সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা মব ভায়োলেন্স: শিল্পী সংঘের সভাপতি
Published: 29th, April 2025 GMT
অভিনেতা সিদ্দিকের ওপর হামলা, লাঞ্ছিত করে থানায় সোপর্দের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী এবং অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম। মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা মব ভায়োলেন্স। এই মব ভায়োলেন্সকে তো ঠেকাচ্ছে না। কেন জানি মনে হচ্ছে, মব ভায়োলেন্সকে নীরবে বলা হচ্ছে, করে যাও। আমাদের কিছুই করার নেই!’
অভিনয়শিল্পী সংঘের সদ্য নির্বাচিত সভাপতি আজাদ আবুল কালাম বললেন, ‘একজনের রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা থাকতে পারে। অভিনেতা হিসেবে সিদ্দিক সবার কাছে পরিচিত। তাকে এভাবে রাস্তায় ধরে মেরে দেবে কিছু লোক! দলবদ্ধভাবে এসে শারীরিকভাবে আঘাত করছে, আক্রমণ করছে, গায়ে থেকে জামাকাপড় খুলে ফেলছে, এরপর থানায় নিয়ে সোপর্দ করছে। থানায় নিয়ে সোপর্দ করতেই যদি হয়, তাহলে প্রথম থেকে তারা আইন হাতে তুলে নিল কেন! তাকে হেনস্তা করে আইনের হাতে তুলে দেবে—এই মব জাস্টিস, মব ভায়োলেন্স সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। এটা তো একটা সময় আরও নানান স্তরে হবে। এসব কর্মকাণ্ড সরকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে, যেখানে মব ভায়োলেন্স, সেখানে কঠোর হাতে দমন করবে সরকার বলে আমার বিশ্বাস।’
আজাদ আবুল কালামের ভাষ্যে, ‘কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা জানানোর একটা প্রক্রিয়া আছে। শুধু শিল্পী না, একজন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে আপনি তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত তাকে অপরাধী বলতে পারেন না। তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে পারেন না। মামলা করে দিলেন এবং তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা শুরু করলেন—এই প্রক্রিয়া যদি চলতে থাকে, এটাই যদি আমাদের মনস্তত্ত্ব হয়, তাহলে বিভক্তি আরও বাড়বে। আমরা যে ইনক্লুসিভ সমাজের কথা বলছি বা চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান মানুষকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছে, যে আকাঙ্ক্ষার জন্ম দিয়েছে, সেই একটা ইনক্লুসিভ সমাজে বিভেদ থাকবে না, সমঝোতার জায়গা তৈরি হবে সমাজে; এমনটা চলতে থাকলে সেটা কীভাবে হবে? এভাবে চলতে থাকলে তো বিভক্তি আরও বাড়বে। চলতে থাকবে, চলতে থাকবে। যা ঘটছে, প্রতিটি কাজই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।’
আরও পড়ুনঅভিনেতা সিদ্দিকের ওপর হামলা, লাঞ্ছিত করে থানায় সোপর্দ৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মব ভ য় ল ন স স পর দ
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় আরো ১ জনের মৃত্যু
গাজীপুরের বাসন থানা এলাকায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ঘটনায় তাসলিম আক্তার (৩০) নামে একজন মারা গেছেন। বিস্ফোরণের এই ঘটনায় দগ্ধ ২ জন মারা গেলেন।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে গতকাল সকাল ১০টার দিকে সীমা আক্তার (৩০) নামে একজন মারা যান।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মোহাম্মদ শাওন বিন রহমান রাইজিংবিডিকে জানান, আগুনে তাসলিমা আক্তারের শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিলো। এ ঘটনায় দগ্ধ পারভীন আক্তার (৩৫), তানজিলা (১০) ও আইয়ান নামে দেড় বছরের এক শিশু হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
এর আগে ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় গাজীপুরের বাসন থানা এলাকায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে নারী-শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচ জন দগ্ধ হন। রাত ১১টার দিকে তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, আগুনে পারভীনের ৩২ শতাংশ, তানজিলার ৯০ শতাংশ, আয়ানের ২৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
তাদের আত্মীয় মফিজুল ইসলাম জানান, ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে রান্না করার জন্য চুলা জ্বালালে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন ধরে যায়। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের আগুনে প্রায়ই দগ্ধ হচ্ছে মানুষ। তাদের অনেকে চিকিৎসা নিতে ঢাকায় আসছেন। কিন্তু সবাইকে বাঁচানো যাচ্ছে না বলে জানান চিকিৎসকরা।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের হিসাবে, শুধু ২০২৪ সালে আগুনে দগ্ধ হয়ে ১২ হাজার ৮১১ জন রোগী জরুরি বিভাগে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হন ৪৬৮০ জন রোগী। ভর্তি রোগীদের মধ্যে মারা যান ১০০২ জন। অর্থাৎ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা/ইভা