জামালপুর শহরতলীর হরিপুর থেকে বিদায় নিলেন ফাতেমা বেগম (৭০)। প্রশাসনের উদ্যোগে গাজীপুরের কাশিমপুরের একটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হয়েছে তার। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাকে।

গত ২৪ এপ্রিল থেকে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফাতেমা বেগমকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত ২৫ এপ্রিল পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকম-এ ‘যে জীবন বহন করাই দায়’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে ফাতেমা বেগমের একাকী, কষ্টময় জীবনের গল্প তুলে ধরা হয়েছিল। 

সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত ফাতেমা বেগমের গল্প চোখে পড়ে উপজেলা প্রশাসনের। তারা দায়িত্ব নেন ফাতেমার। জোগান দেন খাবার, চিকিৎসা ও অর্থ। পাশাপাশি দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসে আশ্রয়ের প্রস্তাব। সবশেষ, প্রশাসনের উদ্যোগে গাজীপুরের কাশিমপুরের একটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থান পেলেন স্বামী হারানো নিঃসন্তান ফাতেমা বেগম।

আরো পড়ুন:

ছিনতাইকারী টান দেয় ভ্যানিটি ব্যাগ, নারীকে টেনে নিয়ে যায় প্রাইভেটকার

গণমাধ্যমে নারীর নেতিবাচক উপস্থাপন বন্ধের সুপারিশ 

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে বিদায়ের মুহূর্তে ফাতেমা বেগমকে ঘিরে ধরেন এলাকাবাসী। চোখের কোণে জমা অশ্রুর প্রতিটি ফোঁটায় ফুটে ওঠে ফাতেমা বেগমের প্রতি তাদের অগাধ ভালোবাসা, গভীর আবেগ আর হৃদয়ের শ্রদ্ধা।

সুখ-দুঃখে পাশে থাকা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছেন ফাতেমা 

প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম বলেন, “ফাতেমা খালা চলে যাওয়ায় আমাদের খুব খারাপ লাগছে। তবে, এক হিসাবে ভালোই লাগছে, কারণ তিনি এখন ভালো চিকিৎসা পাবেন। ভালোভাবে থাকতে পারবেন।”

কল্পনা বেগম নামে অপর এক প্রতিবেশী বলেন, “এতোদিন আমরা ফাতেমা চাচিকে দেখেছি। আমার সাধ্যে যতটুকু হয়ছে, ততটুকু দিয়েই তাকে সাহায্য করেছি। এখন তিনি চলে গেলেন। তার চলে যাওয়ায় আমাদের বুকটা ফেটে যাচ্ছে। তিনি ভালো থাকবেন, এটা চিন্তা করে নিজের কাছে ভালো লাগছে।”

কিছুটা খারাপ লাগলেও আশ্রয় কেন্দ্রে ফাতেমা বেগম যেন ভালো থাকেন এতটুকু আশায় বুক বেঁধেছেন প্রতিবেশীরা। ফাতেমা বেগমের শান্তিময় জীবনই তাদের কাছে পরম তৃপ্তির।

ফাতেমা বেগমকে গাজীপুরের কাশিমপুরে নিয়ে যান প্রশাসনের কর্মকর্তারা 

ফাতেমা বেগমের জন্য প্রশাসনের সব দপ্তরকে একসঙ্গে কাজে লাগিয়েছেন জামালপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিন্নাত শহীদ পিংকি। তিনি বলেন, “তাকে (ফাতেমা বেগম) নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ নজরে আসার পরই আমি স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলি। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। সমাজ সেবা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুরের একটি সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।” 

তিনি বলেন, “আমি এতেই সন্তুষ্ট যে, আমি আমার প্রয়োজনীয় সব দপ্তরকে কাজে লাগিয়ে ফাতেমা বেগমের চিকিৎসা এবং ভালোভাবে থাকার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। যারা এই দুই বছর ফাতেমা বেগমকে দেখভাল করেছেন, তাদের সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাই।”

ঢাকা/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএনও ব গম র ব গমক

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পর্কের ৫০ বছর: বাংলাদেশে প্রথমবার চীনা ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী

বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে চীনা ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টাশালী এক্সিবিশন হলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় এই প্রদর্শনীর।

‘দ্য ল্যানটিং লিগ্যাসি’ প্রতিপাদ্যে সাত দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী যৌথভাবে আয়োজন করেছে বাংলাদেশে চীনা দূতাবাস, বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন চীনা দূতাবাসের অ্যাটাশে সুন খ্যংনিং ও বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম রানা।

উদ্বোধনী বক্তৃতায় সুন খ্যংনিং বলেন, “আমরা এই বছর প্রথমবারের মতো চীনা ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছি। তাড়াহুড়া করে এই আয়োজন করা হয়েছে, তাই সুন্দরভাবে আয়োজন করতে পারিনি। এর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী; তবুও আশা করি, দর্শকরা চীনা ক্যালিগ্রাফির সৌন্দর্য উপভোগ করবেন।”

চীন-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীতে দুই দেশের সম্পর্ক আরো উচ্চ স্তরে পৌঁছাবে এবং গভীর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 

জাহাঙ্গীর আলম রানা বলেন, চীনা ক্যালিগ্রাফি তিন হাজার বছরের পুরোনো। তুলি, কালি, কলম ও কাগজ দিয়ে চীনা শিল্পীরা নান্দনিক ক্যালিগ্রাফি তৈরি করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে চীনা ক্যালিগ্রাফিভক্ত লিউ চেন, কো তাহাই, হু সংসহ বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ