চালুর ৬ বছরেই মুখ থুবড়ে পড়েছে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) সেবা। সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ইনফোজিলিয়ন বলছে, উচ্চ সিম কর এবং মোবাইল অপারেটর অসহযোগিতায় সেবা গ্রহণের হার কমেছে ৯৭ শতাংশ। এছাড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসির বিধিনিষেধের কারণে প্রচার-প্রচারণা চালানো যাচ্ছে না। এতে জনগণ সেবাটি সম্পর্কে সেবা জানতে পারছে না। 

মঙ্গলবার রাজধানীতে টিআরএনবি আয়োজিত কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরে এমএনপি অপারেটর।

২০১৮ সালের অক্টোবরে এমএনপি সেবা চালু হয়। এটি এমন এক ধরনের পদ্ধতি যেখানে গ্রাহক মোবাইল নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুযোগ পায়।

কর্মশালায় বলা হয়, শুরুতে অপারেটর বদলে ভ্যাট ট্যাক্স মিলিয়ে খরচ ছিল ১৫৮ টাকা। এই উচ্চ ব্যয় নিয়ে সমালোচনার মুখে ১০০ টাকা সম্পূরক শুল্ক তুলে নেয় এনবিআর। এতে শুরুর বছরেই সাত লাখ গ্রাহক এমএনপি সেবা গ্রহণ করে। একমাসে সবোর্চ্চ এক লাখ ১১ হাজার গ্রাহক এ সেবা নেয়। পরে ৩৪৫ টাকা সিমট্যাক্স আরোপ করায় বর্তমানে এমএনপি সেবায় খরচ ৪০৮ টাকা। খরচ বাড়ায় বর্তমানে মাসে মাত্র সাড়ে ৩ হাজার মানুষ এমএনপি সেবা নিচ্ছেন।

ইনফোজিলিয়নের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশে এমএনপি সেবায় যে সিমট্যাক্স ধরা হয়েছে সেটা আন্তর্জাতিকভাবে ভালো চর্চা নয়। গ্রাহকের ওপর জুলুম হয়ে যায়। উচ্চ খরচের পাশাপাশি মোবাইল অপারেটরদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতারও অভিযোগ তুলেছে এমএনপি অপারেটরটি। 

ইনফোজিলিয়নের ডাটাবেজ অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশনসের ম্যানেজার ওবায়দুল ইসলাম বলেন, গ্রাহকের এমএনপি আবেদনের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশের নিচে আবেদন বাতিল আদর্শ। কিন্তু আমাদের এখানে ৪৫ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি আবেদন বাতিল হচ্ছে। এটা হওয়ার কথা না।
 
কর্মশালায় আন্তর্জাতিক এসএমএস আদান প্রদান নীতিমালার প্রণয়নের দাবি তোলা হয়। বলা হয়, এই নীতিমালা হলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।

ইনফোজিলিয়নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসাইন বলেন, গ্রাহকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি, কিন্তু নানা বিধিনিষেধে সেই স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাধাগুলো দূর করা গেলে সরকারের রাজস্বও বাড়বে, পাশাপাশি গ্রাহক পাবে মান সম্মত সেবা।

উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশের চার মোবাইল অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যা ১৮ কোটি ৬৫ লাখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর গ র হক

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ হাজার থেকে কমে সাড়ে ৩ হাজারে নেমেছে সেবাগ্রহীতা

মুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলে নেওয়ার (এমএনপি) সুবিধা সাত বছরেও খুব একটা জনপ্রিয় হয়নি। শুরুতে মাসে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এই সেবা নিতেন। এখন সেটা নেমে এসেছে সাড়ে তিন হাজারে।

রাজধানীর একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ‘মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি): চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

মুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুবিধা জনপ্রিয় না হওয়ার পেছনে সাতটি কারণকে দায়ী করেন এমএনপি খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

কারণগুলো হলো উচ্চ সিম কর, নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাধা, আবেদন বাতিলের উচ্চ হার, অপারেটরদের অসহযোগিতা, খুদে বার্তা বা এসএমএস জটিলতা, ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড)–সংক্রান্ত জটিলতা এবং মুঠোফোনে আর্থিক সেবা বা এমএফএস–সংক্রান্ত জটিলতা।

কর্মশালাটি আয়োজন করে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ (টিআরএনবি)।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২০১৮ সালের অক্টোবরে ঘটা করে এমএনপি সেবা চালু করে। এই সেবা নিলে গ্রাহক নম্বর ঠিক রেখে এক অপারেটর থেকে অন্য অপারেটরে যেতে পারেন।

প্রথম বছরেই এমএনপি সেবায় সাড়া ছিল ভালো। বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মে মাসে ১ লাখ ১১ হাজার ১২৭ জন গ্রাহক নম্বর একই রেখে অপারেটর বদল করেন। কিন্তু বছর ঘুরতেই সেই সংখ্যা নেমে আসে কয়েক হাজারে। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চ মাসে এই সেবাগ্রহীতার সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫২২ জনে।

এমএনপি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইনফোজিলিয়নের টেকনিক্যাল লিড ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বিশ্বের ৭২তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এমএনপি চালু হয়। প্রথম বছরে যেখানে সাত লাখ গ্রাহক এ সেবা গ্রহণ করেছিলেন, পরবর্তী ছয় বছরে সেই সংখ্যায় উল্লেখযোগ্য কোনো বৃদ্ধি ঘটেনি। বর্তমানে ৯৭ শতাংশ গ্রাহক এমএনপি সেবা ব্যবহার করছেন না, যার প্রধান কারণ বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণগত বাধা।

ইনফোজিলিয়নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাবরুর হোসাইন বলেন, ‘গ্রাহকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি, কিন্তু নানা বিধিনিষেধে সেই স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বাধাগুলো দূর করা গেলে পরোক্ষভাবে সরকারের রাজস্বও বাড়বে, পাশাপাশি গ্রাহক পাবেন সর্বোত্তম সেবা।’

কর্মশালায় টিআরএনবির সাবেক সভাপতি রাশেদ মেহেদী বলেন, এই সেবায় (এমএনপি) সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দেওয়া যেত। তৃতীয় পক্ষের নেটওয়ার্ক ব্যবহারযোগ্য হলে প্রতিযোগিতা বাড়বে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন টিআরএনবি সভাপতি সমীর কুমার দে। এতে ইনফোজিলিয়নের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোস্তফা কামাল, টিআরএনবির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুনমুঠোফোন নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুযোগ, কিন্তু জনপ্রিয় হয়নি কেন৩১ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫০ হাজার থেকে কমে সাড়ে ৩ হাজারে নেমেছে সেবাগ্রহীতা