বাড়ছে তাপমাত্রা। ভ্যাপসা গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ গরমকালে বাইরে বের হলে শরীর ও ত্বকের সুরক্ষা খুব জরুরি। গরমে বাইরে বের হওয়ার কিছু প্রস্তুতি প্রয়োজন। যেমন–
সানস্ক্রিন ব্যবহার
বাইরে যাওয়ার ২০-৩০ মিনিট আগে এসপিএফ ৩০ বা তার বেশি সানস্ক্রিন মুখ, গলা, হাতে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। বারবার ঘেমে গেলে প্রতি ২-৩ ঘণ্টা পর আবারও লাগান।
হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরুন
বাইরে যাওয়ার সময় পাতলা, হালকা রঙের সুতি কাপড় পরুন। তাহলে শরীর তুলনামূলক ঠান্ডা থাকবে। সম্ভব হলে ফুল হাতার জামা পরুন। তাহলে ত্বক ভালো থাকবে। পা ঢাকা জুতার বদলে খোলা স্যান্ডেল ব্যবহার করুন। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে চোখ বাঁচাতে ব্যাগে সানগ্লাস রাখুন।
ছাতা বা বড় ক্যাপ ব্যবহার
গ্রীষ্মে রোদের তীব্রতা বেশি থাকে। বেশিক্ষণ রোদে থাকলে ত্বকে টান পড়ার ঝুঁকি থাকে। ত্বক যাতে সরাসরি রোদের সংস্পর্শে না আসতে পারে সে জন্য ছাতা বা বড় ক্যাপ ব্যবহার করাটা জরুরি।
হাইড্রেটেড থাকুন
শরীর যাতে কোনোভাবেই পানিশূন্য না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। বাইরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই পানির বোতল সঙ্গে রাখুন এবং প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করুন। মাঝেমধ্যে স্যালাইন খান। হাইড্রেট থাকতে এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত মৌসুমি ফল এবং বাড়িতে বানানো ভেষজ পানীয় খান।
ফেস ওয়াইপস বা টিস্যু রাখুন
ঘাম বা ময়লা পরিষ্কার করার জন্য হ্যান্ডব্যাগে ওয়েট ওয়াইপস বা নরম টিস্যু রাখুন।
লিপবাম ও সানগ্লাস
গরমেও ঠোঁট শুকিয়ে যায়। তাই ব্যাগে সবসময় এসপিএফযুক্ত লিপবাম রাখুন।
সুগন্ধি
এ গরমে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস হচ্ছে সুগন্ধি। বাইরে বের হলে গরমে ঘেমে একাকার হতে হয়। ঘাম জমে শরীরে দুর্গন্ধও হয়। তখন বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। ব্যাগে সুগন্ধি থাকলে মাঝেমধ্যে বের করে স্প্রে করে নিতে পারেন। এতে ঘামের গন্ধ দূর হবে। মনও সতেজ থাকবে।
ড্রাই ফ্রুটস রাখুন
গরমের দিনে বাইরের খাবার বিশেষ করে ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। ব্যাগে নানা ধরনের ড্রাই ফ্রুটস যেমন– কাজুবাদাম, কিশমিশ, আখরোট, কাঠবাদাম রাখতে পারেন। খুব বেশি ক্ষুধা অনুভূত হলে হালকা স্ন্যাকস হিসেবে এ ড্রাই ফ্রুট খেতে পারেন। এতে শরীরও ভালো থাকবে। v
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাহাবিরা যেভাবে মহানবী (সা.)-কে মানতেন
নবীজি(সা.) র আনুগত্য প্রদর্শনে সাহাবিগণ অনন্য সব দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন। প্রথমত তাঁর আনুগত্য মানে আল্লাহর আদেশ পালন। দ্বিতীয়ত তাদের অন্তরে নবীজির প্রতি যে ভালোবাসা ছিল, সেই ভালোবাসার আহ্বানে তারা সাড়া দিয়েছেন। মানুষ তার সহজে মানে, যাকে সে ভালোবাসে। আমরা মাত্র তিনটি উদাহরণ উপস্থাপন করছি।
১. জুমার দিন মসজিদের মিম্বরে উঠে নবীজি (সা.) বললেন, ‘বসো তোমরা।’ আবদুলাহ ইবনে মাসউদ (রা.) শোনামাত্র মসজিদের দরজায় বসে গেলেন। তিনি ‘বসো’ শব্দটি শুনে নিজেকে আর এক পা এগোনোর অনুমতি দেননি; যেখানে ছিলেন, সেখানেই বসে গেলেন। নবীজি তাকে দেখলেন যে, তিনি দরজার মুখে বসে গেছেন। বললেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, এগিয়ে এসো।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১,০৯১)
২. আবু আবদুর রহমান ফাহরি (রা.) বলেন, নবীজির (সা.) সঙ্গে আমি হোনাইনের যুদ্ধে উপস্থিত ছিলাম। গ্রীষ্মের দিনে আমরা প্রচণ্ড রোদের মধ্য দিয়ে চলছিলাম। একসময় সকলে গাছের ছায়ায় বসলাম। সূর্য হেলে পড়লে আমার বর্মটি পরলাম এবং ঘোড়ায় চড়ে নবীজির কাছে এলাম। তিনি তার তাঁবুতে ছিলেন। তাকে সালাম দিয়ে বললাম, আল্লাহর রাসুল, ‘আমাদের যাওয়ার সময় হয়েছে কি?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’ এরপর তিনি ‘বেলাল’ বলে ডাক দিলেন। বেলাল (রা.) সামুরা গাছের নীচ থেকে ছুটে এলেন। তার ছায়া দেখে মনে হচ্ছিল যেন পাখির ছায়া। তিনি বললেন, ‘আমি হাজির।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৫,২৩৩)
‘
পাখির ছায়া’ বলার কারণ হলো, নবীজির আওয়াজ শোনামাত্র বেলাল (রা.) এত দ্রুত এসেছেন, যেন তার দু’পা মাটিতে ছিল না, ছায়া দেখে মনে হচ্ছিল পাখির ছায়া।
৩. উসাইদ ইবনে জহির (রা.) বলেন, রাফে ইবনে খাদিজ (রা.) আমাদের কাছে এসে বললেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) তোমাদের একটি বিষয় নিষেধ করেছেন, যা তোমাদের জন্য উপকারী। তবে মনে রেখো, আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করা আরও বেশি উপকারী। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস: ৩,৮৯৭)
অর্থাৎ, আল্লাহর রাসুল যা বলেছেন, তাতে বাহ্যিক দৃষ্টিতে উপকারী বিষয় গ্রহণে নিষেধ করেছেন বোঝা গেলেও তাতে দ্বিধায় পড়েননি সাহাবিরা। বরং বুঝে নিয়েছেন যে, নিশ্চয় রাসুলের কথা মেনে নিলে আল্লাহ এর চেয়ে বেশি উপকার দেবেন।