মাত্র ১৪ বছর বয়সে আইপিএলে নিজের অভিষেক ম্যাচেই আলো ছড়িয়েছিলেন বৈভব সূর্যবংশী। তবে সোমবার যা করলেন, তা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসেই নজিরবিহীন। গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ঝড়ের বেগে সেঞ্চুরি করে রীতিমতো রেকর্ডবই উল্টে ফেলেছেন এই কিশোর ওপেনার। ৩৫ বলের বিস্ফোরক শতরান এনে দিয়েছে দল রাজস্থান রয়্যালসকে কাঙ্ক্ষিত জয়, আর বৈভবকে এনে দিয়েছে সারা ভারতজুড়ে প্রশংসা।

তার এই অসাধারণ কৃতিত্বে মুগ্ধ হয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার ঘোষণা দিয়েছেন ১০ লাখ রুপির পুরস্কার। তরুণ এই প্রতিভাকে টেলিফোনে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষ্য, ‘‘এই বয়সে এমন অর্জন অনন্য। বৈভব শুধু রাজ্যের নয়, গোটা দেশের গর্ব হয়ে উঠেছে।’’

নীতিশ কুমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) বৈভবের সঙ্গে পূর্বের একটি ছবিও শেয়ার করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, “ভারতের ক্রিকেটভবিষ্যতের অন্যতম আশার নাম বৈভব সূর্যবংশী। তার প্রতিভা ও আত্মবিশ্বাস দেখার মতো। এই বয়সেই যা করে দেখাল, তা কল্পনার বাইরে। আমরা গর্বিত।”

আরো পড়ুন:

‘কলঙ্কমুক্ত হলো কী না’ প্রশ্নে যা বললেন আবাহনী কোচ

টিম গড়া থেকে সবকিছুতেই চ্যালেঞ্জ ছিল, এ বছরের ট্রফি স্পেশাল: মোসাদ্দেক

জয়পুরের সওয়াই মান সিং স্টেডিয়ামে বৈভব খেলেছেন অবিশ্বাস্য এক ইনিংস। ৩৮ বলে ১০১ রান করে আইপিএলে দ্বিতীয় দ্রুততম শতকের রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন। ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ১১টি ছক্কা। অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন মাত্র ১৭ বলে। সেই ইনিংসেই মিলে যায় আরও চারটি পুরস্কার—ম্যাচসেরা, সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট, সর্বোচ্চ ছক্কা ও সর্বোচ্চ ফ্যান্টাসি পয়েন্ট সংগ্রাহক।

এই চারটি স্বীকৃতির জন্য বৈভব পেয়েছেন ৪ লাখ রুপি পুরস্কার। এর বাইরেও রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আরও ১০ লাখ রুপি পুরস্কার যাবে তার ঝুলিতে। সবমিলিয়ে নিজের অভিষেক মৌসুমেই বৈভব যেন কোটি টাকার স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন দুর্বার গতিতে।

এর আগে গেল নভেম্বরে আইপিএলের নিলামে তাকে ১ কোটি ১০ লাখ রূপিতে (১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা) দলে ভিড়িয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। সবচেয়ে কম বয়সী ক্রিকেটার হিসেবে দল পেয়ে ও কোটিপতি হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন বৈভব।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ক র

এছাড়াও পড়ুন:

আজারবাইজানের সঙ্গে কানেক্টিভিটি বাড়াতে সম্মত প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজারবাইজানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি কর্মসূচির বিনিময় বৃদ্ধির লক্ষ্যে কানেক্টিভিটি বাড়াতে সম্মত হয়েছেন।

আজারবাইজানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলনুর মাম্মাদভ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি এই বিষয়ে সম্মত হন।

প্রধান উপদেষ্টা ঢাকায় আজারবাইজানের দূতাবাস খোলা এবং ঢাকা ও বাকুর মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

আরো পড়ুন:

পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফরে প্রাধান্য পাবে যেসব বিষয়

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আজারবাইজান একটি দূরবর্তী দেশ।”

তিনি বলেন, “দেশটিতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে একটি সরাসরি ফ্লাইট থাকলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা জ্বালানি খাতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে এবং আজারবাইজানি শিক্ষার্থীরাও বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাত থেকে শিখতে আগ্রহী হবে।”

অধ্যাপক ইউনূস আরো বলেন, ঢাকায় দূতাবাস খোলা হলে ভিসা প্রাপ্তির জটিলতাও দূর হবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে আপনাদের উপস্থিতি বাড়ানো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আমাদের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়।”

সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, শিক্ষা, প্রযুক্তি, অবকাঠামো এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় নিয়ে আলোচনা হয়।

আলোচনার সময় প্রধান উপদেষ্টা গত নভেম্বর মাসে বাকুতে অনুষ্ঠিত কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন।

তিনি কপ-২৯ সম্মেলন সফলভাবে আয়োজন করার জন্য আজারবাইজান সরকারকে অভিনন্দন জানান।

তিনি অনুরোধ করেন বাকুতে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ যেন একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে পাঠান।

প্রধান উপদেষ্টা আজারবাইজানি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশের বিপুল মানবসম্পদ কাজে লাগানোর সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “আমরা আপনাদের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে সম্ভাবনাগুলো অন্বেষণ করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমাদের জনসংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি, যার অর্ধেকই তরুণ। তাই আপনি যদি এখানে কোনো শিল্প স্থাপন করেন, শ্রমিকের কোনো ঘাটতি হবে না।”

আজারবাইজানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তাদের দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়, কারণ দুই বছর পর ঢাকা-বাকু কূটনৈতিক সম্পর্কের ৩৫ বছর পূর্তি হবে।”

উপমন্ত্রী মাম্মাদভ বলেন, “আমরা আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর করতে এখানে এসেছি।”

তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে আজারবাইজানের আসান এবং ডোস্ট মডেলের সারাংশ তুলে ধরেন, যা দুর্নীতি হ্রাস এবং জনসেবায় দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বাড়াতে কাজ করে।

প্রধান উপদেষ্টা আসান এবং ডোস্ট সেবার ধারণার প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশে এ প্ল্যাটফর্মগুলো প্রয়োগের সম্ভাবনা অনুসন্ধানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আজারবাইজানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২৫ সালের জুলাই মাসে আজারবাইজানে অনুষ্ঠিতব্য ইকোনমিক কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের ১৭তম শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ