অনেকের মধ্যেও একাকীত্ব বোধ করছেন? ভালো থাকবেন যেভাবে

বিষণ্ণতা একটি মানসিক রোগ যা একজন ব্যক্তিকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে প্রভাবিত করে। যখনই কোনও ব্যক্তি খুব বেশি চিন্তা করতে শুরু করে বা তার জীবনে এমন কোনও ঘটনা ঘটে যা তাকে কষ্ট দেয়, তখনই সে হতাশায় পড়তে শুরু করে। এখনকার ব্যস্ত জীবনে একাকীত্ব একটি বড় মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে উঠছে। অনেক সময় এমন হয় আমরা অনেকের মধ্যে থেকেও সম্পূর্ণ একা এবং বিচ্ছিন্ন বোধ করি।

বিষণ্ণতায় ভুগলে একাকীত্ব, অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা, খাওয়ার ইচ্ছা না থাকা, উদ্বেগ এবং অনিদ্রার মতো অনেক লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এই অনুভূতিটি সময়মতো সনাক্ত না করা হয় এবং এটি মোকাবেলা করার জন্য ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে। 

কেন আমরা অনেকের মধ্যে ও একাকীত্ব বোধ করি?

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগের অভাব, আত্মবিশ্বাস, আত্মসম্মানবোধের অভাব এবং মানসিক দ্বন্দ্ব একাকীত্বের অনুভূতি বাড়ায়। যখন কারও মনে হয় কেউ তাকে বোঝে না বা তার অনুভূতিগুলি উপেক্ষা করছে তখন অনেকের মধ্যেও সে একাকী বোধ করতে শুরু করে।

বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, একাকীত্ব বোধ করা স্বাভাবিক, কিন্তু যদি এই অনুভূতি দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, তাহলে এটিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। সামাজিক সংযোগ এবং আপনার অনুভূতির প্রকাশ মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

একাকীত্ব বোধ করলে কী করবেন-

নিজের অনুভূতিগুলি বুঝুন : প্রথম পদক্ষেপ হল আপনার অনুভূতিগুলিকে না এড়িয়ে স্বীকার করুন। নিজেকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুনম, ‘আমি কেমন বোধ করছি?’ এবং ‘কেন’? এমন বোধ করছি ইত্যাদি।

বিশ্বস্ত কারো সাথে কথা বলুন: বন্ধু, পরিবারের সদস্য, অথবা মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সাথে খোলামেলা কথা বলুন। অনেক সময় শেয়ারিং মন শান্ত করতে এবং সমাধান খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারে।

ইতিবাচক কার্যক্রমে যুক্ত হোন: শখ, খেলাধুলা, যোগব্যায়াম, সঙ্গীত বা নতুন দক্ষতা শেখার মতো কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকুন। এসব কার্যক্রম মানসিক শক্তিকে সঠিক দিকে পরিচালিত করতে সাহায্য করে।

একটি স্বাস্থ্যকর রুটিন বজায় রাখুন: নিয়মিত ঘুম, সুষম খাবার খাওয়া এবং ব্যায়াম আপনার মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

পেশাদার কারও সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না: যদি একাকীত্বের অনুভূতি দীর্ঘ সময় ধরে থাকে এবং দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করতে শুরু করে, তাহলে একজন কাউন্সিলর বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ