ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ–সংকট কেটেছে, উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক
Published: 29th, April 2025 GMT
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর থেকে বিদ্যুৎ–সংকট দূর হয়েছে। পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ডিইপিজেডের কারখানাগুলোতে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার পর থেকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) কাছ থেকে কয়েক ধাপে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। সন্ধ্যার দিকে কারখানাগুলোতে উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। আরইবির পক্ষ থেকে ডিইপিজেডে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ডিইপিজেডের কর্মকর্তারা জানান, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ডিইপিজেডে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বিল বকেয়াসংক্রান্ত কারণে সোমবার দুপুরে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এর পর থেকে ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পরে চাহিদা মেটাতে আরইবির কাছ থেকে বিদ্যুৎ সংগ্রহ করা হয়।
আরও পড়ুনবিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ২৮ এপ্রিল ২০২৫ডিইপিজেডের কর্মকর্তারা আরও জানান, গতকাল সকালেও বিদ্যুতের সংকট ছিল। সকাল নয়টা পর্যন্ত আরইবির কাছ থেকে অল্প পরিমাণে সহায়তা পাওয়া যায়; যা দিয়ে কারখানাগুলো চালানো সম্ভব হয়নি। কিছু কারখানা জেনারেটর ব্যবহার করে কাজ করে। কারখানা চালু করতে না পারায় পাঁচটি কারখানায় ছুটিও ঘোষণা করা হয়।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আরইবি বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ কিছুটা বাড়িয়ে দেয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক ধাপে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ায় প্রতিষ্ঠানটি। সন্ধ্যা ছয়টার পর থেকে বিদ্যুতের সংকট আর নেই। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়।’ এই কর্মকর্তা জানান, যেসব কারখানা ছুটি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো চালু করা হয়েছে। আরইবির কাছ থেকে প্রয়োজন অনুসারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা ছিল। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পল্লী বিদ্যুতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় তারা ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনডিইপিজেডে বিদ্যুৎ–সংকট: কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত, ৫টিতে ছুটি ঘোষণা১২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন রবচ ছ ন ন কর মকর ত র পর থ ক আরইব র
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
আক্কেলপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর ভিড় বেড়েছে। শয্যাসংকটে রোগীদের মেঝে ও বারান্দায় থাকতে হচ্ছে। এদিকে হাসপাতালে খাওয়ার স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। বাইরে থেকে বেশি দামে রোগীদের স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ৫০টি। গতকাল সোমবার পর্যন্ত এখানে ভর্তি ছিলেন ৭৫ জন রোগী। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ২৯ জন। শয্যা না পেয়ে তাদের অনেককেই বারান্দায়, মেঝেতে ঠাঁই নিতে হয়েছে। এ সময় কথা হয় রামশালা গ্রামের আসমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাতে ডায়রিয়া ও বমি শুরু হলে হাসপাতালে ভর্তি হই। রোগী বেশি থাকায় শয্যা পাইনি। বারান্দার মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। হাসপাতাল থেকে একটি স্যালাইন পেলেও ৪টি স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। একই অভিযোগ করেন তেমারিয়া গ্রামের নুর বানু। তিনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১০ মাস বয়সী মেয়েকে রোববার হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। এদিকে রোগীর চাপ বাড়লেও এ হাসপাতালে রয়েছে চিকিৎসক সংকট। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ২৬টি পদের বিপরীতে মাত্র ৩ জন চিকিৎসক সেবা দিচ্ছেন। রয়েছে তীব্র স্যালাইন সংকট। রোগীদের বাইরে থেকে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।
হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কলেরা স্যালাইনের জন্য সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে চাহিদা দেওয়া হয়েছিল চার হাজার পিস। এর মধ্যে এক হাজার মি.লি. স্যালাইন ২ হাজার পিস ও ৫০০ মি.লি. স্যালাইন ২ হাজার পিস। পাওয়া গেছে মাত্র ৬০০ পিস। ইতোমধ্যে ৩০০ পিস রোগীদের মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে।
আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আসিফ আদনান জানান, হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। অন্য সময়ের তুলনায় ৩ গুণ বেশি ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে আসছে। রোগীর চাপ বাড়লেও চিকিৎসক সংকট রয়েছে। স্যালাইনের সরবরাহও কম। রোগীদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। নানা সীমাবদ্ধতায় সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা আমাদের। তিনি ডায়রিয়া হলে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থেকে কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফি মাহমুদ বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে কয়েকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সরকারিভাবে নিয়োগ না হওয়ায় আমরাও প্রয়োজনীয় চিকিৎসক পাচ্ছি না। স্যালাইনের সরবরাহ বাড়াতে চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে।